Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
বিনিয়োগ টানার সক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশের আরো কাজ করার সুযোগ আছে [ পাতা ১৬ ] 06/05/2024
ডিএসআইসি সম্মেলনের তৃতীয় প্লেনারিতে রাষ্ট্রদূতরা
বিনিয়োগ টানার সক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশের আরো কাজ করার সুযোগ আছে
উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে আমরা সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছি। আমাদের কার্যক্রম বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে। এলডিসি-পরবর্তী কীভাবে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হবে, সে বিষয়েও পরামর্শ দিচ্ছি আমরা। বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে আমরা গর্বিত। উন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে সবার আগে বাংলাদেশের নামই আসবে। তবে বিনিয়োগ টানার সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে।  

রাজধানীতে গতকাল ‘ফার্স্ট ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ঢাকা’ (ডিএসআইসি) শীর্ষক সম্মেলনের তৃতীয় প্লেনারিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী বিভিন্ন দেশ, অঞ্চল ও সংস্থার প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন।

‘পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে উন্নয়নের পথ অনুসন্ধান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ ও বণিক বার্তা যৌথভাবে এ সম্মেলন আয়োজন করেছে। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের শেষ দিনে আজ নয়টি টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে।

তৃতীয় অধিবেশনের শিরোনাম ছিল ‘‍পার্টনারশিপ ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট।’ এ অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহিদুজ্জামান সরকার। সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রধান এমএ মান্নান। সম্মানিত আলোচক ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল্লায়ে সেক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও মধ্যপ্রাচ্য) মিরানা মাহরুখ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ও চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘সরকার বর্তমানে বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। এ খাত শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বেসরকারি খাত থেকে প্রত্যাশিত সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে।’

জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে মসিউর রহমান বলেন, ‘এ সমস্যা আমরা সৃষ্টি করছি না, আমরা ভুক্তভোগী। ফলে উন্নয়ন সহযোগীদের উচিত হবে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ অনুমোদন করা। ঋণ পরিশোধের সময়ও বাড়ানো উচিত।  ঋণ পরিশোধের সময় বৃদ্ধি পেলে এবং সুদ কম হলে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সহজ হবে। আমরা প্রত্যাশা করি, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক স্বল্প সুদে ঋণের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেবে।’

প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, ‘‌ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কিন্তু অন্যরা ঋণ দেয়ার সময় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে না। ফলে এ ধরনের ঋণ থেকে ভালো ফলও মিলছে না। চীন এক্ষেত্রে সচেতনতার সঙ্গে কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মতান্ত্রিক অর্থায়নে জোর দিচ্ছি। আইএমএফ আর বিশ্বব্যাংক নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিনিয়োগ করে। তারা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দেয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। এটি এক ধরনের সতর্ক করার মতো, যেটি বিনিয়োগ ফলপ্রসূ করে তোলে।’

ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘গত তিন-চার বছর বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মধ্যম পর্যায়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে দুটি দিক উল্লেখ করার মতো। সেগুলো হলো আমরা রাজস্ব সংগ্রহ ও রফতানি বাণিজ্যে কিছুটা পিছিয়ে। এ দুটি জায়গায় উন্নতি করতে পারলে আমাদের ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য বহুগুণ বাড়বে। ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও আমাদের অবস্থান শক্ত হবে।’

এমএ মান্নান বলেন, ‘উন্নয়ন বর্তমানে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ আমরা একটি মানসম্মত জীবন চাই। খুব সহজভাবে বললে, আমাদের সামনে এখন কাজ, উৎপাদন, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ ছাড়া আর কিছু নেই। অভ্যন্তরীণ পরিবেশ ও শান্তি বজায় রাখা এবং কৃষক, শ্রমিকসহ যারা সরাসরি উৎপাদনে জড়িত, তাদের জীবনমান উন্নয়ন করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সঠিকভাবে বাজার সুবিধা পেতেও কাজ করছি।’

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল্লায়ে সেক বলন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়ন চেষ্টাকে আমরা স্বাগত জানাই। বাংলাদেশ দারিদ্র্যবিমোচনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে বিনিয়োগ টানার সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’

বিশ্বব্যাংকের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘গত বছর আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বের ৫০ বছর উদযাপন করেছি। বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য। উন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের নামই সবার আগে আসবে।’

তিনি বলেন, ‘পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর—এমন প্রকল্পে বাংলাদেশের নাম নেই। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সেই বিবেচনায় আমি চাই, এখানে জলবায়ুতে আরো বেশি অর্থায়ন হোক। বিশ্বব্যাংকের এখানে বড় ধরনের কন্ট্রিবিউশন রয়েছে। পরিবেশ ইস্যুতে সেটি আরো বৃদ্ধির সুযোগও রয়েছে।’

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য বায়ুদূষণ একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৩২ শতাংশ বায়ুদূষণজনিত। এটি ২০৩০ সালের মধ্যে অন্তত অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশ সরকার অবশ্য এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে, যা প্রশংসার দাবিদার।’

ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও দারিদ্র্য বিমোচনসহ সব কার্যক্রমের বিষয়ে ইইউ অবগত। অংশীদারত্বের প্রশ্নে বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউর সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী। আমরা এখানে শিক্ষা উন্নয়ন, গ্রিন ডেভেলপমেন্ট ও দক্ষতা উন্নয়নে জোর দিই। দারিদ্র্য বিমোচন ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোয় বাংলাদেশের বেসরকারি খাত প্রশংসনীয় কাজ করছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করলেও আমরা ২০২৯ সাল পর্যন্ত কিছু বিশেষ সুবিধা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের অবকাঠামোসহ বেশ কয়েটি খাতে আমরা বড় বিনিয়োগ করেছি। এটি অব্যাহত থাকবে। উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে আমরা সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছি।’

তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভুক্তভোগীদের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এ সংকট মোকাবেলায় ইইউর পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব সহায়তা দেয়া হচ্ছে। আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে।’

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও মধ্যপ্রাচ্য) মিরানা মাহরুখ বলেন, ‘বর্তমানে আমরা এমন অনেক সমস্যায় পড়ছি, যেগুলো আমাদের জন্য একেবারেই নতুন। শিগগিরই আমরা এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করব। ফলে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ যেমন আছে, তেমনি অনেক সুযোগও তৈরি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন ভিন্ন ভিন্ন বাজারের দিকে নজর দিতে হচ্ছে। দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করতে হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন একটি বড় সমস্যা। ফলে আমরা গ্রিন ফাইন্যান্সিংয়ের দিকেও জোর দিচ্ছি। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের ওপর জোর দিতে হবে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। ২০২৬ সালের পর পরিস্থিতি ভিন্ন হবে। আমরা সেটা মাথায় রেখে এরই মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি।’

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে আমরা বিনিয়োগ ও প্রয়োজনীয় অর্থায়ন পাওয়ায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। বিশ্বব্যাংক ও অন্য উন্নয়ন সহযোগীদের আমরা অনুরোধ করছি ঋণের ক্ষেত্রে সময়টা বাড়ানোর জন্য। আমরা নতুন করে অনেকের কাছ থেকে উন্নয়ন সহযোগিতা পাচ্ছি। যেমন গত বছর আমরা দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে ৫০০-৬০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পেয়েছি। এ বছর আমরা তাদের ৫ বিলিয়ন ডলারের জন্য রাজি করাতে পেরেছি। জাপান গত বছরের তুলনায় এ বছর তাদের থেকে নেয়া ঋণের সুদহার উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে রাজি হয়েছে।’

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, ‘অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের সম্পর্ক কিছুটা ভিন্ন। বাংলাদেশের প্রয়োজন অনুযায়ী জাতিসংঘ সবসময় পাশে থেকেছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও পাশাপাশি কাজ করছে। বিশেষ করে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিতে সব ধরনের সহায়তা করছে ইউএন। যেকোনো দুর্যোগ বা রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়লে সেখানেও সহায়ক ভূমিকা পালন করছি আমরা। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের ক্ষেত্রে সব ধরনের পরামর্শ আমরা বাংলাদেশকে দিচ্ছি। এলডিসি-পরবর্তী সময়ে কীভাবে অর্থনীতি এগিয়ে নিতে হবে, সেসব বিষয়েও পরামর্শ দিচ্ছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে গোয়েন লুইস  বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন গোটা বিশ্বের মতো এ অঞ্চলের জন্যও একটি বড় সমস্যা। জলবায়ু সমস্যা মোকাবেলায় ভুল নীতি বা পরামর্শ বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই আমরা বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে বিশেষ গুরুত্ব বজায় রেখে কাজ করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের মধ্যে নানা রকম অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে। ফলে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। অন্যদিকে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ইস্যু রোহিঙ্গা সমস্যা। এ সমস্যার দ্রুত রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আমরা বাংলাদেশের পাশে আছি।’

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে গর্বিত। আমরা শুধু বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়েই কাজ করছি না; বাংলাদেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয়ও অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করছি। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে চীনের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। সোলার প্যানেল উৎপাদনে চীন বিশ্বে দ্বিতীয়। বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনে প্রথম। পরিবেশসংক্রান্ত বিভিন্ন পণ্যে চীন বিশ্বের অন্যতম বড় উৎপাদক। আগামীতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করবে চীন। আমাদের কার্যক্রম বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে। আমরা মুজিব প্রসপারিটি প্ল্যান এবং মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যানিং নিয়ে কাজ করছি।’

চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীন সর্ববৃহৎ উন্নয়নশীল দেশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সর্ববৃহৎ উন্নত দেশ। ফলে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে। আমরা চাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক। তাদের সঙ্গে বহু আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তারা চীনের সঙ্গে কোনো রকম সম্পর্ক উন্নয়ন চায় না। তারা চীনকে অনেকগুলো নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। বাইডেন প্রশাসন বিভিন্নভাবে চীনের অনেকগুলো কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। হুয়াওয়ের কথাই যদি বলি, কোম্পানিটি খুবই ভালো করছিল। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে তারা এ কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।’

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীন আন্তরিক উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান চাই। চীন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য দেশের একটি হিসেবে মধ্যস্থতাকারী ও সহায়তাকারীর ভূমিকা পালনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। আশা করছি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যৌথ প্রচেষ্টায় প্রত্যাবাসন হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা শান্তির জন্য স্বাধীন কূটনীতি অনুসরণ করি। আমরা সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও জাতীয় মর্যাদা রক্ষায় একে অন্যকে সমর্থন করি। প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সংঘাত বন্ধ করা না গেলে প্রত্যাবাসন দুরূহ। আমরা এ সমস্যা সমাধানে এবং রাখাইনে অস্ত্রবিরতির জন্য রাজনৈতিক সমাধানের চেষ্টা করছি। এখানে অন্য দেশগুলোকেও সমাধানের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশানের পর কীভাবে অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়া যাবে, সে বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। প্রথমত, আমরা জাপানের সঙ্গে বেশকিছু বিষয়ে একমত হয়েছি। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গেও বেশকিছু ক্ষেত্রে আমরা কাজ করছি। এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন অন্যতম। ইইউর সঙ্গে এরই মধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। তাদের সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রী গত অক্টোবরে ব্রাসেলসে একটি চুক্তিও সই করেছেন।’

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহিদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘এ অনুষ্ঠানে এসে আমি খুবই আনন্দিত। কারণ আমি এখানে অনেক কিছু জেনেছি, যেগুলো আগামীতে আমার কাজে লাগবে। এমন একটি আয়োজনে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোয় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। আমি দায়িত্ব পেয়েছি এখনো দুই মাস হয়নি, তাই এখনই বক্তব্য দেয়ার মতো কিছু নেই। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে উনি অগ্রগামী পরিকল্পনা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।’
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• রাজস্ব আদায়ে অগ্রগতি নেই, ৭ ভবন নির্মাণের তোড়জোড়
• সোনা কি রিজার্ভ মুদ্রা হয়ে উঠছে
• ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়াতে ইএসজি কমপ্লায়েন্সের চাহিদা বাড়ছে
• শ্রমিকদের পেছনে রেখে বাজেট হতে পারে না
• বাড়বে ভ্যাট, ভুগবে ভোক্তা
• অটোগ্যাস স্টেশন নির্মাণে ১০ বছর শুল্কমুক্ত সুবিধা চান ব্যবসায়ীরা
• মূল্যস্ফীতি: অর্থনীতির এ দুষ্টক্ষত নিরাময় জরুরি
• মেরিটাইম সিল্ক রোডে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ
• বাজেটে শ্রমিকের জন্য রেশনিং বরাদ্দের দাবি
• যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল কাজ করছে না, আরো চীনমুখী হচ্ছে বাংলাদেশ
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved