গাইবান্ধার সাঘাটায় দরপত্র ছাড়াই পুলিশের সহায়তায় ২৫ থেকে ত্রিশ লাখ
টাকার গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা শাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে। এ
বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে শাখাওয়াত হোসেন মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি
দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আলম মিয়া ও লুৎফর রহমান।
জানতে চাইলে থানার ওসি মো. তাজুল বলেন, জেলা পরিষদের সদস্য শাখাওয়াত
হোসেন গাছ কাটার বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছেন। তাই পুলিশ তাঁকে সহযোগিতা করছে।
দরপত্রের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসনের।
তবে অভিযুক্ত জুমারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাইবান্ধা
জেলা পরিষদের সদস্য শাখাওয়াত হোসেনের দাবি, যারা গাছগুলো লাগিয়েছিলেন
তারাই কেটে নিচ্ছেন। তিনি তাদের তালিকা তৈরি করেছেন। শিগগিরই মামলা করবেন।
পুলিশের সহায়তায় গাছ কাটার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান। এক
পর্যায়ে বলেন, এ বিষয়ে কিছু বলার নেই। তদন্তে সম্পৃক্ততা পেলে যে শাস্তি
দেওয়া হবে মেনে নেব।
১৫ বছর আগে কেয়ার প্রজেক্টের আওতায় সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া-জুমারবাড়ী
সড়কের দু’পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায় মেহগনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির
সহস্রাধিক গাছ লাগানো হয়। সম্প্রতি ঈদের ছুটির সুযোগে হাফানিয়া গ্রাম থেকে
বাউলিয়া গ্রাম পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কে পাঁচ শতাধিক গাছ কেটে ফেলা
হয়েছে। গাছ কাটায় নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, জেলা পরিষদ সদস্য শাখাওয়াত
হোসেনের নির্দেশে গাছগুলো কাটছেন তারা। এদিকে প্রকাশ্যে গাছ কেটে সাবাড় করা
হলেও জানেন না উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। অনুমতি নেওয়া হয়নি বন বিভাগেরও।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোঁজ নিয়ে গাছ কাটার ক্ষেত্রে কোনো আইনি প্রক্রিয়ার
অস্তিত্বও মেলেনি। এর পরও আওয়ামী লীগ নেতা শাখাওয়াত হোসেন গাছ কাটা চালিয়ে
যাচ্ছেন। এমনকি তিনি ব্যক্তিমালিকানার গাছও জোর করে কেটে নিচ্ছেন বলে
অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাঠ ব্যবসায়ী জানান, প্রতিটি গাছের
মূল্য ৫ থেকে সাত হাজার টাকা।
উপজেলা বন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, ‘গাছগুলো বন বিভাগের নয়। তাই এ
নিয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে গাছ কাটতে হলে একটি কমিটি করতে হয়। সেটি
হয়েছে কিনা বলতে পারব না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসাহাক আলী বলেন, সড়কটি জেলা পরিষদের। তবুও
গাছ কাটা বন্ধে ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। জেলা পরিষদের সঙ্গেও কথা বলব।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে।
গাছ কাটার বিষয়ে এখনও কেউ জানায়নি বলে জানান গাইবান্ধা সড়ক ও জনপদ বিভাগের
উপসহকারী প্রকৌশলী সোয়াইবুর রহমান। তবে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের
আশ্বাস দিয়েছেন এ কর্মকর্তা।