শিল্প বাণিজ্য, Publish: 13/01/2018
বড় উদ্যোক্তার অভাবে ধুঁকছে ঠাকুরগাঁও বিসিক শিল্পনগরী
রাজধানী ঢাকা থেকে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের দূরত্ব প্রায় সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার। যোগাযোগের এ দূরত্ব আর উদ্যোক্তার অভাবে ঠাকুরগাঁওয়ের বিসিক শিল্পনগরীতে এখনো গড়ে ওঠেনি বড় কোনো শিল্প-কারখানা। আর শিল্প উদ্যোগ না থাকায় এখানকার বেকারত্ব পরিস্থিতিতেও কোনো উন্নতি হচ্ছে না। স্থানীয় উদ্যোক্তারা বলছেন, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও স্বল্প সুদে ব্যাংকঋণ পেলে ঠাকুরগাঁও বিসিক শিল্পনগরীতে আশানুরূপ কল-কারখানা গড়ে উঠত অনেক আগেই।

১৯৮৫-৮৬ অর্থবছরে ঠাকুরগাঁও শহরের গোবিন্দনগর এলাকায় ১৫ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে বিসিক শিল্পনগরী। কয়েক বছর পড়ে থাকার পর ১৯৯৮ সালে এ শিল্পনগরীতে ৫৪টি প্লট তৈরি করে বরাদ্দ দিতে শুরু করে ঠাকুরগাঁও বিসিক কর্তৃপক্ষ। জুট মিল, আটা-ময়দা, সাবান, প্লাস্টিকসামগ্রীসহ ছোট ও মাঝারি আকারের ৪১টি শিল্প-কারখানার নামে বরাদ্দ দেয়া হয় এসব প্লট। এর মধ্যে ছয়টি ছোট কারখানা এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। যেসব কারখানা চালু রয়েছে, সেগুলোয় উত্পাদিত পণ্য কেবল স্থানীয় চাহিদাই মেটাতে পারছে; তাও পর্যাপ্ত নয়। এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে হাতেগোনা কয়েকজন শ্রমিক। শিল্পনগরীতে এখনো ফাঁকা পড়ে রয়েছে ১৩টি প্লট।

বিসিক শিল্পনগরীর বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা জানান, ছোট কারখানায় কাজ করায় আমাদের চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। কম মজুরি নিয়ে যারা কাজ করবে, মালিকরা তাদের দিয়েই কাজ করান। বড় কারখানা গড়ে উঠলে আমরাও কাজের নিশ্চয়তা পেতাম। আমরা চাই নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠুক।

ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও বিসিক শিল্পনগরীর একটি কারখানার উদ্যোক্তা হাবিবুল ইসলাম বাবলু জানান, বিসিক কর্তৃপক্ষ সঠিক উদ্যোক্তাদের প্লট বরাদ্দ দেয়নি। এছাড়া সরকারি সুযোগ-সুবিধা না থাকা ও ব্যাংকঋণের সহায়তা না পাওয়ায় এখানে বড় শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে না। দিন দিন এ শিল্প এলাকা মুখ থুবড়ে পড়ছে। আমরা হাতেগোনা কয়েকজন উদ্যোক্তা শিল্পনগরীকে ধরে রেখেছি মাত্র। বিসিক কর্তৃপক্ষ এখনই পদক্ষেপ না নিলে এটি আরো নাজুক হয়ে পড়বে।

ঠাকুরগাঁও বিসিক শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক মো. আমিনুল ইসলাম জানান, আমরা চেষ্টা করছি ভালো উদ্যোক্তাদের বাকি প্লটগুলো বরাদ্দ দিতে। ভালো উদ্যোক্তা আগ্রহী হলে আমরা সহযোগিতা করব। আশা করছি, আগামীতে বিসিক শিল্পনগরীর প্রসার বাড়বে।