Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
সাইবার আইনে বেশি অভিযুক্ত রাজনীতিক ও সাংবাদিকরা [ অনলাইন ] 01/05/2024
সিজিএস’র ওয়েবিনারে ড. আলী রীয়াজ
সাইবার আইনে বেশি অভিযুক্ত রাজনীতিক ও সাংবাদিকরা
সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট গণতন্ত্রের মৌলিক চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নতুন নামে আইনটি করা হলেও মূলত পুরোনো ধারাতেই চলছে। চার বছরে সামগ্রিক পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। এ উদ্বেগ অনুধাবন করতে না পারলে, বিশেষ করে রাজনীতিকরা অনুধাবন করতে না পারলে এবং সাংবাদিকরা না বুঝলে লড়াই বা প্রতিকূল পরিস্থিতি আরও দীর্ঘমেয়াদি হবে। মঙ্গলবার সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) এক ওয়েবিনারে প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) নিয়ে এমন মন্তব্য করেন।

‘সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের (ডিএসএ) পাঁচ বছর’ শীর্ষক ওয়েবিনারে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল, এএফপির ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিজিএস-এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।

ওয়েবিনারে মুখ্য আলোচক যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিসটিংগুইশড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ ঘটনাক্রমের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সিজিএস-এর গবেষণা তথ্য থেকে জানা যায়, প্রতিটি জেলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে সবচেয়ে কম মামলা হয়েছে। ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৪৩৬টি মামলায় ৪৫২০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে ১৫৪৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত ১৫৩৪ জনের পেশা শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজনীতিক ৩২ দশমিক ২৭, সাংবাদিক ২৯ দশমিক ৪০, শিক্ষার্থী ৯ এবং শিক্ষক ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

ড. রীয়াজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মানহানির ১৯০টি মামলায় ৪৬৪ জনকে অভিযুক্ত এবং ১৬১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মন্ত্রীদের মানহানির ৮০টি মামলায় ৩৩৭ জনকে অভিযুক্ত এবং ৬৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজনীতিকদের মানহানির ২১২টি মামলায় ৭৩৯ জনকে অভিযুক্ত এবং ১৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগকারী ৮৫৯ জনের পেশা শনাক্ত করা হয়েছে। সেখানে ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিকরা বেশি মামলা করেছেন। ৩৩৮ জন-অভিযোগকারী রাজনীতিকের মধ্যে ২৬৩ জন ক্ষমতাসীন দলের।

ড. রীয়াজ বলেন, ধারাগুলোর মধ্যে ২৫নং ধারায় সবচেয়ে বেশি ২৬৯টি মামলা এবং ৩৫নং ধারায় ৯৬১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ফেসবুকে পোস্ট বা মন্তব্যের ৯০৮টি মামলায় ২৩২৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, উদ্বেগজনক বিষয়গুলো হলো-সরকারি সংস্থাগুলো থেকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ না করা, স্বচ্ছতার অভাব, বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা, বিচারপূর্ব বন্দি বা আটক করে রাখার প্রবণতা, শিশু-কিশোরদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী অপ্রাপ্তবয়স্ক ২৮ জনকে এ আইনে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিসটিংগুইশড প্রফেসর রীয়াজ বলেন, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রবর্তনের মাধ্যমে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবিকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ডিএসএ-এর মতো আইনগুলোর বাস্তবায়ন রাজনৈতিকভাবে হয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. রীয়াজ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিকে সাংবাদিকরা সেলফ সেন্সরশিপ বললেও ভয়ের পরিবেশ এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে সাংবাদিক নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন-কোন বিষয়ে লিখবেন আর কোন বিষয়ে লিখবেন না। এর ফলে সংবাদমাধ্যমগুলো সরকারের আজ্ঞাবহে পরিণত হয়েছে।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য সরকারকে বল প্রয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ক্ষেত্রে তা হয়নি। ব্যক্তিগত আক্রোশ, ব্যক্তিগত ক্ষমতা প্রকাশের জন্য এ আইনের ব্যবহার হয়েছে। মামলার ভয়ে নাগরিক সমাজ থেকে এ ধরনের আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আসেনি। নাগরিকদের সামনে এ বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করার জন্য প্রফেসর আলী রীয়াজ ও তার গবেষণাদলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

ফারুখ ফয়সল বলেন, বাংলাদেশ যেসব আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে, তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এ আইন বাকস্নাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। সরকার, তার অঙ্গসংগঠন, পরিবারকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এ আইন প্রণয়ন করেছে। শফিকুল আলম বলেন, মুক্তবাককে নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টা কখনো গণতন্ত্র হতে পারে না। আমাদের বিচারব্যবস্থা কতটুকু স্বাধীন, তা নিয়ে সর্বদাই প্রশ্ন ছিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের মাধ্যমে অপব্যবহারের সুযোগ সেক্ষেত্রে আরও।

ওয়েবিনারের শুরুতে জিল্লুর রহমান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের স্থলে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণীত হয়েছে। আইনটি না থাকলেও এর প্রভাব একই থাকছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাংলাদেশের গণতন্ত্রহীনতার প্রকাশ। দেশে যে বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই, তা এ আইনের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। গণতন্ত্র, সুশাসন, আইনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদের সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। এরকম কালো আইন সামনে আরও প্রণীত হবে বলে আশঙ্কা করছি।


News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৮ সদস্য গ্রেপ্তার
• দুর্নীতি ও অর্থ পাচার হলো বাজেটখেকো উপসর্গ
• গায়ে ১৬ পোশাকে গুঁড়া স্বর্ণ জব্দ সাড়ে চার কেজি
• ৩০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার কোস্ট গার্ডের
• নরসিংদীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
• নাফ নদের মোহনায় ইয়াবাসহ আটক ৪
• দুই বাংলাদেশিকে অপহরণ করেছে আরসা
• টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে দ্রব্যমূল্য কমবে
• দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের শত শত বাড়ি হলো কীভাবে?
• মোবাইল জুয়া ও মাদক সেবনে ধ্বংস হচ্ছে যুবসমাজ
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved