[ শিল্প-বাণিজ্য ] 2019-03-26
 
৬০ বিলিয়ন ডলার থেকে অনেক পিছিয়ে রফতানি
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চায় বাংলাদেশ
 
আবু হেনা মুহিব

আজ ২৬ মার্চ, স্বাধীনতার ৪৮ বছর। স্বাধীনতার ৫০ বছরে অর্থাৎ ২০২১ সালে ৬০ বিলিয়ন ডলার বা ৬ হাজার কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্যে এগোচ্ছে রফতানি খাত। পোশাক খাতে ব্যাপক সংস্কারসহ কিছু উদ্যোগ এই লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সামর্থ্যের তুলনায় বড় এই লক্ষ্যমাত্রা শেষ পর্যন্ত অর্জন হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় আছে। রফতানিকারক এবং বাণিজ্য বিশ্নেষকরা মনে করেন, মাত্র ২ বছরের মধ্যে বর্তমান রফতানি আয়কে প্রায় দ্বিগুণ করার সম্ভাবনা কম। তবে বড় এই লক্ষ্যমাত্রা থাকার কারণে রফতানি খাত শক্তিশালী হচ্ছে।

গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রফতানি হয়েছে তিন হাজার ৬৬৭ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন হাজার ৯০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে জুলাই থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে রফতানি হয়েছে দুই হাজার ৭৫৬ কোটি ডলারের পণ্য। যদিও লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় ৮ শতাংশ হারে রফতানি বেশি হচ্ছে।

লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেশকিছু পরিকল্পনা করে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, কৃষিজাত পণ্য এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের উদ্যোক্তা ও গবেষকদের সঙ্গে বৈঠক করে লক্ষ্য অর্জনে প্রতিবন্ধকতা শনাক্ত করা এবং তাদের সুপারিশ ও পরামর্শে একটি পথনকশা তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। সংস্থার পরিচালক অনুপ কান্তি সমকালকে বলেন, লক্ষ্য অর্জনের সম্ভাবনা বলতে গেলে নেই। তারপরও রফতানি যতটুকু বাড়ানো যায়, সে চেষ্টাই করছেন তারা। এ জন্য তৈরি পোশাক ছাড়াও সম্ভাবনাময় বড় খাতের উন্নয়নে একটা পথনকশা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

অবশ্য খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত এ পরিকল্পনার কোনো অগ্রগতি নেই। ফলে পোশাকের বাইরে অন্যান্য পণ্যের রফতানি সম্ভাবনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ৮ পণ্যের নির্ভরতায় চলছে দেশের রফতানি খাত। এর মধ্যে পোশাক খাত থেকেই আসে ৮৪ ভাগ আয়। অথচ রফতানি তালিকায় দেশের পণ্যের সংখ্যা এখন ৭২০টি।

পোশাক রফতানি থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের পর দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে একটি পথনকশা প্রণয়ন করা হয় ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় অ্যাপারেল সামিটে। এতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে ১৮টি প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করা হয়। এসবের মধ্যে গ্যাস, বিদ্যুৎ বন্দরসহ সহায়ক অবকাঠামো, কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা, দক্ষ শ্রমশক্তি, পণ্যের দর ও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করা হয়। বহুপক্ষীয় প্রচেষ্টায় এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করার পরিকল্পনা নেওয়া হয় পথনকশায়। এতে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে বিজিএমইএ, সরকার, ক্রেতা, উন্নয়ন অংশীদার, ক্রেতা দেশের সরকার, ট্রেড ইউনিয়নসহ মোট ১০ ধরনের অংশীজনের সুনির্দিষ্ট দায়িত্বের কথা বলা হয়। তবে এই পথনকশা অনুযায়ী কাজ এগোচ্ছে না।

জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান সমকালকে বলেন, লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের পর ব্যাপক সংস্কার কাজের বাইরে উদ্যোক্তাদের খুব বেশি মনোযোগ দেওয়া বা অতিরিক্ত বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। পোশাকের দর কমছে সব বাজারে। সব মিলিয়ে লক্ষ্যমাত্রা থেকে একটা বড় ব্যবধানেই পিছিয়ে আছেন তারা। সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এখন আর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা নেই। তবে বড় লক্ষ্যমাত্রার কারণে রফতানি অনেক বাড়ছে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুরের মতে লক্ষ্যমাত্রা খুব উচ্চাভিলাষী ছিল না। তবে অভ্যন্তরীণ এবং কিছু আন্তর্জাতিক কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা কম। সমকালকে তিনি আরও বলেন, রফতানি খাতে পোশাক নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব না হওয়া খুবই দুঃখজনক। অপ্রচলিত এবং নতুন পণ্য হিসেবে হালকা প্রকৌশল, পাদুকা, চামড়া ও চামড়া পণ্য, বাইসাইকেল- এ রকম পণ্যের সম্ভাবনা কাজে লাগানো যায়নি।
Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved