Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
দেশ থেকে অর্থপাচার হলেও ফেরানো সম্ভব নয় [ প্রথম পাতা ] 01/11/2022
দেশ থেকে অর্থপাচার হলেও ফেরানো সম্ভব নয়
বিএফআইইউয়ের স্বীকারোক্তি
দেশে থেকে অর্থপাচার হয়, তবে সেটা ফেরানো সম্ভব নয়। অর্থপাচারের সিংহভাগ হয়ে থাকে ট্রেড বেসড (ব্যবসায়ী চ্যানেল) পন্থা অবলম্বন করে। পণ্যভেদে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ইনভয়েসিং করে অর্থপাচার করা হয়। তবে কী পরিমাণ অর্থপাচার হয়েছে, এমন কোনো তথ্য নেই বিএফআইইউ’র কাছে।

গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংস্থাটির কার্যক্রম ও গত অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস।

বিএফআইইউ প্রধান বলেন, দেশ থেকে অর্থপাচার হয় না, এটা বলা যাবে না। দেশ থেকে টাকা পাচার হয়। তবে যেটা একবার পাচার হয়, সেটা ফেরানো সম্ভব হয় না। বৈশ্বিকভাবে পাচারকৃত মোট অর্থের মাত্র এক শতাংশ উদ্ধার হওয়ার নজির আছে।   এছাড়া দেশ থেকে কী পরিমাণ অর্থপাচার হয়েছে, এমন কোনো তথ্যও বিএফআইইউ’র কাছে নেই।

তিনি বলেন, প্রতিটা উন্নয়নশীল দেশ থেকেই অর্থপাচারের ঘটনা ঘটে। যেহেতু আমরা উন্নয়নশীল দেশ, সেক্ষেত্রে আমাদের এখান থেকেও হয়। এছাড়া অবৈধ অর্থ ছাড়াও বৈধভাবেও নানাভাবে দেশ থেকে টাকা চলে যাচ্ছে।

মাসুদ বিশ্বাস বলেন, দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থপাচার হয়ে থাকে ট্রেড বেসড মাধ্যমে। এছাড়া ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিং পন্থা অবলম্বন করেও করা হয়।

তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে পাওয়া গেছে, কোনো কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে ২০ থেকে ২০০ শতাংশ ওভার ইনভয়েসিং হয়েছে। তিন মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক এলসি খোলায় নানা কড়াকড়ি আরোপ করার ফলে এখন ওভার ইনভেয়েসিং হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের কাজ আন্ডার ইনভয়েসিং কীভাবে হচ্ছে তা খুঁজে বের করা। আমরা একটা জায়গা খুঁজে পেয়েছি, সেটা হচ্ছে গাড়ির ক্ষেত্রে। গাড়ির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ ট্যাক্স রয়েছে। তাই আন্ডার ইনভয়েসিং করতে পারলে ট্যাক্সের পরিমাণ কমে যাবে। তাই এর মাধ্যমেই আন্ডার ইনভয়েসিং করার জন্য প্রধান জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছে। এছাড়া অন্যান্য জায়গায় আন্ডার ইনভয়েসিং করার সুযোগ রয়েছে। এসব জায়গায় বাংলাদেশ ব্যাংক মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করছে।

মানি লন্ডারিং হওয়ার আগে ধরা সম্ভব কি নাÑএমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং আগে ধরা গেলে সুবিধা হতো, কিন্তু সেটা ধরা সম্ভব হয় না।

হুন্ডি বেড়ে যাওয়ায় প্রবাসী আয় কমেছেÑএমন প্রশ্নে মাসুদ বিশ্বাস বলেন, দেশে হুন্ডি হচ্ছে। তবে হুন্ডির ডলার কোথাও না কোথাও ব্যবহার হচ্ছে। আর তা ব্যবহার হচ্ছে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের পেমেন্টে। বাংলাদেশ ব্যাংক যেহেতু মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে, আশা করি আগামী দিনে ট্রেড বেসড মানি লন্ডারিং কমে আসবে।

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার প্রসঙ্গে বলেন, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ বেড়েছে, এমন তথ্য আমরা প্রায় সময় দেখি। এটা নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সুইস ব্যাংকে ব্যক্তিপর্যায় টাকা হলো তিন শতাংশ, বাকিটা ব্যাংক টু ব্যাংক পর্যায়ে রয়েছে। সুইজারল্যান্ড থেকে আমরা কিছু তথ্য চেয়েছি, তারা আমাদের দিয়েছে। তবে এখন তারা আইন পরিবর্তন করেছে। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে ব্যক্তিপর্যায়ের তথ্য শেয়ার করবে। এখন তথ্য চাইলে সুইস এফআইইউ-সংক্রান্ত যে কোনো তথ্যই দিতে পারে।

বিএফআইইউর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের আর্থিক খাতে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে আট হাজার ৫৭১টি সন্দেহজনক লেনদেন (এসটিআর) হয়েছে। এক বছরে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ৬২ দশ?মিক ৩২ শতাংশ বা তিন হাজার ২৯১টি। ২০২০-২১ অর্থবছরে এই সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজার ২৮০টি।

এর আ?গে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এমন লেনদেন ও কার্যক্রম হয়েছিল তিন হাজার ৬৭৫টি। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এমন লেনদেন ও কার্যক্রম হয়েছিল তিন হাজার ৫৭৩টি।

সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ বিশ্বাস বলেন, এসটিআর করলেই শাস্তি পেতে হবে, এমন কোনো বিষয় নেই। ব্যাংক থেকে কোনো লোন অস্তিত্বহীন জায়গায় চলে যাবে, এমন তথ্য পেলে সেটা বিএফআইইউ ঠেকাতে পারে। এটার জন্য ল ইনফোর্সমেন্ট এজেন্সির কাছে যেতে হয় না। এমন অনেক এসটিআর যদি ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগে পাওয়া যায়, তাহলে সেটা আটকানোর সুযোগ থাকে। আর যদি ঘটনা ঘটে যায়, তাহলে সেটা আটকানো সম্ভব হয় না। এরই মধ্যে মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের মাধ্যমে বেশ কিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছি। দায়ী কর্মকর্তাদের ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।

বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরো অর্থবছরে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৯৯৯টি সন্দেহজনক লেনদেনের রিপোর্ট জমা দিয়েছে ব্যাংকগুলো। তার আগের অর্থবছ?রে চার হাজার ৪৯৫টি রিপোর্ট জমা দিয়েছিল ব্যাংকগুলো। আ?র্থিক প্র?তিষ্ঠা?নগু?লো রিপোর্ট জমা দেয় ১০৬টি। আর এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো ৪৫৭টি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এছাড়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে। ৫২টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ওপর তদন্ত করে ৩৩টির সারাংশ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার চাহিদার আলোকে গত অর্থবছরে ৮৪টি প্রতিবেদন সরবরাহ করেছে এফআইইউ, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৭৩টি। এর মধ্যে রয়েছে জালিয়াতি সম্পর্কিত ৫৬টি, ঘুষ ও দুর্নীতি সাতটি, মুদ্রা পাচার-সংক্রান্ত ৯টি ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন-সংক্রান্ত একটি।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ, বিএফআইইউ প?রিচালক র?ফিকুল ইসলাম, অ?তি?রিক্ত প?রিচালক কামাল হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• কখনও ম্যাজিস্ট্রেট, কখনও মেজর পরিচয়ে প্রতারণা করতেন তিনি
• জয়পুরহাটে স্বর্ণের ১৬ বারসহ পাচারকারী আটক
• বাংলাদেশে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধে উন্নত রাষ্ট্র সমূহের সহযোগিতার বিকল্প নেই
• মোনেম গ্রুপের আমদানি-রপ্তানি স্থগিত, ব্যাংক হিসাব জব্দ
• দুই কোটি টাকার স্বর্ণের বারসহ চোরাকারবারি আটক
• ঢাকা ব্যাংকের ২১ কোটি টাকা আত্মসাৎ, সাইমেক্সের এমডি ও তার স্ত্রী কারাগারে
• সামুদ্রিক মাছ আমদানির আড়ালে কোটি টাকা পাচার ভারতে
• আব্দুল মোনেম গ্রুপের আমদানি-রফতানি স্থগিত, ব্যাংক হিসাব জব্দ
• অর্থ আত্মসাৎ: সাইমেক্স লেদারের এমডি ও তার স্ত্রী কারাগারে
• হাসপাতালের ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved