এ
বিষয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার
সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি জানতে পেরেছি। দুদক ও আইনশৃঙ্খলা
বাহিনী বিষয়টি দেখছে। কোথাকার টাকা, কীভাবে লেনদেন হলো সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে
সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাবনায় ঘুষের টাকাসহ পাউবো দুই প্রকৌশলীকে আটক করেছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ (মঙ্গলবার) ঠিকাদার ও
কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডে অনুসন্ধানের কাজে যান পাবনার কয়েকজন সাংবাদিক।
তাঁরা উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাসুদ রানার কক্ষে গেলে ওই কক্ষ ভেতর থেকে বন্ধ
পাওয়া যায়। কয়েকবার দরজার কড়া নাড়ার পর মাসুদ রানা দরজা খোলেন। ভেতরে
ঠিকাদার ও স্থানীয় কমিশনার আরিফুজ্জামান রাজিব, ঠিকাদার কনক ও উপবিভাগীয়
প্রকৌশলী মোশাররফসহ কয়েকজন ছিলেন এবং টেবিলে বিপুল পরিমাণ টাকা পড়ে থাকতে
দেখা যায়।
এই সময় ঠিকাদারের সঙ্গে সরকারি অফিসের বন্ধ কক্ষে কিসের
লেনদেন হচ্ছে জানতে চান সাংবাদিকেরা। কিন্তু কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি
তাঁরা। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় পুলিশকে জানান সাংবাদিকেরা। পুলিশ
পৌঁছানোর আগেই সেখান থেকে পালিয়ে যান দুই ঠিকাদার। পরে পুলিশ এসে দুই
প্রকৌশলীকে আটক করে এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) খবর দেয়। দিনভর
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন দুদক ও
পুলিশ। সন্ধ্যার পর তাঁদের আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
আনিছুর
রহমান মারুফ নামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক ঠিকাদার বলেন, ‘প্রত্যেক কাজে
কর্মকর্তাদের বিশেষ কমিশন দিতে হয়। কাজের শুরু থেকে ধাপে ধাপে এসব টাকা
দিতে হয়। না দেওয়া হলে কাজের বিল আটকে দেওয়া হয়। এসব কর্মকর্তাদের
দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়া উচিত। যাতে অন্য কেউ এমন কাজ করার সাহস না পায়।’
পাবনায় ঘুষের টাকাসহ পাউবো দুই প্রকৌশলীকে আটক করেছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
তবে তানভীর আহমেদ দীপ নামে আরেক ঠিকাদার বলেন, ‘আটক দুজন ষড়যন্ত্রের শিকার
হতে পারেন। কারণ, তাঁরা মাত্র কয়েক মাস হলো এখানে যোগদান করেছেন। এত দ্রুত
এসব টাকা লেনদেন করবে এটা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে।’ কোনো ঠিকাদার তাঁদের কাছ
থেকে সুবিধামতো কাজ (প্রকল্প) না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁদের ফাঁসিয়েছে বলে
ধারণা তাঁর।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী
আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈকত ভাই আমাদের
ফোন করে জানান যে সেখানে ঘুষের টাকা লেনদেন হচ্ছে। এমন খবর পেয়ে আমরা
সেখানে গিয়ে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকাসহ দুই উপবিভাগীয় প্রকৌশলীকে আটক করে থানায়
নিয়ে এসেছি। এখন তাঁদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা
পেলে দুই প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ
বিষয়ে দুদক বিষয়টি অনুসন্ধান করবে।’