স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সরকারের সক্রিয় সহযোগী হিসেবে যেসব রাষ্ট্রীয়
প্রতিষ্ঠান কাজ করে চলছে, তার মধ্যে অন্যতম রাষ্ট্রমালিকানাধীন সর্ববৃহৎ
ব্যাংক সোনালী ব্যাংক পিএলসি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন
এবং অ্যাপভিত্তিক সেবা চালুর মাধ্যমে ব্যাংকটি স্মার্ট ব্যাংকিংয়ে অনেকদূর
এগিয়েছে। দেশব্যাপী ১ হাজার ২৩২টি শাখায় বিস্তৃত পুরোপুরি অনলাইননির্ভর
সেবাদানকারী ব্যাংকটি স্মার্ট ইকোনমি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করছে। ব্যাংকটির চালু করা বিভিন্ন অ্যাপ গ্রাহকের কাছে ব্যাংকসেবাকে আরও
সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে তুলেছে। সোনালী ব্যাংকের বিদ্যমান সেবার মধ্যে বিপুল
গ্রাহক সন্তুষ্টি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে সোনালী ই-ওয়ালেট অ্যাপ।
বর্তমানে এই অ্যাপের গ্রাহকসংখ্যা ৭ লাখেরও বেশি। দৈনিক লেনদেনের সংখ্যা
গড়ে ৫৩ হাজার।
ই-ওয়ালেট অ্যাপ ব্যবহারের ফলে এখন ঘরে বসেই সোনালী ব্যাংকের গ্রাহকরা
পাচ্ছেন প্রায় সব সেবা। এই অ্যাপ ব্যবহার করে ২৪ ঘণ্টা গ্রাহক ব্যাংকের এক
হিসাব থেকে অন্য হিসেবে টাকা স্থানান্তর, সোনালী ব্যাংকের হিসাব থেকে অন্য
যেকোনো ব্যাংকের হিসাবে ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে টাকা স্থানান্তর, মোবাইল ফোনে
ব্যালেন্স রিচার্জ, অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স চেক ও স্টেটমেন্ট চেক করা,
এনপিএসবি, বিইএফটিএন করে টাকা পাঠানো, বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ,
ডিপিডিসি, বিটিসিএল ও ডেসকোর বিল পরিশোধ, ক্রেডিট কার্ডের বিল এবং বিভিন্ন
মেয়াদি ডিপিএসের মাসিক কিস্তি জমার সুবিধা। এ ছাড়া এই অ্যাপ ব্যবহার করে
সঞ্চয়ী হিসাব ও ক্রেডিট কার্ডের টাকা বিকাশ মোবাইল ফাইন্যান্সিং সার্ভিস
হিসাবেও টাকা জমা করা যায়।
ই-ওয়ালেট ব্যবহারের মাধ্যমে কিউআর কোড স্ক্যান করে ব্যাংকের চেক বই ও
স্বাক্ষর যাচাই করা ছাড়াই গ্রাহক যেকোনো শাখা থেকে তাৎক্ষণিক অর্থ উত্তোলন
করতে পারেন। এর ফলে গ্রাহক এখন খুব সহজেই তার সুবিধামতো স্থান থেকে অর্থ
উত্তোলন করতে পারছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ই-ওয়ালেট অ্যাপে যুক্ত হয়েছে আরও কিছু নতুন সেবা। এর
মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের গ্রাহকরা আরও বেশি সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
বিদ্যমান ফিচারের পাশাপাশি এই অ্যাপের মাধ্যমে এখন গ্রাহকরা ঘরে বসেই
ডিপিএস ও এফডিআর হিসাব খুলতে পারবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ঋণের কিস্তি পরিশোধ
ছাড়াও অ্যাপ থেকেই ডেবিট কার্ডের বিভিন্ন সেবা, চেক বইয়ের চাহিদা ও ট্যাক্স
রিটার্ন সিøপ আপলোড করতে পারবেন।
স্মার্ট ব্যাংকিংয়ে সোনালী ব্যাংকের আরেকটি অ্যাপ সোনালী ই-সেবা। এই
অ্যাপের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের নিজস্ব পেমেন্ট গেটওয়ে সোনালী ই-সেবার
মাধ্যমে বর্তমানে বেপজা, বিডা, এমআরএ, সাধারণ বীমা, বিভিন্ন পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল-কলেজসহ ৮৬২টি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের ফি-চার্জেস
অনলাইনে তাৎক্ষণিকভাবে জমা দেওয়া যায়। অ্যাপসভিত্তিক সেবার সর্বশেষ সংযোজন
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসীদের জন্য চালুকৃত সোনালী এক্সচেঞ্জ মোবাইল অ্যাপ। এই
অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিনা খরচে দ্রুততম ও
নিরাপদভাবে রেমিট্যান্স পাঠানো, যেকোনো ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল
ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে তাৎক্ষণিকভাবে রেমিট্যান্স পাঠানো যাবে।
এ ছাড়া সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোনালী ব্যাংকই প্রথমবারের মতো
সার্বক্ষণিক (২৪*৭) কল সেন্টার সেবা চালু করেছে। এখানে গ্রাহক দেশ ও বিদেশ
হতে ব্যাংকের বিভিন্ন সেবা, আমানত, ঋণ ও কার্ড সেবা বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে
যেকোনো জিজ্ঞাসা ও সমস্যা বিষয়ে সার্বক্ষণিক (২৪/৭) তথ্য ও সেবা পাচ্ছেন।
সময়ের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সোনালী ব্যাংক এসব সেবা চালু করেছে।
আগামীদিনে স্মার্ট ইকোনমি প্রতিষ্ঠায় স্মার্ট ব্যাংকিংয়ে সোনালী ব্যাংক
নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দেশে স্মার্ট ইকোনমি প্রতিষ্ঠার
ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক এখন তার সবটুকু সক্ষমতা দিয়ে তৃণমূল পর্যন্ত সব
মানুষের কাছে ব্যাংকসেবার সুফল পৌঁছে দিতে কাজ করছে।
সরকারি ব্যাংকগুলো এখন আর কোনোভাবেই বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ে পিছিয়ে নেই।
প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট ইকোনমি প্রতিষ্ঠায় সোনালী ব্যাংকের যে
অগ্রগতি তা আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময়
ব্যাংকংসেবায় সোনালী ব্যাংক সব সময় অগ্রগামী। জনগণের দোরগোড়ায় ব্যাংকংসেবা
পৌঁছে দিতে সোনালী ব্যাংক প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্মার্ট উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে
চলেছে।