[ বাংলাদেশ ] 30/07/2022 |
|
|
|
গৃহবধূকে সৌদি আরবে পাচারের পর নির্যাতন, মুক্তিপণ দাবি |
|
গ্রেপ্তার চক্রের পাঁচ সদস্য |
লোভনীয় বেতনের চাকরির কথা বলে এক গৃহবধূকে সৌদি আরবে পাচার করা হয়। তাকে দেওয়া হয় গৃহপরিচারিকার কাজ। সেখানে শারীরিক-মানসিক নির্যাতনে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি পাচারকারীরা গোপন রাখতে বলায় তিনি পরিবারের কাউকে জানাননি। তিন মাস পর স্বামীর সঙ্গে যখন তার যোগাযোগ হয়, তখন তাকে আটকে নির্যাতন করা হচ্ছিল। সেসব ভিডিও-ছবি তার স্বামীর কাছে পাঠানো হয়। তিনি স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ জানালে দাবি করা হয় চার লাখ টাকা মুক্তিপণ। বাধ্য হয়ে তিনি এক লাখ টাকা দিলেও তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনেননি পাচারকারী চক্রের সদস্যরা।
বিষয়টি জানার পর এই অপরাধী চক্রকে আইনের আওতায় আনার কাজ শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একপর্যায়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মালিবাগের ডিআইটি রোড এলাকা থেকে চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা হলেন- ফরহাদ হোসেন ওরফে রেজা সিকদার, মো. মিজান, আনোয়ার হোসেন, রাজু আহমেদ ওরফে আরজু ও আনোয়ার হোসেন (২)। তারা সবাই ডায়নামিক স্টাফিং সার্ভিসেস ওভারসিজ লিমিটেড নামে এক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। অভিযানে উদ্ধার করা হয় ৭৪টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, বিদেশে পাঠানোর তথ্য সংবলিত রেজিস্ট্রার, একটি ডায়েরি, দুটি হার্ড ডিস্ক, চারটি মোবাইল ফোন ও একটি লাঠি।
এখন পর্যন্ত পলাতক আছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. ইমরান, আল ইসলাহ ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সানাউল্লাহ, মার্কেটিং অফিসার শামিম শেখ ও ডায়নামিক স্টাফিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ারুল ইসলাম মনির। আজ শুক্রবার তাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর স্বামী।
হাতিরঝিল থানার ওসি আবদুর রশীদ সমকালকে বলেন, চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে মানবপাচারে জড়িত একটি চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।
সিআইডি সূত্র জানায়, চক্রের সদস্যদের প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে গত বছরের ১৫ অক্টোবর ডিআইটি রোডে তাদের অফিসে যান ভুক্তভোগী। তাকে বোঝানো হয়- যেতে কোনো টাকা লাগবে না, আর সেখানে গিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। কোনো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনবে তারা। তবে আপাতত বিষয়টি কাউকে জানানোর দরকার নেই। এরপর ১৮ নভেম্বর তাকে দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বিদেশে যাওয়ার পর খোঁজ নিতে গিয়ে স্বামী বিষয়টি জানতে পারেন। তবে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের পথ খুঁজে পাননি। তিন মাস পর যোগাযোগ হলে স্ত্রী তাকে জানান, অবর্ণনীয় নির্যাতনের কথা। মামলার আসামিদের কাছে গেলে তারা উল্টো মুক্তিপণ দাবি করে। এক লাখ টাকা দেওয়ার পর চলতি বছরের ১০ জুন তারা বলে, তিন দিনের মধ্যেই তাকে দেশে আনা হবে। তবে সেই কথাও তারা রাখেনি। পরে সিআইডি ঢাকা মেট্রো উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিমের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালিয়ে পাচারে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
সিআইডি জানায়, এই চক্রটির রিক্রুটিং লাইসেন্স ও অনুমোদন না থাকায় তারা আল ইসলাহ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে ভুক্তভোগীকে পাচার করে। পরস্পরের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে তারা সহজ-সরল নারীদের ভালো বেতনে চাকরির কথা বলে বিদেশে পাচার করে আসছিল বলে জানা যায়। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|