[ প্রথম পাতা ] 2020-11-30
 
টিকিটের টাকা নেই অনেকেরই
ওমানে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সাধারণ ক্ষমা
 
ওমান সরকার ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার আওতায় দেশে ফিরে আসার সুযোগ পেয়েছেন সেখানে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশীরা। এ সুযোগ রয়েছে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দেশটির সরকারের দেয়া সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে অন্তত ৪০ হাজার বাংলাদেশী দেশে ফিরতে চান। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বড় শ্রমবাজার ওমানে বর্তমানে চার লাখেরও বেশি বাংলাদেশী রয়েছেন। সরকারি হিসাবমতে, দেশটিতে বৈধভাবে এক লাখের বেশি বাংলাদেশী কাজ করছেন। অন্যদিকে দেশটিতে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা জানান, সেখানে বৈধভাবে কাজ করা বাংলাদেশীর সংখ্যা দেড় থেকে দুই লাখ। এর বাইরে অবৈধভাবে অবস্থান করছেন এক লাখের মতো বাংলাদেশী।

জানা গেছে, রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশ দূতাবাস ও সালালাহ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে দুই সপ্তাহ ধরে আউটপাস সংগ্রহ করতে প্রতিদিন কয়েক হাজার প্রবাসী ভিড় জমাচ্ছেন। তবে অনেকে তা সংগ্রহ করলেও দেশে ফেরা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। করোনা মহামারীতে কাজ না থাকায় বহু প্রবাসীর কাছেই এখন দেশে ফেরার জন্য উড়োজাহাজের টিকিট কেনার মতো পর্যাপ্ত অর্থ নেই। দূতাবাস জানায়, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর ১৫ থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত দূতাবাসে অন্তত ২০ হাজার বাংলাদেশী স্লিপ সংগ্রহের জন্য এসেছেন। তাদের মধ্যে অন্তত সাত হাজার ব্যক্তিকে এ স্লিপ দেয়া হয়েছে। বাকিদেরও পর্যায়ক্রমে স্লিপ দেয়া হবে। স্লিপ সংগ্রহকারী বাংলাদেশীরা জানান, দূতাবাসে এখন যে পরিমাণ প্রবাসী এসে ভিড় করেছেন, তাতে সবাই এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

ওমান থেকে দেশে ফিরতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিমানের টিকিট, করোনা নেগেটিভ সনদ ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র সংগ্রহসহ মাথাপিছু খরচ পড়ে ২০০ রিয়ালের বেশি, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৪৫ হাজার টাকার সমপরিমাণ। ওমানে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের বড় একটি অংশেরই এ অর্থ দিয়ে দেশে ফেরার সাধ্য নেই।

প্রবাসীরা জানান, করোনার মধ্যে বেকার অবস্থায় জীবনযাপনের পর এ টাকা জোগাড় করে অনেকেই দেশে যেতে পারবেন না। এক্ষেত্রে সরকারিভাবে সহায়তা পাওয়া গেলে অবৈধভাবে অবস্থানরতদের বেশির ভাগই দেশে ফিরে যেতে পারবেন। তা না হলে অনেককেই আউটপাস সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত বিমানের টিকিটের টাকা জোগাড় করতে না পেরে সেখানে অবৈধভাবেই থেকে যেতে হবে। ওমানের সরকারি সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সাধারণত পাঁচ থেকে ১০ বছর পর পর অবৈধ প্রবাসীদের দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে ওমান সরকার।

প্রবাসীদের দেশে ফেরায় আর্থিক সংকটের বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি রিসার্চ মুভমেন্ট ইউনিট (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, সাধারণ ক্ষমার আওতায় যেকোনো দেশ থেকে প্রবাসীরা দেশে ফেরার সুযোগ পেলে এবং ফেরার ক্ষেত্রে তাদের আর্থিক সমস্যা থাকলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশ ও বাংলাদেশের সহযোগিতা করা উচিত। কারণ এসব প্রবাসী ওই দেশগুলোর উন্নয়নে এবং বাংলাদেশের রেমিট্যান্সে তাদের অবদান রেখেছেন। তাছাড়া তারা কোনো না কোনো সময় বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে সেদেশে গিয়েছিলেন। ফলে তাদের সহযোগিতা দিতে হবে। যেকোনো অভিবাসী কনভেনশন দেখলে দেখা যায়, অভিবাসীদের সংকট বা সমস্যায় তাদের অধিকারের বিষয়টি প্রথমেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ এপ্রিল থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ গত সাত মাসে ওমান থেকে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন ১৬ হাজার ৯৫ জন। এর মধ্যে পাসপোর্ট ও নথি না থাকায় আউটপাস নিয়ে ফিরেছেন ২ হাজার ৬৪২ জন।

Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved