Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
পাপুলের শ্যালিকাকে বাঁচাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন কর কর্মকর্তা [ অনলাইন ] 30/04/2024
পাপুলের শ্যালিকাকে বাঁচাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন কর কর্মকর্তা
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সহিদুল ইসলাম পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানকে বাঁচাতে গিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন এক কর কর্মকর্তা। গতকাল সোমবার ওই কর কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যাদের মামলার আসামি করা হচ্ছে তারা হলেন ঢাকা কর অঞ্চল-৮ অফিসের সার্কেল-১৬৫-এর উপ-কর কমিশনার খন্দকার মো. হাসানুল ইসলাম, কর অফিসের উচ্চমান সহকারী (বর্তমানে পিআরএলে) হিরেশ লাল বর্মণ ও জেসমিন প্রধান। ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে জেসমিন প্রধানের আয়কর রিটার্ন নথি ঘষামাজা করে পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনের অভিযোগে এ মামলা হচ্ছে।

সাবেক সংসদ সদস্য পাপুলের অবৈধভাবে অর্জিত টাকায় বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হন তার শ্যালিকা জেসমিন। তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে পৃথক কর সার্কেলে দুটি টিআইএন (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) খোলেন। এরপর ২০২১ সালে এক বছরে প্রস্তুত করেন পাঁচ করবর্ষের রিটার্ন দাখিলের নথি। এ ছাড়া অডিট প্রতিবেদন ও ব্যাংক বিবরণী ঘষামাজা করে তৈরি করেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় জেসমিন ও কর অফিসের দুজনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশসহ কমিশনে অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দেন দুদকের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান। কমিশন প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই শেষে মামলার অনুমোদন দিয়েছে। এ বিষয়ে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, জেসমিন প্রধানের আয়কর রিটার্নের তথ্য ঘষামাজা করে তথ্য গোপনের অভিযোগে ঢাকা কর অঞ্চল-৮ অফিসের সার্কেল-১৬৫-এর উপ-কর কমিশনারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। শিগগিরই মামলাটি করা হবে।

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, জেসমিন প্রধান ঢাকা কর অঞ্চল-৮ অফিসের সার্কেল-১৬৫-এর কর্মচারীদের ঘুষ দিয়ে যোগসাজশের মাধ্যমে ২০১৬-১৭ করবর্ষ থেকে ২০২০-২১ করবর্ষ পর্যন্ত রিটার্ন একই দিনে দাখিল করেন। ওই পাঁচ বছরের আয়কর রিটার্নের রেকর্ড ঘেঁটে দেখা যায়, তার মোট আয়ের কলামে ঘষামাজা রয়েছে। এ ছাড়া ৭৪ ধারার কলামে, ব্যবসায় মূলধন বিনিয়োগ কলামে ঘষামাজা, হাতে নগদ ও ব্যাংক স্থিতি কলামে, রিটার্ন রেজিস্টারে নিট সম্পদ কলামে ভিন্ন হাতের লেখায় বিভিন্ন সংখ্যা বসানো ছাড়াও রিটার্ন রেজিস্টারে পারিবারিক ব্যয়ে আয়কর রিটার্নে ভিন্নতা পাওয়া যায়। করদাতা জেসমিন প্রধান ওই পাঁচ করবর্ষ পর্যন্ত সার্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে দাখিল করা আয়কর রিটার্নের সঙ্গে যেসব ব্যাংক বিবরণী জমা দিয়েছেন তার প্রতিটির জেনারেটেড ও প্রিন্টেড তারিখ ২০২০ সাল। এ ছাড়া তার আয়কর রিটার্নের সঙ্গে দাখিল করা অডিট প্রতিবেদনটিও জাল করেছেন। পাঁচ বছরের অডিট প্রতিবেদনগুলো পৃথক থাকার কথা থাকলেও সেগুলো ২০২০ সালে প্রস্তুত করা হয়েছে।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করদাতা জেসমিন প্রধানের ২০১৬-১৭ করবর্ষে ৩,৫০,০০০; ২০১৭-১৮ করবর্ষে ৩,৫০,০০০, ২০১৮-১৯ করবর্ষে ৪,৫০,০০০ এবং ২০১৯-২০ করবর্ষে ৪,৫০,০০০ টাকা মোট আয় লিপিবদ্ধ করা রয়েছে। কিন্তু তার আয়কর রিটার্নে ২০১৬-১৭ করবর্ষে মোট আয় ১৩,৫০,০০০; ২০১৭-১৮ করবর্ষে ২১,৫০,০০০; ২০১৮-১৯ করবর্ষে ৩৬,৪৫,০০০ এবং ২০১৯-২০ করবর্ষে ৪৩,৭৫,০০০ টাকা উল্লেখ রয়েছে। এই করদাতার আয়কর রিটার্নের সঙ্গে স্টক রেজিস্টার এবং মাসিক কর নির্ধারণী রেজিস্টারের কোনো মিল পাওয়া যায়নি; অর্থাৎ মূল রিটার্নগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে। জেসমিন প্রধান কর অঞ্চল-৮-এর সার্কেল-১৬৫-এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাধ্যমে রিটার্ন রেজিস্ট্রার ঘষামাজা করে মোট আয়, মোট সম্পদ, নিট সম্পদ, পারিবারিক ব্যয় ইত্যাদি পরিবর্তন করেন। এ ঘটনার সঙ্গে কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার খন্দকার মো. হাসানুল ইসলাম ও উচ্চমান সহকারী (বর্তমানে পিআরএলে) হিরেশ লাল বর্মণ এবং করদাতা জেসমিন প্রধান পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন পরিবর্তনসহ রেজিস্ট্রার ঘষামাজা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জেসমিন প্রধান, তার ভগ্নিপতি সাবেক এমপি পাপুল, বোন সেলিনা ইসলাম ও ভাগনি ওয়াফা ইসলামকে আসামি করে মামলা করে দুদক। মামলার এজাহারে বলা হয়, জেসমিন প্রধান ২ কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। জেসমিন প্রধান একটি সাধারণ পরিবারের মেয়ে। অথচ সাধারণ পরিবারের সন্তান জেসমিন প্রধান এখন বিত্তশালী। বাড়ি, গাড়ি, আলিশান ফ্ল্যাট সবকিছুই আছে তার। ২৩ বছর বয়সী জেসমিনের নিজস্ব কোনো আয়ের উৎস নেই। অথচ সাত বছরের ব্যবধানে তিনি বনে গেছেন শত শত কোটি টাকার মালিক। তার ‘লীলাবালি’ নামে একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জেসমিন প্রধান ২০১২ থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১৪৮ কোটি ৪১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৬১ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় মামলাটি করা হয়।

২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন কাজী সহিদুল ইসলাম পাপুল। পরে তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করিয়ে আনেন। অর্থ ও মানব পাচার এবং ঘুষ প্রদানের অভিযোগে ২০২০ সালের জুন মাসে কুয়েতে গ্রেপ্তার হন পাপুল। ওই মামলার বিচার শেষে ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয় কুয়েতের একটি আদালত। কুয়েতের রায়ের নথি হাতে পাওয়ার পর ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে জাতীয় সংসদ।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• ৭৫ হজযাত্রীর টাকা নিয়ে উধাও এজেন্সি
• ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা জরিমানা
• ইলিয়াছ ব্রাদার্সের ছয় মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ
• আট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে পৌনে ৩ কোটি টাকা জরিমানা
• দেড় কোটি টাকা প্রতারণা
• পরিচয় দিতেন এমপির এপিএস, গ্রেফতারের পর জানা গেলো প্রতারক
• বান্দরবানে পৌনে ৩ কেজি আফিমসহ নারী গ্রেফতার
• অপরিচিতকে পিন নম্বর দিয়ে ১০ লাখ টাকা খোয়ালেন প্রবাসীর স্ত্রী
• স্ত্রীকে মাছ ব্যবসায়ী বানিয়ে ৬ কোটি টাকা বৈধ করার চেষ্টা
• ১৩৯ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে নাভানা ফার্মা
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved