[ ] 2018-05-27
 
বিকল্প বাজেট
পাচার রোধ ও কালো টাকা উদ্ধার করে ৫৫ হাজার কোটির যোগান সম্ভব
 
  • প্রস্তাবিত বিকল্প বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ২ লাখ ৬৪ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা
  •  বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২ লাখ ৫২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা
  •  পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ১ লাখ ২৮ হাজার ৭০০ কোটি টাকা,
  • স্বাস্থ্যখাতে ৮৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি ১২ লাখ ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করেছে। এটি অর্থমন্ত্রী আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন, তার চেয়ে আড়াই গুণেরও বেশি। বাজেট প্রস্তাবে এনবিআরের কর বর্হিভূত সরকারের আয়ের উৎস হিসেবে অর্থপাচার রোধ থেকে ৩০ হাজার কোটি এবং কালো টাকা উদ্ধার করে ২৫ হাজার টাকা আহরণ সম্ভব বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

বিকল্প বাজেট প্রস্তাবের ৯ লাখ ৯০ হাজার ৮২০ কোটি টাকার যোগান আসবে সরকারের রাজস্ব আয় থেকে, যা মোট বাজেটের ৮১ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর ৭ লাখ ২৯ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা, এনবিআর বহির্ভূত কর ২ লাখ ৬০ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট ২ লাখ ২৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ঘাটতি অর্থায়ন দেখানো হয়েছে। 

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সমিতির সভাপতি আবুল বারকাত এ বাজেট পেশ করেন। 

এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জামালউদ্দিন আহমেদ, সহসভাপতি এ জেড এম সালেহ ও মো. আব্দুল হান্নান, কোষাধ্যক্ষ মো. মোস্তাফিজুর রহমান সরদার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। 

অর্থনীতি সমিতি চতুর্থ বারের মতো বিকল্প বাজেট পেশ করল। এবারের বাজেট প্রস্তাবের শিরোনাম ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বাজেট প্রস্তাবনা ২০১৮-১৯ ’। 

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দেশ বিনির্মাণে এই বাজেট যুক্তিসঙ্গত দাবি করে আবুল বারকাত বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবিত বাজেট দ্রুত সম্প্রসারণ বৃহদায়তন বাজেট। এটি দেশের অর্থনীতির অন্তর্নিহিত শক্তির বিচারে যৌক্তিক, নৈতিক, মানবিক এবং সব বিচারে বাস্তবায়ন সম্ভব। এর দ্বারা দেশের দ্রুত উন্নয়ন, উন্নত বাংলাদেশ ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়া সম্ভব।’ তিনি বৃহদায়তন এই বাজেটের ৯ লাখ ৯০ হাজার ৮২০ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি ঘাটতি অর্থায়নের ২ লাখ ২৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার যোগান কোথা থেকে আসবে সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। 

প্রস্তাবে বলা হয়, ঘাটতি অর্থায়নের এক লাখ কোটি টাকা যোগান দেবে সম্মিলিতভাবে সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্ব। এ ছাড়া বন্ড বাজার থেকে ৪৫ হাজার ৫৮০ কোটি, সঞ্চয়পত্রের ঋণ গ্রহণ ৬০ হাজার কোটি এবং দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ ২০ হাজার কোটি টাকার যোগান আসবে। এই প্রস্তাবে বৈদেশিক ঋণের কোন ভূমিকা নেই, যা চলতি বাজেটের ঘাটতি পূরণে ৪৩ শতাংশ ভূমিকা রেখেছে। 

বাজেটের ব্যয় বরাদ্দের কাঠামোতে গুণগত পরিবর্তনের প্রয়োজন উল্লেখ করে অর্থনীতি সমিতির সভাপতি বলেন, মোট বরাদ্দ ও আনুপাতিক বরাদ্দের উন্নয়ন বাজেট হবে অনুন্নয়ন বাজেটের চেয়ে অনেক বেশি যা এখন ঠিক উল্টো। এখন উন্নয়ন-অনুন্নয়ন বাজেট বরাদ্দের ৩৯: ৬১ শতাংশ। যা প্রস্তাবিত বাজেটে হবে ৫৫: ৪৫। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবনায় অনুন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ এখনকার তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পাবে। কারণ আমরা ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি যৌক্তিক মনে করি যেখানে বেতন-ভাতা ও সংশ্লিষ্ট বরাদ্দ অনুন্নয়ন বাজেটভুক্ত।’ 

আবুল বারকাত বাজেট বাস্তবায়নের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও সরকারি বিভাগের যথাযথ দায়িত্ব পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। অন্যথায় তাদের শাস্তির বিধান দাবি করেন। 

প্রস্তাবিত বিকল্প বাজেটে শিক্ষাখাতে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা। এই বরাদ্দের ৫৮ শতাংশ অর্থ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খাতে ব্যয় করার কথা বলা হয়েছে। এরপর ২ লাখ ৫২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে, জনপ্রশাসন খাতে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৬৮ হাজার কোটি, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ১ লাখ ২৮ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, স্বাস্থ্যখাতে ৮৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা এবং সামাজিক নিরাপত্তাখাতে ৭২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়।
Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved