দীর্ঘদিন কমতির ধারায় থাকার পর সম্প্রতি আবার বাড়তে শুরু করেছে সরকারের ব্যাংক ঋণ। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মার্চে এসে সরকারি খাতের ঋণ বেড়েছে দুই দশমিক ১৭ শতাংশ। অথচ আগের অর্থবছরের একই সময়ে সরকারি খাতের ঋণ না বেড়ে উল্টো ১৯ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ কমেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ করা পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গত জুনের তুলনায় চলতি অর্থবছরের মার্চে অভ্যন্তরীণ ঋণ সাত দশমিক ৩১ শতাংশ বেড়ে ১০ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আগের অর্থবছরের মার্চে অভ্যন্তরীণ ঋণ আট দশমিক ২৬ শতাংশ বেড়ে ৯ লাখ ৬৪ হাজার ২০৫ কোটি টাকা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আলোচ্য সময়ে অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি কমেছে মূলত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির ধীরগতির কারণে।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের জুনের তুলনায় চলতি বছরের মার্চে বেসরকারি খাতের ঋণ বেড়েছে সাত দশমিক ৯৫ শতাংশ, যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ।
অন্যদিকে গত ১ থেকে ১৫ মে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ (বাংলাদেশ ব্যাংকসহ) সাত হাজার ৪৩১ কোটি টাকা বেড়েছে। গত বছরের একই সময়ে সরকারের ঋণ বেড়েছিল এক হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ তথ্যমতে, গত ১ জুলাই থেকে ১৫ মে পর্যন্ত সরকারের সামগ্রিক ব্যাংক ঋণ বেড়েছে সাত হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে সরকারের সামগ্রিক ব্যাংক ঋণ ২২ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা কমেছিল।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলোর মুনাফার হার বেশি হওয়ায় এ খাত থেকে সরকারের নিট ঋণ বেশি আসছিল। যে কারণে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণনির্ভরতা কমছিল। এখনও সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বজায় থাকলেও অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে সরাসরি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কেনাবেচা চালুর পর সম্প্রতি সরকারের ব্যাংক ঋণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) সঞ্চয়পত্রসহ সব ধরনের জাতীয় সঞ্চয় স্কিম থেকে সরকারের নিট ঋণ এসেছে ৩৯ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা। ফলে এ খাত থেকে বাজেট ঘাটতি পূরণে চলতি অর্থবছরে সরকার কর্তৃক গৃহীত লক্ষ্যমাত্রার ৫১ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি নিট ঋণ এসেছে সরকারের। এবারের বাজেটে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা নিট ঋণ গ্রহণের লক্ষ্য ঠিক করেছিল।