ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে ব্যাংক ঋণের সুদ কমানোর দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবিতে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেছেন, বর্তমান সরকার ব্যবসায়ী নয়, ব্যবসাবান্ধব। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যবসা প্রসারে যা যা প্রয়োজন তার সবই করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে 'আনারকলি কনভেনশন সেন্টার'-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াও ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শনে এ কনভেশন সেন্টার ব্যবহূত হবে বলে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পগোষ্ঠী হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আনোয়ারুল আলম পারভেজ, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ব্যবসায়ীদের
শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী, আবু আলম সরকার, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান শাহীদ রেজা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে এ. কে. আজাদ বলেন, সরকারি কলকারখানায় বছরে চার-পাঁচ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শ্রমিকদের চাকরি রক্ষায় আর কোনো সরকারি কারখানা বিক্রি করা হবে না। বিক্রি না করে ইজারা দিলে একজন শ্রমিকও বেকার হবেন না। ইজারাদাররা এ দায়িত্ব নেবেন।
লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ স্থগিত রেখে ব্যবসায়ীদের ইজারা দিতে শিল্পমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান এ. কে. আজাদ। ইজারার টাকায় সরকার ঋণ পরিশোধ করবে। ইজারাদার কারখানা চালিয়ে মুনাফা করবেন। সরকার-ব্যবসায়ী-শ্রমিক সবাই লাভবান হবেন।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষের কথা জানান এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ. কে. আজাদ। তিনি বলেন, বিসিকে সরকারের শত শত একর জমি পড়ে রয়েছে। শিল্প নেই। কারণ সেখানে নানা সংকট রয়েছে। গ্যাস থাকলে বিদ্যুৎ নেই, বিদ্যুৎ থাকলে পানি নেই।
এ. কে. আজাদের দাবি, ব্যাংক ঋণের সুদের 'পাগলা ঘোড়ায়' ব্যবসায়ীরা বিপর্যস্ত। তিনি অভিযোগ করেন, ৮ শতাংশ সুদে ঋণ নেন ব্যবসায়ীরা। এখন তা ১২ থেকে ১৩ শতাংশ হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা আর সুদের ভার বইতে পারছেন না। সুদের কারণে ব্যবসায়ীরা খেলাপি হয়ে পড়ছেন।
এ. কে. আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আগামী পাঁচ বছরে দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে, সেইসঙ্গে বাঁচাতে হবে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের।
এসব প্রস্তাবের বিষয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, লোকসানি সরকারি কারখানা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ইজারা দেওয়ার প্রস্তাব খুব ভালো। ব্যবসায়ীদের জন্য তার দরজা খোলা। ব্যবসায়ীরা তার কাছে যে কোনো পরিকল্পনা তুলে ধরতে পারেন। স্বাধীনতার বহু বছর হয়েছে, এখন আর বিদেশি পরামর্শক দরকার নেই।
ব্যাংক ঋণের সুদ কমানোর দাবির জবাবে নূরুল মজিদ হুমায়ুন বলেন, ব্যাংক মালিকরাও ব্যবসায়ী। উদ্যোক্তা ও ব্যাংক মালিক পরস্পরের স্বার্থ দেখলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যবসায়ীরাই চালাবেন। সরকার শুধু তাদের সমন্বয় করবে।