দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার অহিদুল ইসলামকে
কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এ মামলায় আত্মসমর্পণ করতে গেলে গতকাল মঙ্গলবার
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত তাকে কারাগারে
পাঠিয়ে দেন। গতকাল ছিলো অহিদুলের বিরুদ্ধে দাখিলকৃত চার্জশিট গ্রহণের ওপর
শুনানির তারিখ। তিনি হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন প্রার্থনা করেন।
আদালত সেটি নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সেই সঙ্গে চার্জশিট গ্রহণেরও আদেশ
দেন।
দুদক সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর দুদকের ঢাকা জেলার
সমন্বিত কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ
জিন্নাতুল ইসলাম। মামলার তদন্ত শেষে চলতি বছর ৯ জানুয়ারি অহিদুল ইসলাম ও
তার স্ত্রী পারভীন হোসেন ভূইয়াকে (৪৫) অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন সংস্থার
সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী। চার্জশিটে তার বিরুদ্ধে ১
কোটি ২১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৪৯ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং
৯৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্পদের মিথ্যা তথ্য প্রদানের অভিযোগ আনা হয়।
সূত্রটি
আরো জানায়, চার্জশিট দাখিল হলেও চার্জশিটে ভুল তথ্য রয়েছে-দাবি করে তিনি
দুদকের মাধ্যমেই সেটি আদালত থেকে ফেরত আনার চেষ্টা চালান। সংস্থাটির এক
শ্রেণীর কর্মকর্তার পরামর্শে এ জন্য তিনি মোটা অংকের অর্থও লগ্নি করেন।
নানা কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তিনি প্রায় ৪ মাস দাখিলকৃত চার্জশিটের শুনানি
বিলম্বিত করেন। নিজের গ্রেফতারও ঠেকিয়ে রাখেন। কিন্তু সকল চেষ্টা ব্যর্থ
করে দিয়ে আদালত শেষ পর্যন্ত চার্জশিট গ্রহণ করেন। সেই সঙ্গে তাকে কারাগারে
প্রেরণ করেন। সূত্রমতে, অহিদুল ইসলামের নামে- বেনামে রযেছে কোটি কোটি টাকার
সম্পত্তি। এসব সম্পত্তির প্রকৃত হদিস দুদকের গয়রহ অনুসন্ধানে বেরিয়ে
আসেনি। এ জন্য প্রয়োজন ছিলো গভীর অনুসন্ধানের। সেটি না করেই দুদক দায়সারা
গোছের এ মামলা দায়ের করে।
উল্লেখ্য,অহিদুল ইসলাম ‘বাংলাদেশ
রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস এসোসিয়েশন’র সভাপতি। তিনি যখন গাজীপুরের জেলা
রেজিস্ট্রার ছিলেন তখন তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়। কিন্তু নানা কায়দায়
এবং বিপুল অর্থের বিনিময়ে তিনি দুদকের অনুসন্ধান বিলম্বিত করেন। তার
বিরুদ্ধে মামলা রুজুর পর শুরু হয় তদন্ত। এক অদৃশ্য শক্তির ইশারায় তদন্ত
চলাকালে আইনমন্ত্রণালয় তাকে প্রাইজ পোস্টিং দেয়। বদলি গাজীপুর থেকে নিয়ে
আসে ঢাকার জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে। একইসঙ্গে ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার
সাবিকুন্নাহারকে বদলি করা হয় গাজীপুর।