বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে চাপে রয়েছে। আর এর প্রভাব লক্ষ করা গেছে বৈদেশিক বিনিয়োগ চিত্রে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে ২০২৩ সালে দেশের নেট ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) বা বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগ আগের বছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ কমেছে। ২০২৩ সাল শেষে দেশে নেট এফডিআই হয়েছে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে যা ছিল ৩ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাত্, এক বছরের ব্যবধানে এফডিআই প্রবাহ ৪৭৫ মিলিয়ন ডলার কমেছে। অবশ্য, বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আংকটাড)-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী এফডিআই প্রবাহ ১২ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে; এখানে বাংলাদেশও ব্যতিক্রম ছিল না। বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে বেশির ভাগ উন্নয়নশীল দেশেই এফডিআই প্রবাহ কমতির দিকে। তাছাড়া ফেডারেল রিজার্ভ সুদ হার বৃদ্ধির ফলে বৈশ্বিক বিনিয়োগ এখন উন্নয়নশীল বিশ্বের পরিবর্তে পশ্চিমা বিশ্বেই ধাবিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে সবচেয়ে বেশি ৬১৪ মিলিয়ন বিনিয়োগ এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে। এছাড়া নেদারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কোরিয়া, নরওয়ে, সিংগাপুরের মতো দেশগুলো থেকে ভালো অঙ্কের বিনিয়োগ পেয়েছে বাংলাদেশ।
২০২৩ সালের নেট এফডিআই প্রবাহের ৭৩ শতাংশ বা ২.২১ বিলিয়ন ডলার ছিল রিইনভেস্টেড আর্নিংস। অর্থাত্, পুরোনো বিদেশি বিনিয়োগ থেকে যে রিটার্ন বা ফেরত পাওয়া গেছে, সেটিকে আবার বিনিয়োগ করা থেকেই দেশের মূল এফডিআই প্রবাহ হয়েছে। এছাড়া, ৭০৫ মিলিয়ন ডলার এফডিআই এসেছে ইকুয়াল ক্যাপিটালের মাধ্যমে, যেটি গত ৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ৫৯১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে টেক্সটাইল এবং ওয়্যারিং খাতে। এছাড়া ব্যাংকিং, বিদ্যুত্, গ্যাস এবং পেট্রোলিয়াম ও খাদ্যের মতো খাতগুলোতে ভালো বিনিয়োগ এসেছে। |