Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ [ অনলাইন ] 29/03/2024
মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ৪
ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ
চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ আত্মসাৎকারী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. ফরিদুল ইসলাম (২৯), মো. নাসির চৌধুরী (৪৫), মো. নাসিম মাহমুদ (৪৩) ও জুয়েল রানা (৪৫)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত চারটি মোবাইল ফোন ও বেশকিছু ভুয়া নিয়োগপত্র, চেক ও স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, কারা অধিদপ্তর, পররাষ্ট্র অধিদপ্তর, বিআরটিসি, বিএডিসি, সচিবালয়, ব্যাংক, মেট্রোরেল, এয়ারপোর্ট, তিতাস গ্যাস এবং সেনাবাহিনীর সিভিল পদে চাকরির বিজ্ঞাপন বিভিন্ন পত্রিকায় আসার পরে প্রতারক চক্রটি সক্রিয় হয়ে উঠে। সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করত তারা। চক্রটি টাকা হাতিয়ে নিলেও এখন পর্যন্ত কাউকে চাকরি দিতে পারেনি তারা। এভাবে গত কয়েক বছরে তারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তাররা বেশ কিছুদিন ধরে ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়ার মাধ্যমে সাধারণ চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। অনুসন্ধানে এই চক্রের বিভিন্ন ধাপ লক্ষ্য করা যায়। কোনো চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেই এই চক্রের মাঠকর্মী হিসেবে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে গিয়ে বিভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে যেকোনো চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মতো তাদের হাতে লোক রয়েছে বলে আশস্ত করত। চাকরি প্রার্থী তাদের প্রস্তাবে রাজি হলে তাদের কাছ থেকে বস্নু ব্যাংক চেক, বস্ন?্যাংক স্ট্যাম্প ও সিভি সংগ্রহ করার পাশাপাশি মাঠকর্মী তাদের কাছ থেকে অ্যাডভান্স হিসেবে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা গ্রহণ করে।

ডিবি প্রধান বলেন, মাঠকর্মী তার কমিশনের নির্দিষ্ট টাকা রেখে বাকি টাকা ও সিভি ফিল্ড পর্যায়ের সাব এজেন্টের কাছে প্রেরণ করে। এরপর সাব এজেন্ট এই টাকা ও সিভি গ্রহণ করে সব চাকরি প্রার্থীকে নির্দিষ্ট একটি দিনে ভাইভার কথা বলে ঢাকার এজেন্টের কাছে পাঠায়। পরে ঢাকার এজেন্ট আবাসিক হোটেলের রুমে বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আশপাশের কোনো একটি চায়ের দোকানে চাকরি প্রার্থীদের ভাইভা পরীক্ষা গ্রহণ করে। ভাইভাতে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে প্রার্থীর কাছ থেকে এই দিন চুক্তির ৫০ শতাংশ টাকা গ্রহণ করে। এরপর চক্রের আরেক সদস্য চুক্তির বাকি টাকা গ্রহণ করে প্রার্থীকে নির্দিষ্ট একটি দিনে যোগদানের কথা উলেস্নখ করে একটি ভুয়া নিয়োগপত্র এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একটি ভুয়া আইডি কার্ড দিয়ে পুরো টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হয়ে যায়।

অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ আরও বলেন, পরবর্তী সময়ে চাকরি প্রার্থীরা নিয়োগপত্রে উলিস্নখিত তারিখে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগদান করতে গেলে প্রার্থীরা জানতে পারেন, প্রতারক চক্রের দেওয়া নিয়োগপত্র আর আইডি কার্ডটি ভুয়া। ততদিনে প্রত্যেক চাকরি প্রত্যাশীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় ১০ থেকে ২০ লাখ টাকার মতো। পরে চক্রটি নিজেদের মধ্যে চুক্তির টাকা ভাগাভাগি করে নেয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানায়, দুই তিন বছর ধরে এভাবে চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল তারা। তাদের ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তারা বিভিন্ন চাকরি প্রত্যাশীদের বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, কারা অধিদপ্তর, পররাষ্ট্র অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বিআরটিসি, বিএডিসি, এলজিইডি, সচিবালয়, বিভিন্ন ব্যাংক, প্রাথমিকের পিয়ন, মেট্রোরেল, এয়ারপোর্ট, তিতাস গ্যাস ও ওয়াসার আউটসোর্সিং এবং সেনাবাহিনীর সিভিল পদে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিত।

ডিবি প্রধান বলেন, একজন ভুক্তভোগীর কাছে ১২ লাখ টাকা হাতিয়েছে চক্রটি; এরপর মামলা করেন তিনি। মামলার বাদীকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এমএলএসএস পদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে একটি নিয়োগপত্র দেয়। এ নিয়োগপত্র নিয়ে তিন মাস পরে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে যোগদানের জন্য গেলে জানতে পারেন যে নিয়োগপত্রটি ভুয়া। পরে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদের ব্যবহৃত সব যোগাযোগ নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। মামলার বাদী প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে চকবাজার থানায় মামলাটি করেন।

ডিবি-সাইবারের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল হক বলেন, চক্রটি গত কয়েক বছরে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ২০ লাখ টাকা কারে নিলেও কারও চাকরি দিতে পারেনি তারা। পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে শুধু সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করতে হবে। চাকরির ক্ষেত্রে কারও সঙ্গে কোনো লেনদেন করা যাবে না।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আসামিদের ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ডিবির পরামর্শ : ১. যেকোনো চাকরিতে যোগ্যতার ভিত্তিতে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়। অনৈতিক উপায়ে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা না করা। ২. অনেক প্রতারক চক্র রয়েছে যারা ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়েও প্রতারণা করে থাকে। তাই বিজ্ঞপ্তিগুলোর সত্যতা যাচাই করার জন্য জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্র ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ওয়েবসাইটের সহায়তা নেওয়া।

৩. সরকারি চাকরিতে কেবল সরকার নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত নির্দেশনা মোতাবেক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে থাকে। সুতরাং যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা। ৪. প্রতারিত হলে নিকটস্থ থানা পুলিশকে তাৎক্ষণিক অবহিত করতে হবে।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• টেন্ডার ছাড়াই হাসপাতালের রড বিক্রি করলেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
• ঠিকাদার কাজ পেলেই প্রকৌশলীর পকেটে ২ শতাংশ
• কয়েক মিনিটেই নকল ‘স্মার্ট কার্ড’ বানায় দালাল চক্র
• রানীকে ‘বেগম’ বানিয়ে প্রতারণা, জেলহাজতে স্বামী
• যশোরে হাসপাতালের স্টোর থেকে ওষুধ পাচারের অভিযোগ
• তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ ১০ জুন
• ঘুষ নিয়ে স্যারকে জানালেন— ‘৮০ হাজার দেওয়ার কথা ছিল, দিয়েছে ৪০’
• মহেশপুর সীমান্তে ৩ কোটি টাকার স্বর্ণের বারসহ দুই ভাই আটক
• দামুড়হুদায় মুনছুরের ব্যাংকে জমা বেড়েছে ২ হাজার ৫৩৮ গুণ
• ৫০০ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৪ নেতা আটক
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved