Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
রাশিয়ান কার্গো নামাতে ২৫০০ কোটির প্রকল্প [ অনলাইন ] 26/04/2024
রাশিয়ান কার্গো নামাতে ২৫০০ কোটির প্রকল্প

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জ্বালানি আসার মধ্য দিয়ে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। রূপপুর কেন্দ্রের দুটি ইউনিটের মধ্যে প্রথমটির জন্য রাশিয়া থেকে পাঠানো জ্বালানিবাহী বিমান রাজধানীর হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে খালাসের পর তা রূপপুরে পাঠানো হয়। এর জন্য বিশেষ ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয়েছে ঝুঁকি এড়ানোর জন্য। দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও এগিয়ে চলেছে। আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়নে রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে। এই সবকিছু বিবেচনা করে রাশিয়া থেকে আসা বিমান সরাসরি রাজশাহী বিমানবন্দরে অবতরণ করানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে জ্বালানি ও সরঞ্জাম রূপপুরে পৌঁছানো সহজ ও ঝুঁকিমুক্ত হয়।

রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরে কার্গো নামানোর এ পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইতিমধ্যে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সরকারের হাইকমান্ডের কাছে। হাইকমান্ডও বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে। প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে। নির্দেশনার আলোকে চলতি বছর ২০ মার্চ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় একটি চিঠি পাঠিয়েছে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে। বেবিচক চেয়ারম্যান ৭ এপ্রিল বিষয়টি আমলে নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে দেশ রূপান্তরকে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে জানান, রাজশাহী বিমানবন্দর বর্তমানে যে অবস্থায় আছে তাতে কার্গো বিমান অবতরণ করার সক্ষমতা নেই। একটি বিশাল আকৃতির কার্গো বিমান অবতরণ করতে যে পরিমাণ রানওয়ের দরকার তা নেই সেখানে। বর্তমানে বিমানবন্দরটি রানওয়ের চওড়া ১০০ ফুট। আর দৈর্ঘ্যে ৬ হাজার ফুট। কার্গো বিমানের জন্য দরকার হবে অন্তত দেড়শ ফুট চওড়া রানওয়ে। আর দৈর্ঘ্য লাগবে ৯ হাজার ফুটের মতো। তাছাড়া বাধ্যতামূলকভাবে কার্গো ভবনও থাকতে হবে। সবদিক বিবেচনা করে শাহ মখদুম বিমানবন্দরকে কার্গো বিমান অবতরণ উপযোগী করতে বেবিচক একটি প্রাথমিক বাজেট তৈরি করেছে। ওই বাজেটের পরিমাণ হবে অন্তত দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা। এজন্য বিমানবন্দরের আশপাশে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। বিষয়টি সমাধান করতে আগামী সপ্তাহে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠক শেষে বিমানন্দরের বর্ধিত অংশের একটি প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি পাঠাবে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক)।

জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র আমাদের স্বপ্ন। রাশিয়া আমাদের নানাভাবে সহায়তা করে আসছে। শাহ মখদুমের সংস্কারের জন্য প্রকল্পটি চালু হলে দেশের জন্য কল্যাণকর হবে। রাশিয়ার থেকে সরঞ্জাম নিয়ে আসছে কার্গো বিমানে। শাহজালালে অবতরণ করে সড়কপথে নেওয়া হচ্ছে সেগুলো। কিছুদিন আগে মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে আমাদের কাছে। রাজশাহী বিমানবন্দরে রাশিয়ার কার্গো বিমান নামানোর কথা বলা হয়েছে।’

তারা কাজ শুরু করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বিমানবন্দরটি রানওয়ের সক্ষমতা কম থাকায় তা বাড়াতে হবে। কীভাবে বিমানবন্দরটি সংস্কার করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত সময়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেবিচকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য রাশিয়ার কার্গো বিমান রাজশাহী বিমানবন্দরে নামবে তার সক্ষমতা রানওয়ের নেই। এ কারণে রানওয়ে বাড়ানোসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি নির্মাণ করতে হবে। এজন্য দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি খরচ হবে। আগামী সপ্তাহে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক হবে। এ বিষয়ে সরকার ইতিবাচক। তিনি বলেন, রাশিয়ার কার্গো বিমান শাহজালালে অবতরণ করে আসছে। সড়কপথে সরঞ্জাম রূপপুর পাঠানো হয়। বিষয়টি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ থাকে এবং সময় অনেক বেশি লাগছে। রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে রূপপুর যেতে সময় অনেক কম লাগব এবং কোনো সমস্যা হবে না। প্রকল্পটি একনেকে পাস হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে এবং এক বছরের মধ্যেই কাজ শেষ করা হবে।

রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও শেষের দিকে। এরপর দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও সেখানে করা হচ্ছে।

প্রথম প্রকল্পটি রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরমাণু শক্তি কমিশন বাস্তবায়ন করছে। দ্বিতীয় প্রকল্প নির্মাণেও রাশিয়া সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে।

প্রথম প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রাশিয়ার রোসাটম করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে ২০২৪ সালে এবং এর পরের বছর দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার কথা রয়েছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় গত বছর ২৯ অক্টোবর ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান পৌঁছানোর পর এটি পারমাণবিক স্থাপনায় উন্নীত হয়েছে। পরে আরও একাধিক চালান রাশিয়া থেকে দেশে এসেছে, যা দিয়ে এক বছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। সাতটি চালানোর পর ধাপে ধাপে আসতে থাকবে পারমাণবিক জ্বালানি।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন সূত্র জানায়, প্রথমবার জ্বালানি লোড করার পর তা দিয়ে একটানা ১২ মাস পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এরপর প্রতি বছরে একবার করে মোট জ্বালানির এক-তৃতীয়াংশ করে জ্বালানি পরিবর্তনের পর নতুন জ্বালানি লোড করা হবে। তবে তিন বছর পর ১৮ মাস অন্তর নিয়ম মেনে জ্বালানি পরিবর্তন করা হবে। রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরমাণু শক্তি কমিশন বাস্তবায়ন করছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট করে মোট ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিড যোগ হওয়ার কথা রয়েছে।

News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• প্রতারণার শিকার বাংলাদেশি শ্রমিকরা পাচ্ছেন আড়াই কোটি টাকা
• পর্যটক, ছাত্র ও বিজনেস ভিসায় বেনাপোল দিয়ে ভারতে যেতে নিষেধাজ্ঞা
• কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের আদলে সাজবে পতেঙ্গা
• পাইলটের দক্ষতায় বারবার রক্ষা
• ৮ মাসের বেতনের সমান বোনাস দিচ্ছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved