[ শেষ পাতা ] 2019-01-19
 
টানবাজারে কমতির দিকে সুতার দাম
 
বেচাকেনায় মন্দাভাবের জের ধরে নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে কয়েক মাস ধরেই সুতার দাম কমতির দিকে ছিল। গত এক মাসে এ মন্দাভাব আরো জোরালো হয়েছে। ফলে সুতার দাম আরো কমতে শুরু করেছে। মোটা ও চিকন বেশির ভাগ সুতার দাম পাউন্ডে সর্বোচ্চ ১০ টাকা কমেছে। তবে চাহিদা কিছুটা বেশি থাকায় রফতানিযোগ্য ২৪, ২৬ ও ৩০ কাউন্টের সুতার দাম আগের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। আগামী দিনগুলোয় বেচাকেনায় মন্দাভাব না কাটলে টানবাজারে বেশির ভাগ সুতার দাম বর্তমানের তুলনায় আরো কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

টানবাজার ঘুরে দেখা যায়, ১০ কাউন্টের প্রতি পাউন্ড মোটা সুতা মানভেদে ৩৮-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । এক মাস আগেও এ সুতা পাউন্ডপ্রতি ৪০-৫৭ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে ১০ কাউন্টের প্রতি পাউন্ড সুতার দাম কমেছে ২ টাকা। একইভাবে ২০ কাউন্টের সুতার দাম পাউন্ডে ৩ টাকা কমেছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে টানবাজারে ২০ কাউন্টের প্রতি পাউন্ড সুতা ৬৫-৮২ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

একই চিত্র দেখা গেছে তুলনামূলক চিকন সুতার দামেও। ৪০ কাউন্টের প্রতি পাউন্ড সুতা মানভেদে ১১৯-১২২ টাকায় বিক্রি হয়। এক মাস আগেও এ সুতা পাউন্ডপ্রতি ১২০-১২৪ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। অর্থাৎ, এক মাসের ব্যবধানে ৪০ কাউন্টের প্রতি পাউন্ড সুতার দাম কমেছে ২ টাকা। অন্য দিকে টানবাজারে সবচেয়ে বেশি কমেছে ৮০ কাউন্টের সুতার দাম। এ সুতা পাউন্ডপ্রতি ২৪২-২৪৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ৮০ কাউন্টের প্রতি পাউন্ড সুতা বিক্রি হয়েছিল ২৫২-২৫৫ টাকায়। সেই হিসেবে এক মাসের ব্যবধানে ৮০ কাউন্টের প্রতি পাউন্ড সুতার দাম কমেছে ১০ টাকা।

টানবাজারে ১০, ২০, ৪০ ও ৮০ কাউন্টের সুতার দাম আগের তুলনায় কমে এলেও ব্যতিক্রম দেখা গেছে ২৪, ২৬ ও ৩০ কাউন্টের সুতার ক্ষেত্রে। চাহিদা তুলনামূলক বেশি থাকায় এসব সুতার দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। টানবাজারে গতকাল ২৪, ২৬ ও ৩০ কাউন্টের প্রতি পাউন্ড সুতা মানভেদে ১০৪-১০৭ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এক মাসেরও কম সময় আগে এসব সুতা পাউন্ডপ্রতি ১০১-১০৩ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে এসব সুতার দাম পাউন্ডে সর্বোচ্চ ৪ টাকা বেড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, টানবাজারে বিক্রি হওয়া ২৪, ২৬ ও ৩০ কাউন্টের সুতা মূলত রফতানিযোগ্য। এসব সুতার চাহিদাও তুলনামূলক বেশি রয়েছে। ফলে বেচাকেনাও হচ্ছে বেশি। মূলত এসব কারণে স্থানীয় বাজারে বেশির ভাগ সুতার দাম কমলেও ২৪, ২৬ ও ৩০ কাউন্টের সুতার দাম আগের তুলনায় বাড়তি রয়েছে।

স্থানীয় এনএম ট্রেডার্সের মালিক জানান, দুই-আড়াই মাস ধরে টানবাজারে সুতার ব্যবসায় মন্দাভাব চলে আসছে। বেচাকেনা নেই বললেই চলে। এ মন্দাভাবের জের ধরে মোটা-চিকন বেশির ভাগ সুতার দাম কমে গেছে। অন্য ব্যবসায়ী শাহজালাল খোকন বণিক বার্তাকে বলেন, শীত মৌসুম শুরুর আগ থেকেই টানবাজারে সুতার দামে ভাটার টান দেখা গেছে। এর মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেচাকেনা আরো কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে সুতার দামে। তবে নির্বাচনের পর থেকে রফতানিযোগ্য সুতার চাহিদা তুলনামূলক বেড়ে যাওয়ায় কয়েকটি কাউন্টের সুতার দাম বাড়তি ছিল।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম সোলায়মান মিয়া জানান, টানবাজারে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় মোটা সুতা। তবে গত বছরের শেষ ভাগ থেকে পণ্যটির বেচাকেনায় মন্দাভাব বজায় রয়েছে। এর জের ধরে সুতার দাম কমতে শুরু করেছে। আগামী দিনগুলোয় বেচাকেনা বাড়ানো না গেলে সুতার বাজারে বিদ্যমান মন্দাভাব আরো দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved