[ অর্থ বাণিজ্য ] 2018-06-14
 
ভ্যাটের ওপর চাপ না বাড়িয়ে কর আদায়ের দাবি
 
বুধবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঘোষিত জাতীয় বাজেট ২০১৮-১৯ উপলক্ষে ২০টিরও বেশি নাগরিক সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ইক্যুইটিবিডি আয়োজিত ওই মানববন্ধন থেকে জাতীয় বাজেটে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন করের ওপর চাপ না বাড়িয়ে আয়কর আদায়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। তারা বর্তমানে ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার অদক্ষতার সমালোচনা করেন এব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা অর্থপাচার বন্ধ এবং সর্বোপরি আর্থিক খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠার দাবি করেন।
মানববন্ধনটি সঞ্চালনের দায়িত্ব পালন করেন ইক্যুইটিবিডির মোস্তফা কামাল আকন্দ এবং সেখানে বক্তব্য রাখেন একই সংগঠনের আহসানুল করিম। অন্যান্য বক্তারা হলেন কৃষক ফেডারেশনের বদরুল আলম, অর্পন-এর জনাব কাদের হাজারি, কোস্ট ট্রাস্টের সৈয়দ আমিনুল হক এবং ইক্যুইটিবিডির রেজাউল করিম চৌধুরীসহ আরও অনেকে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে আহসানুল করিম কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো : রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ভ্যাট ও ব্যক্তিকর আদায়ের ওপর চাপ কমিয়ে কর্পোরেট কর আদায় এবং কালো টাকা আদায়ের ব্যবস্থা নিতে হবে। মধ্যবিত্তদের ওপর করের বোঝা না চাপিয়ে উচ্চবিত্তদের কাছ থেকে কর আদায় করা। ব্যক্তি শ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা ২,৫০,০০০ টাকা হতে বৃদ্ধি করে ৩,৫০,০০০ এ নিয়ে যাওয়া, আর্থিক সেক্টরে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতকে শক্তিশালী করা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাসহ ব্যাংকগুলোকে বাঁচানোর জন্য শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ ব্যাংক কমিশন গঠন, ২০০০ ডলারের ওপর যেকোন কেনাকাটায় টিআইএন ব্যবহার এবং এ ক্ষেত্রে নগদ লেনদেনও নিষিদ্ধ করা, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে যেসব বাংলাদেশী নাগরিক নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছে, তাদের সকল অর্থনৈতিক তথ্য পরীক্ষা করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা, রাষ্ট্রায়াত্ত ও বেসরকারী ব্যাংকসহ শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির আত্মসাতকৃত টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ওপর তদন্ত কমিশন ও শ্বেতপত্র প্রকাশ করা এবং সংঘাতপূর্ণ রাজনীতির অপরিহার্য অংশ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ করে গণমাধ্যম, নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় সরকার, দুর্নীতি দমন কমিশন, স্বাধীন ও শক্তিশালীভাবে কাজ করার সুযোগ দিয়ে আইনের শাসন কায়েম করতে হবে। কৃষক ফেডারেশনের বদরুল আলম বলেন, হল-মার্ক গ্রুপ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, ক্রিসেন্ট লেদারের মতো কোম্পানিগুলো বিভিন্ন উপায়ে ব্যাংক মালিকদের যোগসাজশে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। সরকার গত ২০০৬ থেকে ২০১৭ অর্থবছর পর্যন্ত বিভিন্ন ‘রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে ১০ হাজার কোটি টাকার ওপর পুনঃমূলধনীকরণ সুবিধা দিয়েছে, যার বেশিরভাগ যোগান আসে সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত আয় থেকে।
কোস্ট ট্রাস্টের সৈয়দ আমিনুল হক বলেন, ভ্যাটের ৯টি স্তরের মধ্যে সর্বনিম্ন ৩টি স্তর যেভাবে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে তাতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকেই ভ্যাট দিতে হবে। কারণ নিচের ৩টি স্তরই হচ্ছে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রায় ব্যবহৃত উপকরণসমূহের ওপর ধার্যকৃত ভ্যাট স্তর। তিনি আরও বলেন, সরকার বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, ধনী ও আর্থিক কোম্পানিসমূহ থেকে আয়কর আদায়ে ব্যর্থ হয়ে দরিদ্র মানুষের ওপর চেপে বসেছে, যেটা আসলে অবিচার।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, অর্থমন্ত্রীর সুস্পষ্ট ঘোষণা থাকার পরও ব্যাংক মালিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এবং অনিয়ম ও দুর্নীতি যাতে না ধরা পরে তার জন্য এবার তিনি ব্যাংক কমিশন গঠন করেননি। উপরন্তু ঘোষিত বাজেটে ব্যাংকের কর্পোরেট কর ২.৫ শতাংশ কমানো হয়েছে, এতে করে সরকার প্রায় ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে, পাশাপাশি ব্যাংক মালিকরা আরও বেশি সম্পদশালী হবে।
Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved