[ অনলাইন ] 01/05/2024 |
|
|
|
‘গোল্ড কিনেন’ অ্যাপের আড়ালে প্রতারণার ছক |
|
|
অনলাইন অ্যাপে স্বর্ণালংকার কেনার বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে ‘গোল্ড কিনেন’ অ্যাপের বিরুদ্ধে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই প্রতারণামূলক অ্যাপটি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এই অ্যাপ বা কম্পানি গায়েব হয়ে যাবে কি না তা নিয়েও অনেকেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
অ্যাপ ব্যবহারকারী সাইক আহমেদ মামুন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘২ শতাংশ সার্ভিস চার্জ প্রতারণামূলক। এই অ্যাপে গোল্ড কেনা মানে বিপদ।’
গোল্ড কিনেন অ্যাপ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এই অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা তাদের দোরগোড়ায় সোনার বার এবং কয়েন আকারের স্বর্ণ ক্রয়, সংরক্ষণ, বিক্রি, উপহার দিতে এবং সংগ্রহ করতে পারবেন। অ্যাপটির মাধ্যমে কার্ড কিংবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে যেকোনো পরিমাণ বা মূল্যের গোল্ড কিনে সঞ্চয় শুরু করতে পারবেন একজন গ্রাহক। সঞ্চিত গোল্ড ১, ৫ ও ১০ গ্রামের বার এবং ২ ও ৪ গ্রামের কয়েনরূপে উত্তোলন করে ঢাকা সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত এলাকায় হোম ডেলিভারি নিতে পারবেন। অথবা দেশজুড়ে নির্ধারিত পিকআপ পয়েন্ট থেকে সংগ্রহ করে রাখতে পারবেন নিজের বাসায়। সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের নির্ধারিত পিকআপ পয়েন্ট থেকে বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তে এখন সঞ্চিত গোল্ড পিকআপের মাধ্যমে উত্তোলন সম্ভব। সেই সঙ্গে ৩১ মে পর্যন্ত চলা ক্যাশব্যাক ক্যাম্পেইনের আওতায় গ্রাহকরা গোল্ড কিনেন অ্যাপ থেকে গোল্ড কিনে পেমেন্ট বিকাশ করলেই পাচ্ছেন ৫ শতাংশ ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক যা ১০০ টাকা পর্যন্ত।
তবে খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই প্রতিষ্ঠানের কাছে সোনার কোনো মজুদ নেই। তারা মানুষকে বোকা বানাতে নানা ছল-চাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, অনলাইনে স্বর্ণ বিক্রি করার কথা বলে যাঁরা প্রচারণা চালাচ্ছেন, তাঁদের কাছে অদৌ কোনো স্বর্ণ আছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
এমন প্রতারণার ঘটনা ঘটলে তাকে অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। অ্যাপের প্রতারণার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ডিজিটাল প্রতারণা থেকে দূরে থাকতে হবে, কোনোভাবেই লোভে পড়া যাবে না।’
জানতে চাইলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যাঁরা এ ধরনের বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন তাঁদের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ‘প্রতারণাসহ যেকোনো অভিযোগ পেলেই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কেউ যদি অনলাইনে স্বর্ণালংকার বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা করে, অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রতারণাসহ সব ধরনের অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান চলছে।’
গোল্ড কিনেন অ্যাপের হেল্পলাইন নম্বরে কল দিলে কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘অ্যাপে লগইন করার পর সোনা কেনা যাবে। এখান থেকে সোনা কেনার পর ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফরমে মূল্য পরিশোধ করা যাবে।’
টাকা আগাম কেন পরিশোধ করতে হবে জানতে চাইলে মাসুদুর রহমান বলেন, ‘যখন সোনা ক্রয় করবেন তখনই শুধু পেমেন্ট করতে হবে। আমরা অ্যাপভিত্তিক সেবাটি দিচ্ছি, আর অ্যাপের মাধ্যমেই সোনা কিনতে হবে। আপনি যদি চান ডেলিভারিও নিতে পারেন। ন্যূনতম এক গ্রাম হলেই ডেলিভারি নিতে হবে। বর্তমানে আমাদের ক্যাশ অন ডেলিভারি চালু নেই। সেহেতু সোনা নিয়ে আমরা কাজ করছি, এ জন্য ক্যাশে কোনো লেনদেন করছি না।’
ডিজিটাল অ্যাপে আদৌ কোনো সোনার মজুদ আছে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, ঢাকার বনানীর ১১ নম্বর রোডে তাঁদের শোরুম রয়েছে। সেখানে সোনা আছে।’
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘কোনো অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতারণা হলে তা বন্ধের দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।’ বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউকে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
জানা যায়, গোল্ড কিনেন অ্যাপটি অ্যাপেল অ্যাপ স্টোর এবং গুগল প্লে স্টোরে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়েছিল। পরে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে পুরোপুরিভাবে অ্যাপটি উন্মুক্ত করা হয়। গোল্ড কিনেন অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও কামরান সাঞ্জয় রহমান, চিফ ফিন্যানশিয়াল অফিসার রাফাতুল বারী। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|