দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোলে আমদানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, শুল্ক ফাঁকি আর ঘুষ বাণিজ্যের কারণে রাজস্ব ঘাটতি রেকর্ড ছাড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রায় ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব ঘাটতির অংক দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি হয়। সেই হিসেবেই বন্দরে ৫ হাজার কোটি টাকার অধিক রাজস্ব আহরণ হওয়ার কথা। অনিয়ম বন্ধ হলে রাজস্ব আয় বাড়বে। তবে বৈধভাবে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ রাজস্ব ঘাটতির অন্যতম কারণ বলে মনে করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, দেশের ২৩টি স্থলবন্দরের মধ্যে চলমান ১৩ বন্দরের অন্যতম বেনাপোল স্থলবন্দর। প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পণ্য আমদানির জন্য দেশে যত বন্দর রয়েছে, তার মধ্যে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর হলো বেনাপোল। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা দেশের অন্য যেকোনো বন্দরের তুলনায় উন্নত। বেনাপোল থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। সে কারণে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ পণ্য এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়।
এ সুবিধা পেয়ে দেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ী এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করেন। যেদিন ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়, সেদিন থেকে এক সপ্তাহের মধ্যেই আমদানি করা পণ্য বন্দরে প্রবেশ করে।
তবে সূত্র জানিয়েছে, পণ্য আমদানির বেলায় এ বন্দরে চলে নানা অনিয়ম। কখনো পণ্য আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা, আবার ঘোষণার অতিরিক্ত পণ্য এনে সরকারের শুল্ক ফাঁকি দেয়া হয়। আর এসব কাজে মোটা অংকের টাকা পেয়ে সহযোগিতা করে কাস্টমসের একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা। এতে প্রত্যাশিত শুল্ক আয় কমে গিয়ে ক্ষতির মধ্যে পড়ছে সরকার।
কাস্টমস সূত্র থেকে জানা যায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বেনাপোল কাস্টম হাউজে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা। জুলাই থেকে ২১ মে পর্যন্ত ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা।