পূবালী ব্যাংকের চাঁদপুর শহরের নতুন
বাজার শাখার ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দী অতিরিক্ত মুনাফা দেওয়ার কথা বলে
গ্রাহকদের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায়
ব্যাংকের বর্তমানে দায়িত্বরত ব্যবস্থাপক চাঁদপুর সদর মডেল থানায় সাধারণ
ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
নিখোঁজ ব্যাংক ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দী
(৪০) চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সপরিবারে
কুমিল্লায় থাকতেন এবং সেখান থেকে চাঁদপুরে এসে দায়িত্ব পালন করতেন। গতকাল
সোমবার দুপুরে ব্যাংকের ওই শাখায় গিয়ে দায়িত্বরত ব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন
কবির, মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা নজরুল ও গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে
জানা গেছে, শ্রীকান্ত নন্দী ৪ কোটি ৯৯ লাখ ৮৪ হাজার ৫৩৬ টাকা নিয়ে লাপাত্তা
হয়েছেন।
ব্যাংকের গ্রাহক ব্যবসায়ী আকবর হোসেন লিটন বলেন, শ্রীকান্ত
নন্দী গত ১৪ জানুয়ারি এই শাখায় যোগ দেন। এরপর তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়। ঈদের
আগে তিনি আকবরের কাছে টাকা ধার চান। তখন আকবর তাঁকে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা
দেন। কিন্তু এরপর থেকে শ্রীকান্তের খোঁজ পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় গত শনিবার
চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি জিডি করেছেন আকবর।
আরেক
গ্রাহক কচুয়ার আশ্রাফুর এলাকার দলিল লেখক মারুফ বলেন, ব্যাংক ব্যবস্থাপক
শ্রীকান্ত বেশি মুনাফা দেওয়ার কথা বলে তাঁর কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা নেন। টাকা
না দেওয়ায় ঈদের আগে তাঁর সঙ্গে দুই দফা বৈঠক হয়। তিনি বলেছিলেন, ঈদের পর
টাকা ফেরত দেবেন; কিন্তু এখন আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
ওকে
এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী কাউছার হোসেনের
পক্ষে জাহিদ হাসান নিরু বলেন, ঈদের আগে তাঁরা শ্রীকান্ত নন্দীকে ২ কোটি ৮৪
লাখ ৪৮ হাজার ৫৬২ টাকার একটি চেকে টাকা উত্তোলন করে ওকে এন্টারপ্রাইজের
অ্যাকাউন্টে জমা দিতে বলেন। তিনি ওই টাকা তুলেছেন ঠিকই, কিন্তু
প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে জমা দেননি। গতকাল শ্রীকান্তের বিরুদ্ধে চাঁদপুর
সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন তাঁরা।
শ্রীকান্ত নন্দী ৪ এপ্রিল
বিকেলের পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন জানিয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় জিডি করেছেন
বর্তমানে দায়িত্বরত ব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবির। তিনি ওই জিডিতে উল্লেখ
করেন, শ্রীকান্ত নন্দীর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কয়েকবার ফোন করেও তাঁকে
পাওয়া যায়নি। গতকাল তিনি বলেন, ‘ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে আমাকে এই শাখার
দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আজকেই যোগ দিয়েছি। আগের ব্যবস্থাপক শ্রীকান্তের খোঁজ
না পেয়ে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছি এবং থানায় জিডি
করা হয়েছে।’
চাঁদপুর নতুন বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।’