[ পাতা ৩ ] 06/05/2024 |
|
|
|
বৈদেশিক সহায়তা এক লাখ কোটি টাকা |
|
উন্নয়ন বাজেট ২০২৪-২৫ |
দেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) তৈরির সময় প্রতি অর্থবছরই বাড়িয়ে ধরা হয় বৈদেশিক সহায়তা লক্ষ্য। কিন্তু বাস্তবায়ন অদক্ষতার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী খরচ করতে না পারায় মাঝপথে এর একটি বড় অংশ কাটছাঁট করতে হয়। আগামী অর্থবছরেও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে রেকর্ড বৈদেশিক সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে যেখানে ৯৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তা আগামী অর্থবছরে বাড়িয়ে ১ লাখ কোটি টাকা করা হচ্ছে, যা চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির তুলনায় ৬ হাজার কোটি টাকা এবং সংশোধিত এডিপির তুলনায় ১৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বেশি। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী খরচ করতে না পারায় চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।
বৈদেশিক অর্থ সহায়তার বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বৈদেশিক ঋণ ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোর আগে অর্থ খরচের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। যেসব প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ আছে, সেগুলোতে গতি বাড়াতে বিশেষভাবে মনিটরিং করতে হবে। খরচ করতে না পারলে এত বরাদ্দ দিয়ে লাভ নেই। সরকার বর্তমানে ডলার সংকট কাটাতে বৈদেশিক ঋণ ছাড়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করে অর্থছাড় না করতে পারলে সরকারের উদ্দেশ্য হাসিল হবে না।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত সিরিজ বৈঠকের মাধ্যমে এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তার এ প্রাথমিক আকার নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটের বর্ধিত প্রাথমিক খসড়া উত্থাপন করে এডিপির আকার চূড়ান্ত করা হবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থার বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের বরাদ্দ নির্ধারণের জন্য চার দিনের সিরিজ বৈঠক হয়েছে। এর আগে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাছে বরাদ্দের ধারণা চাওয়া হয়। বৈঠকগুলোতে বিস্তারিত আলোচনার পরই প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হয়।
ইআরডির এক কর্মকর্তা জানান, এরই মধ্যে আগামী অর্থবছরের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বৈদেশিক সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা প্রস্তুত করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের মূল এডিপির চেয়ে বেশি হবে। প্রাথমিক খসড়া চূড়ান্ত করার জন্য এরই মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
আগের অর্থবছরগুলোর এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তার বরাদ্দ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তার বরাদ্দ ধরা হয়েছিল ৯৪ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সংশোধিত এডিপিতে কাটছাঁট করে বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয় ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক অংশের বরাদ্দ ছিল ৯২ হাজার ২০ কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে তা কমিয়ে বরাদ্দ ধরা হয় ৭৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে অর্থবছর শেষে খরচ হয়েছিল আরও কম, অর্থাৎ ৬৭ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। একই চিত্র অন্য বছরগুলোতেও।
২০২১-২২ অর্থবছরে মূল এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ৮৮ হাজার ২৪ কোটি টাকা, সংশোধিত এডিপিতে কমিয়ে ধরা হয় ৭২ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে খরচ হয়েছিল ৬৭ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক অংশে বরাদ্দ ছিল ৭০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা; কিন্তু সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ কমিয়ে ধরা হয় ৬৩ হাজার ১ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত খরচ হয়েছিল ৫২ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা। একইভাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ৭১ হাজার ৮০০ কোটি, সংশোধিত এডিপিতে কমিয়ে ধরা হয় ৬২ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে খরচ হয়েছিল ৪৭ হাজার ৪৪ কোটি টাকা। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|