[ খবর ] 2019-05-27
 
আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কর্মশালায় বক্তারা : বাণিজ্য বাড়াতে ব্র্যান্ডিং ও ভ্যালু অ্যাডিশনে জোর দিতে হবে
 
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির (পিটিএ) সুবিধা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছে না। স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সচেতনতার অভাবই এর প্রধান কারণ। এজন্য বাণিজ্য সংস্থা, সংগঠন বা চেম্বারগুলোকে সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। পাশাপাশি বৈদেশিক বাণিজ্য বাড়াতে আমাদের ব্র্যান্ডিং ও ভ্যালু অ্যাডিশনের দিকে সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমএমসিসি) কনফারেন্স রুমে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এমসিসিআইয়ের সহযোগিতায় কর্মশালার আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এফটিএ উইং।

‘আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে সুযোগ সৃষ্টি’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে কি নোট পেপার উপস্থাপন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মো. শফিকুল ইসলাম। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য্য, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সদস্য ড. মোস্তফা আবিদ খান ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মেহেদী আলী।

সাউথ এশিয়ান ফ্রি ট্রেড এরিয়া (সাফটা), এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্ট (আপটা), ডেভেলপিং ৮ (ডি-৮), ট্রেড প্রেফারেন্সিয়াল সিস্টেম অ্যামাং দ্য মেম্বারস অব ওআইসি (টিপিএস-ওআইসি) এবং বিমসটেক চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বেশকিছু এফটিএ ও পিটিএর সঙ্গে যুক্ত হলেও এখনো কোনো দ্বিপক্ষীয় এফটিএতে চুক্তিবদ্ধ হতে পারেনি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে বৈশ্বিক বাজারে একতরফা প্রবেশাধিকার পাওয়ার কারণেই দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে স্বাক্ষরের সুযোগ পাচ্ছে না বাংলাদেশ।

কি নোট উপস্থাপনায় বলা হয়, সাফটা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০০৪ সালে এবং এটি কার্যকর হয় ২০০৬ থেকে। এ চুক্তির মাধ্যমে ট্রেড লিবারেলাইজেশন প্রোগ্রামের দ্বিতীয় ধাপ (টিএলপি-২) বাস্তবায়ন করা হয়েছে। চুক্তিটির অধীন স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ২৫টি বাদে বাকি সব পণ্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত (ডিএফকিউএফ) করেছে ভারত।

১৯৭৫ সালে যাত্রা করা ব্যাংকক এগ্রিমেন্টের নাম পরিবর্তন করে ২০০৫ সালে এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্ট (আপটা) করা হয়। চীন যুক্ত হওয়ার পরই এ নাম পরিবর্তন করা হয়। এ চুক্তির মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য প্রায় শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করা হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা যারা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছেন তাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা অবশ্যই আপটার সুযোগগুলোর সদ্ব্যবহার করবেন। এতে আপনারা লাভবান হবেন এবং দেশ লাভবান হবে।’

কি নোট উপস্থাপনায় তিনি আরো বলেন, ২০০৬ সালে আমরা ডি-৮ চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও একধরনের অভিমান থেকে চুক্তিটির অনুমোদন করা হয়নি। এর কারণ, ডি-৮-এর মধ্যে একমাত্র স্বল্পোন্নত দেশ বাংলাদেশ। বাকি সবগুলো দেশই উন্নয়নশীল দেশ এবং তারা স্বল্পোন্নত দেশের কোনো সুবিধা নিয়েই মাথা ঘামায় না। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আমরা তাদের কাছে কিছু সুবিধা চাইলেও তারা দিতে রাজি হয়নি। ভ্যালু অ্যাডিশন ৩০ শতাংশ করার আবেদন জানালে তারা বলল, আপনারা আগে চুক্তি অনুমোদন করুন, আমরা পরে এটি বিবেচনা করব। এ বিষয়ে ২০১৭ সালে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে একটি বৈঠক করা হয়। তারা বলল, ৪০ শতাংশ ভ্যালু অ্যাডিশন আমাদের পক্ষে সম্ভব।

ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে টিপিএস-ওআইসি নামে পিটিএ চুক্তিটি করা হয়েছে। তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে এ চুক্তি করা হয়। এগুলো হলো ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট, রুলস অব অরিজিন এবং প্রটোকল টু দ্য প্রেফারেন্সিয়াল ট্যারিফ স্কিম। তবে এ চুক্তি কার্যকর হতে এখনো বাকি।

কর্মশালায় প্যানেল আলোচকরা বলেন, ভবিষ্যৎ বাণিজ্য মধ্যস্থতার জন্য ব্যবসায়ীদের আমাদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বেশির ভাগ ব্যবসায়ী সংগঠন ও চেম্বারের সদস্যদের এসব মধ্যস্থতায় ডাকা হলেও নানা অজুহাতে তারা আসেন না।
Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved