[ পাতা ৪ ] 2020-11-30
 
বিশ্বে ৩৮০ কোটি ডোজ ক্রয়ের অর্ডার
ভ্যাকসিন ঘিরে বড় ব্যবসা
 
করোনা মহামারিতে বিশ্ব অর্থনীতি যখন বিধ্বস্ত, তখন ভ্যাকসিনই যেন আশার টনিক হয়ে উঠেছে। ভ্যাকসিন দ্রুত আসছে—এমন খবরে বিশ্ব শেয়ারবাজার ও অর্থবাজার চাঙ্গা হয়ে উঠে আবার দেরিতে পাওয়ার হতাশায় পতনও ঘটছে। তাই বিশ্বজুড়ে ওষুধ কম্পানিগুলো থেকে শুরু করে শীর্ষ বিলিয়নেয়াররা এই খাতে বিনিয়োগ করছেন। ধনী-দরিদ্র সব দেশই আগাম অর্ডার দিয়ে রেখেছে। ২০২১ সালের শুরু থেকেই ভ্যাকসিন ঘিরে বিশ্বজুড়ে বড় ব্যবসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কম্পানি ফাইজার এবং জার্মান বায়োটেক প্রতিষ্ঠান বায়োনটেক যৌথভাবে আগামী বছর প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলারের কভিড-১৯ টিকা বিক্রি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিনিয়োগ ব্যাংক মরগান স্ট্যানলে এই তথ্য দিয়েছে। ফাইজার প্রথম অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রকে ১০০ মিলিয়ন ডোজ সরবরাহ করবে প্রতি ডোজ ৩৯ ডলার দরে। যদিও পরবর্তী সময়ে আরো ৫০০ মিলিয়ন ডোজ সরবরাহ করা হবে প্রতি ডোজ ১৯.৫০ ডলার হিসাবে। প্রতিষ্ঠান দুটির কাছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ২০০ মিলিয়ন ডোজের অর্ডার দিয়েছে, যুক্তরাজ্য অর্ডার দিয়েছে ৪০ মিলিয়ন ডোজের।

কিছু কম্পানি কভিড-১৯-এর টিকা নিয়ে ব্যবসা করলেও অনেক কম্পানি এ থেকে মুনাফা না করার কথাও জানিয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অংশীদারিতে টিকা তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা। উভয়ে মহামারির এই সময়ে টিকা বিক্রি থেকে কোনো মুনাফা করবে না বলে জানিয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার তহবিল পাওয়া বায়োটেক প্রতিষ্ঠান মডার্না তাদের ভ্যাকসিনের দাম ধরেছে প্রতিটি ৩২ থেকে ৩৭ ডলার।

করোনা মহামারি ঘিরে ভ্যাকসিন উৎপাদনে বিপুল বিনিয়োগ করেছে উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্বের শীর্ষ কম্পানিগুলো এখন এই খাতে বিনিয়োগ করেছে। বিল গেটস, জেফ বেজসসহ শীর্ষ ধনীরাও করোনার টিকায় অর্থায়ন ও বিনিয়োগ করছেন।

করোনা মহামারির বিরুদ্ধে শুরু থেকেই লড়ে যাচ্ছেন বিল গেটস। তিনি টিকা উৎপাদনে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটসহ অনেক প্রতিষ্ঠানকেই অর্থায়ন করেছেন। তাঁর গড়া প্রতিষ্ঠান বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ৫০ কোটি ডলার পর্যন্ত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে সিরাম ইনস্টিটিউট পেয়েছে ১৫ কোটি ডলার। এই অর্থায়নের লক্ষ্য দরিদ্র দেশগুলোতে স্বল্পমূল্যে করোনার টিকা সরবরাহ করা। জানা যায়, জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশ টিকা পাচ্ছে।

ডিউক গ্লোবাল হেলথ ইনোভেশন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ধনী ও দরিদ্র দেশগুলো মিলে এ পর্যন্ত ৩৮০ কোটি ডোজ টিকা ক্রয়ের অর্ডার করেছে। যদিও টিকার প্রয়োজন ৯০০ কোটি ডোজ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টিকার অর্ডার করেছে জনসংখ্যাবহুল দেশ ভারত। দেশটি এক হাজার ৬০০ মিলিয়ন টিকার অর্ডার করেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) করেছে এক হাজার ৫৮৫ মিলিয়ন ডোজের অর্ডার, যুক্তরাষ্ট্র করেছে এক হাজার ১০ মিলিয়ন ডোজের অর্ডার, কভ্যাক্স নেবে ৭০০ মিলিয়ন ডোজ, কানাডা নেবে ৩৫৮ মিলিয়ন, যুক্তরাজ্য নেবে ৩৫৫ মিলিয়ন, জাপান নেবে ২৯০ মিলিয়ন এবং বাংলাদেশ নেবে ৩০.১ মিলিয়ন ডোজ টিকা।

টিকা সরবরাহের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে ফাইজার ও বায়োনটেক। তারা ২০২১ সালের মধ্যে ১.৩ বিলিয়ন ডোজ টিকা সরবরাহের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে মডার্না সরবরাহ করবে এক বিলিয়ন ডোজ এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড উৎপাদন করবে এক বিলিয়ন ডোজ।
Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved