দরপতন ঠেকাতে এক দিনে কোনো শেয়ারের দর ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না– নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পক্ষ থেকে এমন নিয়ম বেঁধে দেওয়ার পর গত পাঁচ কার্যদিবসে ১৯৪ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর হারিয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ চার কার্যদিবস টানা দরপতন হয়েছে ৯ কোম্পানির শেয়ারের। ঢাকার শেয়ারবাজার ডিএসইর লেনদেন পর্যালোচনায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সার্কিট ব্রেকারে নতুন নিয়ম আরোপের পর ১ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত দর হারিয়েছে ১৬৫টি। যদিও এ সপ্তাহের রোব, মঙ্গল এবং গতকাল বৃহস্পতিবারও বেশির ভাগ শেয়ারের দর বেড়েছে। সর্বশেষ চার কার্যদিবস টানা দরপতন হয়েছে বার্জার পেইন্টস, ইফাদ অটোস, রানার অটোমোবাইলস, বিডি থাই ফুড, সিঙ্গার বাংলাদেশ, শিকদার ইন্স্যুরেন্স, বিকন ফার্মা, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স ও জিলবাংলা সুগার মিলসের। এ ছাড়া এমবিএল প্রথম, ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক এবং এসইএমএল লেকচার ফান্ডও দর হারাচ্ছে। সর্বশেষ টানা তিন দিন দর হারিয়েছে সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, হেইডেলবার্গ সিমেন্ট, হা-ওয়েল টেপটাইল ও ফাইন ফুডসের।
এমন দর হারানোর চিত্রের বিপরীতে দর বেড়েছে ১৭৪টির, যার ১৫৪টির দর ১ থেকে ২৪ শতাংশ বেড়েছে। সর্বাধিক প্রায় ২৫ শতাংশ দর বেড়েছে বন্ধ কোম্পানি খুলনা প্রিন্টিংয়ের। ২৪ শতাংশ দরবৃদ্ধি নিয়ে এর পরের অবস্থানেই সোনারগাঁও টেক্সটাইল ও জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস। গত ২৪ এপ্রিলের পর গতকাল পর্যন্ত ১০ থেকে ২০ শতাংশ দর বেড়েছে আরও ৩২ কোম্পানির শেয়ারের। এগুলোর অন্যতম হলো– এপেক্স ট্যানারি, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, ওইম্যাক্স, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, সিনোবাংলা, ম্যাকসন্স স্পিনিং, ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং, প্রগতি লাইফ, অলটেপ, কহিনূর কেমিক্যাল, এমবি ফার্মা ও লাভেলো।
বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, সার্কিট ব্রেকারের নিম্ন সীমা কমিয়ে দরপতন ঠেকানোর সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেননি বিনিয়োগকারীরা। এ কারণে এ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার পরদিনই বড় দরপতন হয়েছিল। কিন্তু গত সপ্তাহের রোববার সকালে বিএসইসির চেয়ারম্যান পদে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ নিশ্চিত করে প্রজ্ঞাপন হওয়ার পর পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। এ সময়ে কিছু নতুন বিনিয়োগ আসছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার শেয়ারবাজারে ৩৯২ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ২০৫টির দর বেড়েছে এবং কমেছে ১৪০টির দর। অপেক্ষাকৃত বেশি দর বেড়েছে বীমা, কাগজ ও ছাপাখানা, পাট এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ারের। বেশির ভাগ শেয়ারের দরবৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩১ পয়েন্ট বেড়ে ৫৬১৫ পয়েন্টে উঠেছে। দিনব্যাপী কেনাবেচা হয়েছে ৭১০ কোটি টাকার শেয়ার, যা আগের দিনের তুলনায় ১২৫ কোটি টাকা কম।