[ অনলাইন ] 2022-01-18
 
অর্থবছরের প্রথমার্ধে রাজস্ব আদায়
বেনাপোল কাস্টমসের ঘাটতি ৫০৯ কোটি টাকা
 
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউজ। এ সময়ে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০৯ কোটি টাকা। তবে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে। কাস্টম হাউজ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বেনাপোল কাস্টম হাউজের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল আড়াই হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। তবে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় এ সময়ে ১০১ কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছে। ওই সময়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা।

কাস্টম হাউজের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ১১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৪ টন পণ্য আমদানি হয়েছে। আর এ সময়ে রফতানি হয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৩ টন পণ্য। যেখানে ২০২০-২১ অর্থবছরের আমদানি হয়েছিল ১১ লাখ ৭৩ হাজার ৩২ টন পণ্য। রফতানি হয়েছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৬ টন। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের চেয়ে এবার আমদানি কিছুটা কমলেও রফতানির পরিমাণ বেড়েছে।

চলতি অর্থবছর আমদানি পণ্য থেকে ৬ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৪৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ওই অর্থবছর শেষে আদায় হয়েছিল ৪ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। বছরটিতে রাজস্ব আয়ের ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৫৭ কোটি টাকা।

এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঘাটতি ছিল ৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাটতি ১ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় রয়েছে সব মহলে।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বড় অংকের রাজস্ব আদায় অনিশ্চিত। কারণ নানা অব্যবস্থাপনায় আমদানি কমেছে এ বন্দর দিয়ে। বেনাপোল কাস্টমসে আমদানি পণ্যের গুণগতমান পরীক্ষণে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেই। খুলনা ও ঢাকা থেকে পরীক্ষা করাতে মাসের অধিক সময় লেগে যায়। ফলে দীর্ঘসময় পণ্য চালান আটকা পড়ে ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। বেনাপোল কাস্টম হাউজে বিএসটিআই ও বিএসআইআরের শাখা স্থাপনের দাবি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে অনেক ব্যবসায়ী এ বন্দর ছেড়েছেন।

একই কথা জানান, ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট এক্সপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা যেখানে সুবিধা পাবেন, সে পথে আমদানি, রফতানি বাণিজ্যে আগ্রহী হবেন এটাই স্বাভাবিক। চট্টগ্রাম বন্দরে অনেক সুবিধা বিদ্যমান। তাই ব্যবসায়ীরা দিন দিন সে পথে আমদানিতে ঝুঁকছেন। বেনাপোল বন্দর দিয়ে রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কাস্টমস ও বন্দরে বৈধ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে ব্যবসায়ীরা এ পথে আবার ফিরবেন।

বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, শুধু ভারতের কালীতলায় অবৈধভাবে আমদানিবাহী গাড়ি আটকে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এতে আমদানিকারকরা অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছেন। আবার আমদানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেনাপোল বন্দরে পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় বাণিজ্য সম্প্রসারণ হচ্ছে না। এতে কয়েক বছর ধরে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। তার পরও চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে আমরা গত বছরের চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় করেছি।
Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved