Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
এডিপি বাস্তবায়নে লক্ষ্যপূরণে শঙ্কা [ অনলাইন ] 24/04/2024
এডিপি বাস্তবায়নে লক্ষ্যপূরণে শঙ্কা
চলমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব পড়েছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৪২ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর টাকার হিসেবে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার ৬১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অর্থবছরের বাকি আছে আর মাত্র তিন মাস। এ সময়ের মধ্যে শতাংশের হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে ৫৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর টাকার হিসেবে ব্যয় করতে হবে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৭৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এ সময়ের মধ্যে শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। মঙ্গলবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে এ চিত্র পাওয়া যায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থবছরের ছয় মাসে যেখানে অর্ধেকও বাস্তবায়ন হয়নি সেখানে মাত্র তিন মাসে কী করে ৫৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে জবাবদিহিতার আওতায় না আনলে শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন কোনো অর্থবছরেই সম্ভব হবে না।

আইএমইডির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি এডিপি বাস্তবায়ন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির চলতি অর্থবছরে একটি প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ ছিল ৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা। ৯ মাসে তারা ব্যয় করেছে ৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যা শতাংশের হিসেবে ৯৬.৮৫ শতাংশ।

শতাংশের হিসেবে বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকলেও টাকা খরচে এগিয়ে রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বিভাগটির ২৬৩টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৪২ হাজার ৯৫৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা। অর্থবছরের ৯ মাসে ব্যয় হয়েছে ১৯ হাজার ৭৭৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। যা শতাংশের হিসেবে ৪৬ দশমিক ০৩ শতাংশ।

এডিপি বাস্তবায়নে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। চলতি অর্থবছরে তাদের বরাদ্দ ছিল ২৪২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ৯ মাসে ব্যয় করেছে ৩৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা। যা শতাংশের হিসেবে ১৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ। বিদ্যুৎ বিভাগের এডিপি বাস্তবায়নের হার ৬৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ। বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ৬৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে ১৯ হাজার ২০২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের বরাদ্দ ছিল ২৭ হাজার ৮০৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ব্যয় হয়েছে ১১ হাজার ১৭৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। শতাংশের হিসেবে ৪০ দশমিক ১৯ শতাংশ।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১৩ হাজার ১১৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ৯ মাসে ব্যয় করেছে ৭ হাজার ৮১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। শতাংশের হিসেবে ৫৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল ১২ হাজার ১৯২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে ৪ হাজার ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন হার ৩২.৯৯ শতাংশ।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন হার ৫০.৯২ শতাংশ। তাদের বরাদ্দ ছিল ৪৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। বিপরীতে ৯ মাসে ব্যয় করেছে ২৩৪ কোটি ৬ লাখ টাকা।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন হার ৩৭.১৪ শতাংশ। বরাদ্দ ছিল ৩৯০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ব্যয় করেছে ১৪৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বরাদ্দ ছিল ৩৮৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। বিপরীতে ব্যয় করেছে ৮৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন হার ২১.৭১ শতাংশ।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৫টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৩২৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ৯ মাসে বাস্তবায়ন করেছে ১৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। যা শতাংশের হিসেবে ২২ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

আইএমইডির তিনটি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১৯৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ৯ মাসে ব্যয় করেছে ১১৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন হার ৬০.৩৩ শতাংশ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন হার ২৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। পরিকল্পনা বিভাগের বাস্তবায়ন হার ৩৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। ইআরডির ৭১ দশমিক ৬৭ শতাংশ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ৩১ দশমিক ৬৭ শতাংশ, অর্থ বিভাগের ৫০ দশমিক ০৮ শতাংশ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৪৯ দশমিক ৯১ শতাংশ, সেতু বিভাগের ৪৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে। আইএমইডির তথ্য চলছে, একক মাস হিসেবে শুধু মার্চে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি। ২০২২-২৩ অর্থবছরের মার্চ মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৮.৬৫ শতাংশ।

এ ছাড়া জুলাই থেকে মার্চ মেয়াদে এডিপি বাস্তবায়নের হার গত অর্থবছরের তুলনায় ভালো। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৪১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। তবে তার আগের অর্থবছরে এ হার ছিল ৪৫ দশমিক ০৫ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ৪১ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ৪৫ দশমিক ০৮ শতাংশ।

ধীরগতির বিষয়ে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি অনেক ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালকের আন্তরিক তৎপরতা ও দক্ষতার ওপর নির্ভরশীল। একাধিক প্রকল্পে একজন পিডি, পিডিদের বদলি, প্রকল্পের কাক্সিক্ষত বাস্তবায়ন অনেক সময় সম্ভব হয় না। তিনি আরও বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হচ্ছে।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved