[ প্রথম পাতা ] 2019-01-19
 
কুয়েত থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে ৩০০ বাংলাদেশিকে
দূতাবাসে ভাঙচুরের জের
 
কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলার দায়ে তিন শতাধিক শ্রমিককে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। হাঙ্গামাসহ নানা বিশৃঙ্খলাপূর্ণ কাজে জড়িত থাকার দায়ে কুয়েতের আইন অনুযায়ী তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে দেশটির সরকার। ভবিষ্যতে যাতে তারা কুয়েতে ঢুকতে না পারেন সেজন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের রাখার অনুরোধ করলেও তা গ্রহণ করবে না কুয়েত সরকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়েতস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালাম মুঠোফোনে মানবজমিনকে বলেন, কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় কয়েক শতাধিক বাংলাদেশিকে আটক করেছে দেশটির আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা। দূতাবাসের মতো স্পর্শকাতর স্থানে হামলার তদন্ত করছে কুয়েতের বিভিন্ন সংস্থা।

বাংলাদেশিদের বিষয়ে আইন অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নেবে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো কথা গ্রাহ্য হবে না। দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ও আজ কুয়েতে সরকারি ছুটি।
গতকাল কুয়েতের বিভিন্ন আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা বাংলাদেশ দূতাবাসের তছনছকৃত অংশ দেখে গেছেন। এছাড়া সিসিটিভি’র ভিডিও ফুটেজ নিয়ে গেছেন। দূতাবাসের তরফ থেকে ভাঙচুরকৃত অংশগুলো মেরামত করা হচ্ছে। রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালাম বলেন, রোববার থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা দিতে কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করছি। কারণ নেটওয়ার্ক কানেকটিং ছাড়া সব কাজ এরই মধ্যে করা হয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি শ্রমিকরা কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ঘেরাও করে ভাঙচুর করে। তারা দূতাবাসের এইচওসি এবং কনস্যুলার আনিসুজ্জামানকে মারধর করেছে। এ ছাড়া কনস্যুলারকে বাঁচাতে গিয়ে পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার আরো দুই কর্মকর্তা মারধরের শিকার হন। এসব ঘটনা দূতাবাসের সিসিটিভি’র ভিডিও ফুটেজে রয়েছে। এসব ফুটেজ কুয়েতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ঘেরাও করার আগে ফেসবুকে লাইভ করেন ঘেরাওকারী বাংলাদেশিরা। এসব লাইভে তারা জানান, সাত থেকে আট লাখ টাকা খরচ করে কুয়েতে এসেও ভালো নেই আমরা।

দালালদের খপ্পরে পড়ে কুয়েতে এসেছি। হযরত আলী নামে এক বাংলাদেশি নিজেদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের বসবাসের ব্যারাকে পানি নেই, কারেন্টসহ কিছু নেই। আমাদের খাদ্য নেই, অনাহারে দিন কাটাচ্ছি। বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির ব্যবহার আমাদের ঘাড় ধাক্কা মেরে বাইরে ফেলে দিচ্ছে। দয়া করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সুব্যবস্থা করবেন। না হলে আত্মহত্যা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় থাকবে না। সবার তরফ থেকে এ দাবি করছি। তারা বলেন, লেসকো কোম্পানির জালিয়াতি সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ওরা আমাদের মানুষ হিসেবে গণ্য করছে না। আমাদের আকামা নেই। থাকা ও খাবার জায়গা নেই।

বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির কাছে কোনো বিচার পাচ্ছি না। তাদের হাত থেকে বাংলাদেশিদের উদ্ধার করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। দূতাবাসের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে তারা বলেন, প্রবাসীদের টাকা নিয়ে তারা রাজকীয় জীবনযাপন করেন। আমাদের খোঁজ নেয়ার সময় তাদের পা মাটিতে পড়তে চায় না। এ অবস্থার অবসান চাই। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা থেকেই ঘেরাও করে বাংলাদেশিরা। এরপর সারা দিন দেন দরবার চলে। বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানও হয়। কিন্তু কে বা কার উস্কানিতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা দূতাবাস কর্মকর্তাদের উপর হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে তা খুঁজে দেখছে বাংলাদেশ দূতাবাস। কারণ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মান মর্যাদা বিদেশে ক্ষুণ্ন হয়েছে।
Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved