[ টাকা আনা পাই ] 2018-05-27
 
আইনের খসড়া নিয়ে আইএলও সম্মেলনে যাচ্ছে বাংলাদেশ
শ্রম আইনের পাশাপাশি ইপিজেড আইনেও পরিবর্তন আসছে
 
আবু হেনা মুহিব :

গত বছর আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর সম্মেলনে শ্রমিক অধিকার উন্নয়নে বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করা হয়। সম্মেলন শেষ হওয়ার পরই এসব উদ্যোগের আইনি কাঠামো দেওয়া এবং বাস্তবায়নের শর্ত দেওয়া হয়। গত এক বছরে সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। আইএলওর এবারের সম্মেলনে শ্রম আইন ও রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) আইন সংশোধনের খসড়া নিয়ে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ।

সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এবং এই তিন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সমন্বয়ে এক সভায় ইপিজেড আইন এবং শ্রম আইন সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। এতে পোশাক কারখানায় ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে শিথিলতা আনা হয়েছে। কারখানার ২০ শতাংশ শ্রমিকের সই থাকলেই ট্রেড ইউনিয়ন করা যাবে। বর্তমান আইনে ৩০ শতাংশ শ্রমিকের সই থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইএলওর অন্য দাবি ছিল, সারাদেশের কারখানা পরিদর্শনের মতো ইপিজেডেও কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (ডিআইএফই) পরিদর্শকদের পরিদর্শনের আওতায় আনতে ইপিজেড আইনে সংশোধনী আনতে হবে। এ আইন সংশোধনের খসড়ায় সেই সুযোগ রাখা হয়েছে।

আগামীকাল সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় শ্রম সম্মেলন শুরু হচ্ছে। আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল ৩ জুন সম্মেলনে যোগ দেবে। শ্রম প্রতিমন্ত্রী, বিজিএমইএ এবং শ্রমিক প্রতিনিধিরাও থাকছেন প্রতিনিধি দলে।

আইএলওর সম্মেলনে বাংলাদেশের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে আইনমন্ত্রী এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার আবারও বৈঠকে বসেন। এর আগে গত বুধবারও বিজিএমইএ এবং কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। ওই বৈঠকেও ট্রেড ইউনিয়ন এবং ইপিজেড আইনের চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে তাদের মতামত নেওয়া হয়। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে ১০ শতাংশ শ্রমিকের সই রাখার পক্ষে মত দেন তারা। অন্যদিকে মালিকরা ২৫ শতাংশের নিচে নামতে চাননি। শেষ পর্যন্ত ২০ শতাংশের বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত হয়।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু সমকালকে বলেন, গত আইএলও সম্মেলনে বাংলাদেশ নিয়ে প্রধান আপত্তি ছিল ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে কারখানার অন্তত ৩০ শতাংশ শ্রমিকের স্বাক্ষর থাকার বাধ্যবাধকতা নিয়ে। সেটা কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হচ্ছে। এক বছরের মধ্যেও পূর্ণাঙ্গ আইন না করে শুধু নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সমস্যা হবে কি-না জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইন সংশোধনে জাতীয় ত্রিপক্ষীয় কমিটির প্রক্রিয়াগত কিছু কারণে দেরি হয়েছে। তবে সম্মেলন চলাকালেই শ্রম আইন ও ইপিজেড আইন সংশোধনের খসড়া মন্ত্রিসভায় উঠবে। সুতরাং এ নিয়ে সমস্যা হবে না।

আইএলওর গত সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ অন্য বিষয়ের মধ্যে ছিল, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আশুলিয়া এলাকার শ্রম অসন্তোষকে কেন্দ্র করে যেসব শ্রমিককে বরখাস্ত করা হয়েছে তাদের কাজে ফিরিয়ে নেওয়া এবং ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যাহার করা।

বিজিএমইএর শ্রমবিষয়ক পরিচালক আ ন ম সাইফুদ্দিন সমকালকে বলেন, আইএলওর গতবারের সম্মেলন এবং সম্মেলনের পরে বিশেষজ্ঞ কমিটি যেসব বিষয়ে আপত্তি দিয়ে সংশোধনের সুপারিশ করেছে মোটামুটি সেসব বিষয় চূড়ান্ত করেই এবারের সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন তারা। এর মধ্যে তিন বছর আগে আশুলিয়া এলাকার শ্রম অসন্তোষকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কারখানা মালিকদের পক্ষ থেকে করা সব মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। একটি মাত্র মামলা আছে যেটা সরকারের পক্ষ থেকে একজন সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা হয়। এ বিষয়ে বিজিএমইএর করার কিছু নেই।
Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved