ইলেকট্রিক সেন্সরযুক্ত পোশাক বা স্মার্ট ক্লোথের বর্তমান বৈশ্বিক বাজার ২৫ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার; যা ২০২৫ সাল নাগাদ ১৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। এ বাজারের দিকেই নজর দিচ্ছে বাংলাদেশ। স্মার্ট পোশাকের বাজারে অবস্থান তৈরি ও সুসংহত করতে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ফ্যাশনলজি সামিটের দ্বিতীয় আসর উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সামিটের আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
স্মার্ট পোশাক পরিধানকারীর শারীরিক অবস্থা মনিটর করে। পোশাকে সংযুক্ত সেন্সরগুলো রক্তচাপ, হূদস্পন্দন হার, তাপমাত্রা, পেশির সংকোচন ইত্যাদি তথ্য ব্লু-টুথের মাধ্যমে রিয়েল টাইমে স্মার্টফোনের নির্দিষ্ট অ্যাপে পাঠায়। এ ইলেকট্রনিক টেক্সটাইল প্রোটোটাইপগুলোর উদ্ভাবন আশির দশকের প্রথম দিকে হলেও পণ্যগুলো বাজারে এসেছে এর অন্তত তিন দশক পর।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৩০ বিলিয়ন ডলারের স্মার্ট পোশাকের বিশাল বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান সুসংহত করতে হবে। এ পথ প্রশস্ত করার লক্ষ্য নিয়ে আগামী ২ মে ঢাকার আন্তর্জাতিক বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ফ্যাশনলজি সামিটের দ্বিতীয় আসর। সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্র শিল্পের চতুর্থ বিপ্লব হিসেবে খ্যাত স্মার্ট পোশাকে বাজার অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ করা হয়।
এ সময় ডাচ্-বাংলা চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ও বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান বলেন, স্মার্ট পোশাকের বাজারে প্রবেশের সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। পর্যায়ক্রমে এ বাজারে আমাদের অবস্থান সুসংহত করতে হবে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প অনেক দূর এগিয়েছে। আরো অনেক কাজ করতে হবে। কিন্তু আমাদের ব্যবসার অভ্যন্তরীণ সমস্যা মোকাবেলা করে আমাদের বহিঃসমস্যা মোকাবেলা করতে হয়। পোশাক নিয়ে শুধু গবেষণামূলক কাজ করতে পারলে আমরা আরো ভালো করতাম। কিন্তু বিদ্যমান অবকাঠামো নিয়ে বহিঃসমস্যা মোকাবেলা করতে গিয়ে অনেক প্রয়োজনীয় কাজ আমরা করতে পারি না।
বিএই প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প উদ্যোক্তাদের উচ্চমূল্যের পোশাকের ওপর গুরুত্ব দেয়া অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। সেক্ষেত্রে ব্যবসায় টিকে থাকতে হলে আমাদের ১৩০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের স্মার্ট পোশাকের বাজারের দিকে নজর দিতে হবে। কিন্তু বেসিক পণ্য থেকে উচ্চমূল্যের পণ্য উৎপাদনের দিকে ধাবিত হওয়ার কাজটি খুব সহজ নয়। তাই আমাদের যথার্থ পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে এগোতে হবে। এ প্রক্রিয়াটি সহজ করে তোলাই বাংলাদেশ ফ্যাশনলজি সামিটের লক্ষ্য।
এবারের সামিটের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটালাইজেশন: দ্য নেক্সট ডেস্টিনেশন’। এটি বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন-২০২১ এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। এবারের আসরে পাঁচটি প্যানেলে আলোচনা সভায় ডিজিটালাইজেশন মাধ্যমে বস্ত্র খাতের চতুর্থ বিপ্লবের যুগে কীভাবে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকা যায়, সে বিষয়ের ওপর আলোকপাতের জন্য বিশ্বের ১৫টি দেশের ৪১ জন আলোচক উপস্থিত থাকবেন।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন প্যাসিফিক জিন্সের পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, বিএই ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল প্রমুখ।