[ অন্যান্য ] 2019-01-19
 
চট্টগ্রামে বে-টার্মিনাল নির্মাণে ভূমি উন্নয়ন কাজ শুরু
 
চট্টগ্রাম বন্দরের বহু কাঙ্ক্ষিত বে-টার্মিনালের ভূমি উন্নয়নের কাজ শুরু হচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ বে-টার্মিনালের জেটি নির্মাণের পূর্বে কন্টেইনার ইয়ার্ড নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সমুদ্র থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে মাটি সংগ্রহ করে এর ভূমি উন্নয়নের কাজ শুরুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পতেঙ্গা সংলগ্ন সমুদ্র উপকূলে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ৯০০ একর জমির ওপর বে-টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে ৬৮ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন বন্দরের নিকট হস্তান্তর করেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যক্তি মালিকানাধীন এই ৬৮ একর জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ৩৬৫ কোটি টাকা প্রদান করেছে।

জানা যায়, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষের বে-টার্মিনালে ইয়ার্ড নির্মাণের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরির কাজও শেষ পর্যায়ে। প্রায় ২৫০ একর জমির ওপর ইয়ার্ড নির্মাণের ডিপিপি তৈরি করা হচ্ছে। যা এ মাসেই শেষ হবে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ মাসের শেষের দিকে অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই ভূমি উন্নয়ন এবং বাউন্ডারি নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

বন্দরের কন্টেইনার জট কমানোসহ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সহজতর এবং ইকুইপমেন্টসমূহের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বে-টার্মিনালে প্রথমে ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জাহাজ থেকে নামা পণ্য ভর্তি কন্টেইনারসমূহ সরাসরি বে-টার্মিনাল ইয়ার্ডে চলে যাবে। ইয়ার্ড থেকে কন্টেইনার বা পণ্যসমূহ ডেলিভারি দেওয়া হবে। সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের উত্পাদনশীলতা এবং প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে বে-টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শুরু করা জরুরি হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবকাঠামো সুবিধা এক প্রকার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বন্দর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ জানান, নতুন জেটি নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং প্রবৃদ্ধি আর বাড়ানো সম্ভব নয়। ২০১৮ সালের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং প্রবৃদ্ধির দিকে লক্ষ্য করলে তার প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়। গত ৫ বছরের মধ্যে এবার সর্বনিম্ন পর্যায়ে প্রবৃদ্ধি পৌঁছেছে। এবার কন্টেইনার হ্যান্ডলিং প্রবৃদ্ধি ছিল শতকরা ৮ দশমিক ৮ ভাগ। ২০১৭ সালেও প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ১০ ভাগ। চট্টগ্রাম বন্দরে ২০০৭ সালে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের পর এ পর্যন্ত নতুন কোনো টার্মিনাল বা জেটি নির্মিত হয়নি। সাম্প্রতিক কিছু ইয়ার্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে; কিন্তু বন্দর সংশ্লিষ্টদের মতে, নতুন জেটি নির্মাণ করা না গেলে অধিক পরিমাণ জাহাজ ভেড়ানো এবং হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি সম্ভব নয়। জেটি বাড়ানো সম্ভব না হওয়ায় ২০১৮ সালে জাহাজের রাউন্ড এরাউন্ড টাইমও অপেক্ষাকৃত বেশি ছিল।

চট্টগ্রাম বন্দরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ কাজ চলছে; কিন্তু দেশের আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশেষ করে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন বৃদ্ধি পাওয়ায় লৌহজাত সামগ্রী, স্টোন, কয়লা, ক্লিংকারসহ ভারী পণ্য সামগ্রীর আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বে-টার্মিনাল নির্মাণ দ্রুত শুরু করার জন্য প্রায়ই ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল জুলফিকার আজিজও বন্দরের প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানে বে-টার্মিনাল নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু করার ব্যাপারে তার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। তাছাড়া বে-টার্মিনালে প্রথম দিকে ইয়ার্ড নির্মাণ হলে কন্টেইনার ভর্তি পণ্য কিংবা খোলা পণ্যবাহী লরি, ট্রাক শহরের বাইরে দিয়ে রিং রোড বরাবর চলাচল করতে পারবে। এতে শহরের যানজটও কমে যাবে।
Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved