Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
আরও দুইজন গ্রেপ্তার, ডাকাতির কথা স্বীকার [ প্রথম পাতা ] 06/08/2022
আরও দুইজন গ্রেপ্তার, ডাকাতির কথা স্বীকার
বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণকুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হলো গোয়েন্দা পুলিশকে।
কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল এক্সপ্রেসের বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় আরও দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ বলেছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ দুজন বাসে ডাকাতিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও নারী যাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।

এদিকে যাত্রাপথে হোটেলে বিরতি দেওয়ার পর অনেক বাসেই যাত্রী ওঠেন, তবে কখনো ডাকাতি বা ধর্ষণের এমন ঘটনার মুখোমুখি হননি বলে দাবি করেছেন ওই বাসের চালক মনিরুল ইসলাম।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সেখানে তিনি ওই ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের কথা প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আবদুল আওয়ালকে (৩০) গতকাল ভোরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর টানকালিয়াকৈর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। তিনি ওই উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে একই উপজেলার

ডাকাতির কথা স্বীকার

প্রথম পৃষ্ঠার পর

সোহাগপল্লী এলাকা থেকে নুরনবীকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। নুরনবী কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ধুনারচর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কালিয়াকৈরের শিলাবহ পশ্চিমপাড়া গ্রামে বসবাস করেন।

নুরনবীর কাছ থেকে ডাকাতিকালে লুট করা একটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। নুরনবী পুলিশকে বলেছেন, লুণ্ঠিত আরেকটি মুঠোফোন তাঁর কাছে ছিল, সেটি তিনি এক টোকাইকে দিয়ে দিয়েছেন।

সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, গ্রেপ্তার দুজনকে শনিবার (আজ) আদালতে হাজির করা হবে। এ দুজন বাসে ডাকাতিকালে ধর্ষণে যুক্ত ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হতে ভুক্তভোগী নারীর সামনে তাঁদের হাজির করা হবে। এ জন্য আদালতের অনুমতি নেওয়া হবে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হওয়া রাজা মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

মামলা গোয়েন্দা পুলিশে

চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব গোয়েন্দা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিনকে তদন্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে।

গত বুধবার মধুপুর থানায় ডাকাতি ও গণধর্ষণের অভিযোগ এনে বাসের যাত্রী হেকমত আলী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তখন মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুরাদ হোসেনকে।

পুলিশ সূত্র জানায়, চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী ওই ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকেই জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের চিহ্নিত করে। পরে বৃহস্পতিবার ডাকাত দলের বাসচালক রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শরফুদ্দীন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব গোয়েন্দা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে।

বাসচালক যা বললেন

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর থেকে ঈগল এক্সপ্রেসের ওই বাস চালাচ্ছিলেন মনিরুল ইসলাম। ১৫ বছর ধরে দূরপাল্লার বাস চালান তিনি। কিন্তু কখনো এমন ঘটনার শিকার হননি বলে জানিয়েছেন। তাঁর বাসে ডাকাতি ও দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার পর থেকে টাঙ্গাইলের মধুপুর থানায় আছেন তিনি।

গতকাল মুঠোফোনে মনিরুলের সঙ্গে দুই দফায় ১৫ মিনিট এই প্রতিবেদকের কথা হয়। থানায় তাঁর সঙ্গে বাসের সুপারভাইজার রাব্বী হোসেন ও চালকের সহকারী (হেলপার) দুলাল হোসেনও রয়েছেন।

মনিরুল বলেন, ‘বুধবার থেকেই থানাতে আছি। পুলিশ বলেছে, আসামি ধরা হবে, তাদের শনাক্ত করার জন্য রাখা হয়েছে। মাঝেমধ্যে ছবি এনে দেখাচ্ছে। তাদের শনাক্ত করছি।’ টিকিট ছাড়া দূরপাল্লার গাড়িতে যাত্রী ওঠানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হোটেলে বিরতির পর অনেক বাসেই যাত্রী ওঠে। কখনো এমন হয়নি। তবে আমাদের কপাল খারাপ, ব্যাড লাক।’

মনিরুলের বাড়ি দৌলতপুর উপজেলার কৈপাল গ্রামে। ২০০৭ সাল থেকে তিনি দূরপাল্লার বাসের চালক। দীর্ঘদিন কুষ্টিয়ার এসবি সুপার ডিলাক্সের নন-এসি বাসের চালক ছিলেন। সম্প্রতি ঈগল এক্সপ্রেসের চালক হয়েছেন।

সেদিন রাতের ঘটনা প্রসঙ্গে মনিরুল বলেন, প্রাগপুর থেকে তিনি বাস চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সর্বশেষ নাটোরের কাঁচিকাটা এলাকা থেকে টিকিটধারী যাত্রী বাসে ওঠেন। সব মিলিয়ে ২৪ জন যাত্রী নিয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছিলেন। সিরাজগঞ্জে হোটেলে বিরতি শেষে বাস ছাড়ার পর তিন দফায় ১০ জন ডাকাত ওঠেন।

মনিরুলের ভাষ্য অনুযায়ী, ডাকাতেরা তাঁকে বলেন, মির্জাপুরে নেমে যাবেন। চলতি পথে দুজন গাড়ি সাইড করতে বলেন। কিন্তু তিনি বাস না থামিয়ে বাসস্ট্যান্ডে নামার কথা বলেন। একপর্যায়ে তাঁরা জোর করতে থাকেন। শুরু করেন টেনেহিঁচড়ে মারধর। সঙ্গে সঙ্গেই একজন বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চালাতে থাকেন।

মনিরুল বলেন, বাসের স্টাফসহ পুরুষ যাত্রীদের দ্রুত চোখ, মুখ ও হাত বেঁধে বাসের পেছনের দিকে নিয়ে মাঝখানে বসিয়ে রাখেন ডাকাতেরা। ১৫ মিনিট পর বুঝতে পারেন, বাস ইউটার্ন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু কখনো থামছিল না। তাঁকে মারধর করে টাকাসহ মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। তবে তাঁর কাছে থাকা আরেকটি মুঠোফোন ডাকাতেরা নিতে পারেননি।

এই বাসচালকের আরও ভাষ্য, ঘটনার একপর্যায়ে তিনি একজন নারী যাত্রীর মুখ থেকে শুনতে পান, ‘তোদের ঘরে মা-বোন নেই? আল্লাহর দোহাই লাগে, আমার সঙ্গে এ কাজ করিস না।’ কিন্তু ডাকাতেরা কিছুই শোনেননি।

পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় গতকাল দুপুর পর্যন্ত যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা ডাকাতিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও কেউই ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দৌলতপুর থেকে ঈগল এক্সপ্রেসের বাসটি নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি খাবার হোটেলে যাত্রাবিরতি দেয়। সেখান থেকে যাত্রা শুরুর পর তিন দফায় যাত্রীবেশী কয়েকজন ডাকাত বাসে ওঠেন। বাসটি টাঙ্গাইল অতিক্রম করার পর ডাকাতেরা বাসটি তাঁদের নিয়ন্ত্রণে নেন। তাঁরা যাত্রীদের বেঁধে সব লুটে নেন। এ সময় বাসে থাকা এক নারী যাত্রী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ উঠেছে।

No link found
 
 
 
 
Today's Other News
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved