[ পাতা ৩ ] 04/05/2024 |
|
|
|
যে স্ট্রোকে যে ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন |
|
অধ্যাপক ডা, এস এম জহিরুল হক চৌধুরী |
স্ট্রোক হলো মস্তিষ্কের অসুখ। এক গবেষণা থেকে জানা যায়, প্রতিবছর আমাদের দেশে এক লাখ মানুষের মধ্যে গড়ে ১৮০ থেকে ৩০০ জন স্ট্রোকজনীত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। স্ট্রোক মূলত তিন ধরনের। এর মধ্যে একটির হলোÑ টিআইএ, দ্বিতীয়টি হলোÑ প্রগ্রেসিভ স্ট্রোক এবং তৃতীয়টি হলোÑ কমপ্লেটেট স্ট্রোক। এর মধ্যে টিআইএ স্ট্রোক হলে আক্রান্ত রোগী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। প্রগ্রেসিভ স্ট্রোকে রোগীর অবস্থা ক্রমে খারাপ হতে থাকে। আর কমপ্লেটেট স্ট্রোকে রোগীর অবস্থার মোটেও কোনো অবনতি হয় না। স্ট্রোককে নানাভাবে বিশেষায়িত করা যায়। একটি হলো রক্তনালি ব্লক হয়ে স্ট্রোক বা ইন্ট্রাসেরিব্রাল ইনফ্রাকশন। অন্যটি ব্রেইনের রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে ব্রেইনে রক্তক্ষরণ হওয়া। শতকরা ৮৫ ভাগ স্ট্রোক হয় রক্তনালি ব্লক হওয়ার কারণে ও শতকরা ১৫ ভাগ স্ট্রোক হয় রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে ব্রেইনে রক্তক্ষরণের কারণে।
স্ট্রোক হওয়ার মূল কারণ : রক্তে কোলেস্টেরল বা খারাপ চর্বি বেশি থাকার কারণে ইসকেমিক স্ট্রোক হয়। ডায়াবেটিকস, সেডেনটারি ওয়ার্কার এবং স্ট্রেসফুল কাজ, হার্টের অসুখ থেকেও স্ট্রোক হতে পারে। হেমোরেজিক স্ট্রোক বা ব্রেইন রক্তক্ষরণ হয় উচ্চ রক্তচাপের কারণে।
চিকিৎসা : ইসকেমিক স্ট্রোক প্রতিরোধে রক্তের চর্বি কমাতে হবে। সেজন্য ভাত কম খেতে হবে। শাকসবজি, সালাদ বেশি খেতে হবে। গরু বা খাসির মাংস বর্জন করতে হবে। দিনে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ঘাম ঝরেÑ এ রকম করে হাঁটতে হবে। ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ বাদ দিতে হবে।
হেমোরেজিক স্ট্রোক প্রতিরোধে প্রয়োজনে নিয়মিত উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সেবন করতে হবে। এক্ষেত্রে এক বেলাও ওষুধ সেবন বাদ দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ পকেটে, ব্যক্তিগত ব্যাগে বা কর্মস্থলে রাখতে হবে। সাধারণত টিআইএর জন্য জরুরিভিত্তিতে তেমন কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না। রোগী তাৎক্ষণিক সুস্থ হয়ে না উঠলে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের রক্তনালিতে জমাট বেঁধে যাওয়া রক্তের জমাট ভেঙে আবার রক্তপ্রবাহ চালু করার জন্য কিছু ওষুধ রোগীকে দিতে হবে। মেকানিক্যাল থ্রম্বেক্টমি পদ্ধতিতে মস্তিষ্কের একটি বড় রক্তনালিতে ক্যাথেটার প্রবেশের মাধ্যমে বিশেষভাবে জমাট বেঁধে যাওয়া রক্ত বাইরে বের করে আনতে হয়। স্ট্রোক-পরবর্তী ৬ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ পদ্ধতির চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি সুফল পাওয়া যায়। স্ট্রোকের ফলে মস্তিষ্কের রক্তনালিতে জমাট বেঁধে যাওয়া রক্ত বের করার জন্য সার্জারিরও প্রয়োজন হতে পারে।
হেমোরেজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে চিকিৎসা ভিন্নতর। এক্ষেত্রে রক্তনালি ছিঁড়ে যাওয়ায় রক্তপ্রবাহ বেড়ে গিয়ে মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত করে। তখন চিকিৎসার মাধ্যমে রক্তনালি মেরামত ও রক্তপ্রবাহ কমানোর চেষ্টা করা হয়। হেমোরেজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে ও রক্তপ্রবাহ কমায়Ñ এমন ওষুধ রোগীকে দেওয়া হয়। ওষুধ ছাড়াও অন্যান্য চিকিৎসাব্যবস্থা হিসেবে রয়েছে সার্জারিসহ নানা চিকিৎসা পদ্ধতি, যা একজন নিউরোসার্জন রোগীর অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন।
লেখক : অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল
চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি., শ্যামলী, ঢাকা
০১৯২৭০৭৮৭৬৬, ০১৬৪৫৩০৫৭০৯ |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|