[ শেষের পাতা ] 2018-06-14
 
৩৩ শতাংশ কম অর্থ জমা পড়েছে কেন্দ্রীয় কল্যাণ তহবিলে
 
২০১৬ সালের ১ জুলাই তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য চালু হয় কেন্দ্রীয় কল্যাণ তহবিল। বিধান অনুযায়ী পোশাক কারখানাগুলোর রফতানি আয়ের দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ ব্যাংকিং চ্যানেলে সরাসরি এ তহবিলে জমা হওয়ার কথা। তবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত প্রায় দুই বছরে এ তহবিলে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণের চেয়ে ৩৩ শতাংশ কম অর্থ জমা পড়েছে।

জানা গেছে, দেশের শ্রম আইন অনুযায়ী সব খাতের শ্রমিকদের জন্য সরকারি তত্ত্বাবধানে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল পরিচালিত হয়। কিন্তু পোশাক শিল্প মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে এ শিল্পের জন্য পৃথক তহবিল গঠন হয়। তহবিলটি চালুর আগে এতে বছরে কী পরিমাণ অর্থ জমা হতে পারে, তার আনুমানিক হিসাব করেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) কারখানাগুলো তহবিলের বাইরে থাকায় এবং কিছু ব্যাংকের অসহযোগিতার কারণে ওই হিসাবের চেয়ে ৩৩ শতাংশ কম অর্থ জমা হয়েছে তহবিলে।

খাত-সংশ্লিষ্টদের হিসাব অনুযায়ী, দেশের সব সক্রিয় পোশাক কারখানার ক্রয়াদেশ থেকে দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ হারে অর্থ তহবিলের ব্যাংক হিসাবে জমা হলে বছরে তার পরিমাণ হওয়ার কথা ৭২ কোটি টাকা। কিন্তু পোশাক খাতের কেন্দ্রীয় কল্যাণ তহবিলে এখন পর্যন্ত জমা পড়েছে ৯৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত প্রায় দুই বছরে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণের তুলনায় কম জমা হয়েছে ৪৮ কোটি টাকা, যা মোট অর্থের ৩৩ শতাংশ।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ডা. আনিসুল আউয়াল বণিক বার্তাকে বলেন, প্রত্যাশার তুলনায় তহবিলে অর্থ কম জমা পড়েছে। এর অন্যতম কারণ হলো, দেশের ইপিজেডের পোশাক কারখানাগুলো তহবিলের আওতার বাইরে ছিল। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইপিজেডের কারখানাগুলোর অর্থও এ তহবিলে জমা পড়ছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, কিছু ব্যাংক পোশাক কারখানাগুলোর রফতানি মূল্য থেকে নির্ধারিত অর্থ কর্তন না করায় তহবিলে অনুমিত হিসাবের চেয়ে ৩৩ শতাংশ অর্থ কম জমা পড়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব গত ১৫ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে সচিব লেখেন, বাংলাদেশ শ্রম আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী শতভাগ রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের এলসি নগদায়নের সময় রফতানি মূল্যের দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মাধ্যমে কাটার পর সোনালী ব্যাংকে রক্ষিত শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় তহবিলের ‘সিআরএমজি সেক্টর’ নামক হিসাবে জমা হচ্ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, কিছু ব্যাংক রফতানি মূল্য থেকে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ কাটছে না। ফলে কেন্দ্রীয় তহবিলে প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম অর্থ জমা পড়ছে। শ্রমিকের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতি ও তাদের মেধাবী সন্তানদের সহযোগিতায় তহবিলটি ব্যবহার হয় উল্লেখ করে চিঠিতে এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সহযোগিতা নিশ্চিত করতে গভর্নরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে একটি সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ‘কিছু কিছু ব্যাংক রফতানি মূল্য থেকে নির্ধারত অর্থ কর্তন করছে না’ উল্লেখ করে অনুমোদিত সব ব্যাংকের শাখাগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়ার অনুরোধ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ।

মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, পোশাক খাতের কেন্দ্রীয় কল্যাণ তহবিলে প্রাপ্ত অর্থ দুটি হিসাবের মাধ্যমে জমা হচ্ছে। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ অর্থ সুবিধাভোগী কল্যাণ হিসাব এবং বাকি ৫০ শতাংশ আপত্কালীন হিসাবে জমা হচ্ছে। কল্যাণ তহবিলের এ দুটি অংশের একটির মাধ্যমে শ্রমিকের বীমা পাওনা মেটাচ্ছেন কারখানা মালিকরা। আরেক অংশ থেকে শ্রমিকের চিকিৎসা ব্যয় বহন এবং শ্রমিকের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
Print Close  
Print Close  
No link found
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved