Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম ফের বাড়ানোর প্রস্তাব [ অনলাইন ] 04/05/2024
বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে আইএমএফের বৈঠক
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম ফের বাড়ানোর প্রস্তাব
আগামী বাজেট সামনে রেখে ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম ফের  বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে সংস্থাটি। তবে এই সমন্বয় যাতে আরও যুযোপযোগী করা যায় সেই বিষয়েও তাগিদ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আইএমএফের বাংলাদেশ সফরকারী দল বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান।
আগামী বাজেট ও জুন মাসে আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি প্রদানের আগে সংস্থাটির একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করছে। আগামী ৮ মে পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর এবং অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে সফররত প্রতিনিধি দলটি। এরই ধারাবাহিকতায় বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে ভর্তুকি কমিয়ে আনতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর লক্ষ্যে ফের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এতে ভর্তুকি কমিয়ে আনেত পেট্রোলিয়াম পণ্যের জন্য একটি পর্যায়ক্রমিক সূত্র-ভিত্তিক মূল্য সমন্বয় ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে আইএমএফ। বাজেট ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে অন্যান্য খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনার জন্যও বিদ্যুৎ, গ্যাসের বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্যুতের দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতিসহ উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। এর সঙ্গে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিও জড়িত।

এ কারণে এমনভাবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে যাতে মানুষের কষ্ট না বাড়ে। এ মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি কমাতে পর্যায়ক্রমে এসবের দাম বাড়ানো হবে। বিষয়টি বেশ ভালোভাবেই আইএমএফ প্রতিনিধি দলের কাছে তুলে ধরা হয়।
এদিকে, মাসওয়ারি মূল্য সমন্বয়ের অংশ হিসেবে প্রথম দুই মাসে ধাপে ধাপে কমে আসার পর মে মাসে জ্বালানি  তেলের দাম লিটার প্রতি সর্বোচ্চ আড়াই টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। চার ধরনের তেলের দামই বাড়ানো হয়েছে। ইতোমধ্যে মে মাসের জন্য ডিজেল কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

সরকার গত মার্চ থেকে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করে স্বয়ংক্রিয় ফর্মুলার আলোকে প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করছে। বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রেখে মাসে মাসে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের নীতিমালা তৈরি করার পর গত ৭ মার্চ প্রথমবারের মতো সমন্বিত মূল্য ঘোষণা করা হয়। প্রথম সমন্বয়ে সব ধরনের জ্বালানির দাম লিটারে সর্বনিম্ন ৭৫ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৪ টাকা পর্যন্ত কমেছিল। এ ছাড়া এপ্রিল মাসের জন্য যে মূল্য ঘোষণা করা হয় সেখানে, পেট্রোল অকটেনের দাম অপরিবর্তিত রেখে ডিজেল কেরোসিনের দাম লিটারে ২ টাকা ২৫ পয়সা করে কমানো হয়েছিল।

এবার মে মাসে আবার বাড়ানো হলো। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের এই কার্যক্রমকে বেশ ইতিবাচক হিসেবে দেখছে আইএমএফ। সংস্থাটির পরামর্শ, আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লে দেশেও জ্বালানির তেলের দাম বাড়বে এবার একইভাবে বহির্বিশ্বে কমলে এ দেশেও কমাতে হবে। এটাই আধুনিক ও  সময়োপযোগী পদ্ধতি।
জানা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্যাসে প্রায় ৬ হাজার ৫৭০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গ্যাসের দাম আড়াই শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ বাড়ানোর পর ভর্তুকির পরিমাণ বছরে ৫০০ কোটি টাকা কমানো যাবে বলে আশা করছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশে গ্যাসের ৮ ধরনের ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩৭ শতাংশ, ক্যাপটিভ বিদ্যুতে ১৮ শতাংশ, শিল্পে ২৩ শতাংশ, গৃহস্থালিতে ১০ শতাংশ, সার উৎপাদনে ৭ শতাংশ, সিএনজিতে ৪ শতাংশ এবং বাণিজ্যিক ও চা শিল্পে ১ শতাংশ গ্যাস ব্যবহৃত হয়। প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন, আমদানি, সরবরাহ মূল্যের সঙ্গে বিক্রয়মূল্যের পার্থক্যের কারণে সরকারকে এ খাতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৬ হাজার ৫৭০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে।

তবে গ্যাসের মূল্য সমন্বয়ের ফলে এলএনজির বর্তমান বাজার মূল্য ও ডলার বিনিময় হার বিবেচনায় বিদ্যমান ভর্তুকি ৬ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব হতে পারে বলে মন্ত্রণালয় প্রত্যাশা করছে।

এ ছাড়া বৈঠকে বিদ্যুৎ খাতের আয়-ব্যয় এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়ার (ক্যাপাসিটি চার্জ) হিসাব নিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। বিদ্যুৎ খাতের পরিকল্পনা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়েও জানতে চেয়েছে তারা। এ ছাড়া বিদ্যুৎ খাতের আর্থিক পরিস্থিতি, বাজেট বাস্তবায়ন, বিদ্যুতের সর্বশেষ মূল্যবৃদ্ধি ও বর্তমান মূল্যের সঙ্গে উৎপাদন খরচের ঘাটতি, ভবিষ্যৎ মূল্য সমন্বয়ের পরিকল্পনা বিষয়ে জানতে চেয়েছে আইএমএফ।

বিদ্যুৎ খাতের বড় প্রকল্পের অবস্থা, দক্ষতা উন্নয়নে প্রয়োজনীয়তা বিষয়েও জানতে চেয়েছে তারা। একই সঙ্গে বর্তমান বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের বিষয়েও খোঁজখবর নিয়েছে আইএমএফ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি (ইউএস) ডলার ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আইএমএফ বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছিল। এর মধ্যে একটি ছিল ভর্তুকি হ্রাস করতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো। আগামী জুন মাসে আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৫২ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে কেন?
• ডামি ফুয়েলে পরীক্ষামূলক, সঞ্চালন লাইন শেষ করতে আরো এক বছর
• উত্তরা এলাকায় শনিবার গ্যাসের চাপ কম থাকবে
• চাহিদার অর্ধেক মেলে বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ে নাকাল গ্রাহক
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved