Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
বৈদেশি মুদ্রার লক্ষ্য পূরণে বারবার ব্যার্থতা [ অনলাইন ] 25/04/2024
বৈদেশি মুদ্রার লক্ষ্য পূরণে বারবার ব্যার্থতা
মাত্র আড়াই বছর আগে রিজার্ভ ছিল ৪৮ দশমিক শূণ্য ৬ বিলিয়ন। আর বর্তমানে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক শূণ্য ৭ বিলিয়ন। যা দিয়ে তিনমাসের পণ্য আমদানি করাও সম্ভব না। যদিও আন্তর্জাতিক মানদন্ড হিসাবে কোন দেশের রিজার্ভ দিয়ে কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা থাকা জরুরি। এমন পরিস্থিতিতে রিজার্ভ নিয়ে উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। শুধু তাই না, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফের) ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণ ছাড়ে রিজার্ভের বেধে দেওয়া লক্ষ্য পূরণে বারবার ব্যার্থ হচ্ছে। এমন সংকটময় পরিস্থিতি ঋনের শর্তসমুহ নিয়ে আলোচনা করতে দাতাসংস্থাটির বিশেষ দল আজ আসছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, গতকাল গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের পরামর্শে বিপিএম-৬ অনুযায়ী হিসাবে তা ১৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। এটি অবশ্য প্রকৃত রিজার্ভ নয়। আর প্রকৃত ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ বের করতে বিপিএম ম্যানুয়াল থেকে চলতি দায় বাবাদ আকু বিল, বৈদেশিক পাওনা, প্রকল্প বকেয়া বিল, এবং বিশেষ পরিপূরক মুদ্রার (এসডিআর) বকেয়া হিসাবে ৫ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার বাদ দিতে হবে। সেই হিসাবে ব্যয়যোগ্য রিজার্ব দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক শূণ্য ৭ বিলিয়ন ডলার।

রাজধানীর ওষুধ আমদানিকারক রমজান মিয়া বলেন, রিজার্ভ নিয়ে মারাত্মক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ডলার পাচ্ছি না। আবার রিজার্ভ দিয়ে তিনমাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে না পারার বিষয়টি বেদেশি ব্যাংক জানতে পারলে তো এলসি খুলতে চাইবে না। কোন কোন ব্যাঙক বাড়তি চার্জ নিবে তখন ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।

বাংরাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত জানুয়ারিতে, ফেব্রুয়ারি মার্চে গড় আমদানি ব্যয় ছিল যথাক্রমে ৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ৫ দশমিক ২০ বিলিয়ন এবং মার্চে ৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট আট মাসে পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে ৪৪ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। গড় হিসাবে মাসে তা ৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর বলেন, আইএমএফের দল এবার রাজস্ব নীতিতে গুরুত্ব দিবে। আর ব্যাংক সংস্কারের নামে ব্যাংক একীভুতকরণ নিয়ে আপত্তি তুলতেপারে। এছাড়া রিজার্ভ কেন বাড়ছে না, কেন লক্ষ্য পুরণ হচ্ছে না এবং সামনে কিভাবে রিজার্ভ বৃদ্ধি করা যায় কার বিশদ পরিকল্পনা চাইতে পারে। এমনকি ঋণ কর্মসূচির সঙ্গে কী ধরনের নীতি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সেটাও দেখবে তারা। পাশাপাশি আইএমএফের পাশাপাশি অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকেও বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তেল-গ্যাস আমদানির খরচ মেটাতেই তা শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে রিজার্ভ আর বাড়ছে না।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে। একই সময়ে বাণিজ্যিক কিছু ব্যাংক থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের মতো কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া আরও ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার সোয়াপ পদ্ধতির মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে বন্ধক রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার এবং তার আগের অর্থবছরে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছিল।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, নীতিগত ভুলের কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে আর কোন পথে নেই। জরুরি এলসি নিষ্পত্তির জন্য বাধ্য হয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে এখনও। তাই ডলারের সরবরাহ বাড়াতে পদক্ষেপ খুব একটা কার্যকর হচ্ছে তা দৃশমান না। রিজার্ভ আন্তর্জাতিক মানদন্ডের নিচে গেলে আমদানিতে ঝামেল হতে পারে।’

এদিকে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের দুই কিস্তির অর্থ পাওয়ার পর তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়ার কথা। অথচ বাংলাদেশের নিট রিজার্ভের উন্নতি হয়নি। এমন বাস্তবতা সামনে রেখে ঋণের শর্ত পর্যালোচনা করতে আজ আইএমএফের একটি বিশেষ দল ঢাকায় আসছে। বৈঠক চলবে আগামী ৮ মে পর্যন্ত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আইএমএফের শর্ত দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে এনেছে। তার না থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু করতে পারত না। বিশেষ করে ব্যাংক খাতের সংস্কার ও সুশাসন তাদে রকথা মত হয়েছে। রিজার্ভ রক্ষা এবং ব্যাংক একীভুতকে আইএমফ গুরুত্ব দিবে এমন আভাস দিয়েছেন। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নেক কিছুতে কড়াকড়ি করেছে বলে মনে হয়।

ঢাকার মতিঝিলে ডলার কিন্তে আসা গ্রাহক নাজমুল হোসেন বলেন, ‘পাচটি ব্যাংকে ডলার নেই। রিজার্ভ নাকি শেষের পথে কয়েকজন ব্যাঙকার ব্যাঙ্গ করে জানিয়েছেন। এটা শোনার পর মাথায় বাজ পড়েছে। দেশে রিজার্ভ না থাকলে তো শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে।’

আইএমএফ জানায়, ঋণের শর্ত হিসাবে রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা কমাতে আইএমএফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে যে অব্যাহতি চেয়েছিল বাংলাদেশ, সংস্থাটি তা অনুমোদন করেই দ্বিতীয় কিস্ত ছাড় করেছিল। শর্ত অনুযায়ী ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ সংরক্ষণের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত করা হয়েছিল ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার করা হয়। তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকৃত রিজার্ভ ছিল ১৬ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। আর মার্চ শেষে প্রকৃত রিজার্ভ থাকার কথা ১৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার, কিন্তু বাস্তবে তা ছিল প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের জুনে ২৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তখন প্রকৃত রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক যতেষ্ঠ রিজার্ভ রয়েছে দাবি করে বলেন, ‘আমাদের রিজার্ভ নিয়ে কোন দুশ্চিন্তা নেই। আন্তর্জাতিক নৈতিক মানদন্ডের চেয়ে অতিরিক্ত রিজার্ভ রয়েছে।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ
• নাওয়ার প্রোপার্টিজের গ্রাহকদের হোম লোন সুবিধা দিবে সাউথইস্ট ব্যাংক
• সিটি ব্যাংক ও পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর
• ন্যাশনাল ব্যাংকের ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণ কর্মশালা
• নাওয়ার প্রোপার্টিজের গ্রাহকদের হোম লোন সুবিধা দিবে সাউথইস্ট ব্যাংক
• এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ১৮৩তম সভা
• শ্রমজীবী মানুষের মাঝে ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার ক্লাবের পানি ও স্যালাইন বিতরণ
• ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ‘রিফ্রেশার্স ট্রেনিং কোর্স’
• ন্যাশনাল ব্যাংকের ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণ কর্মশালা
• এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ১৮৩তম সভা
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved