[ অনলাইন ] 06/05/2024 |
|
|
কর্মকর্তার তোপে অতিষ্ঠ রুয়েট |
প্রভাব খাটিয়ে চাকরি, জালিয়াতি করে পদোন্নতি |
|
|
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আল বেরুনী ফারুক।সম্প্রতি এক রাজাকারের শ্যালক ও বিএনপি নেতার ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শাহ মো. আলবেরুনী ফারুক মোহনপুর উপজেলার সইপাড়া গ্রামের মো. আব্দুস ছামাদ শাহর ছেলে। তিনি এর আগেও নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য খবরের শিরোনাম হয়েছেন। এর মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও প্রভাব খাটিয়ে রুয়েটে চাকরি বাগিয়ে নেওয়া, আধিপত্য বিস্তারে ক্যাম্পাসে বিভক্তি সৃষ্টি, নিয়োগ-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণসহ জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরিতে পদোন্নতি অন্যতম। তার এসব কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে রুয়েট। এবার রুয়েটে ভুয়া তথ্য দিয়ে ও জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের পদোন্নতি বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, রুয়েটে ২০১২ সালের সার্কুলারে পিএস টু ভিসি পদে নিয়োগ পান ফারুক। তবে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ফলাফল বাতিল করে শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দিতে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের নিয়ে তৎকালীন উপাচার্যের দপ্তর ঘেরাও করেন তিনি।পরে ফারুককে চাকরি দিতে বাধ্য হন তৎকালীন উপাচার্য ড. সিরাজুল করিম চৌধুরী।
অভিযোগ আছে, রুয়েটের প্রকৌশল দপ্তরে সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও ফারুকের যোগসাজশে সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মোতাহার হোসেনকে বাদ দেওয়া হয়। পরে সেই পদে অনৈতিকভাবে রুয়েট ছাত্রশিবিরের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও শিবির নেতা মো. আহসান হাবীবকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর মাত্র দেড় বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা নিয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার পদ বাগিয়ে নেন ফারুক। অথচ ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক ছিল।
পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা ছাড়াই সহকারী রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের বিষয়ে রুয়েটের সাবেক ভিসি রফিকুল ইসলাম বেগ বলেন, ‘এত আগের খবর আমি বলতে পারব না। এটা একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। তারা যাচাই-বাছাই করে সেটির জন্য রেজিস্ট্রার দপ্তরে সুপারিশ করে। আমি এগুলো দেখি না। আমার আমলের রেজিস্ট্রারের সঙ্গেই যোগাযোগ করেন। তিনিই ভালো বলতে পারবেন।’
এ বিষয়ে ওই সময়ের রেজিস্ট্রার ড. সেলিম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটি কিভাবে হয়েছে তা এখন বলা সম্ভব নয়।’
বর্তমান রেজিস্ট্রার আরিফ আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, ‘যদি কোনো তথ্য গোপন করে বা পরে কাঁটাছেড়া করে তবে সেটি ফৌজদারী অপরাধ। এছাড়াও তার সহকারী রেজিস্ট্রার পদের অভিজ্ঞতা রুয়েটের নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী হয়েছে। তবে সেই নীতিমালা রুয়েট পরিচালনা অধ্যাদেশে নেই। আমরা বিষয়গুলো তার কাছে জানতে চাইব। তখন এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে। তবে তার ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে আপগ্রেডেশনের ক্ষেত্রে শিথিলতা করা হয়েছে। প্রতিটি পদেই তার জন্য শিথিলতা কেন জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে রুয়েটের উপাচার্য জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহ মো. আলবেরুনী ওরফে ফারুক বলেন, ‘আমি প্রথম শ্রেণির চাকরি করছি ২০১২ সাল থেকে। আর ২০২২ সালে যদি আমার প্রমোশন হয় তাহলে গ্যাপ থাকল কোথায়? একজন উপাচার্য নিয়োগ দিয়েছেন। সহকারী রেজিস্ট্রার আর ডেপুটি রেজিস্ট্রার হয়েছি পৃথক দুই উপাচার্যের সময়। তাই এসব বিষয়ে তাদের প্রশ্ন করেন। আমি কিছু বলতে পারব না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা এখানে কাজ করেন (অভ্যন্তরীণ প্রার্থী) তাদের অভিজ্ঞতা শিথিল করার নিয়ম আছে। তাই, তারও অভিজ্ঞতা শিথিল করা হয়েছে।’
তবে শিথিলের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি এবং ডকুমেন্টস দিতে পারেননি রুয়েটের এই অভিযুক্ত কর্মকর্তা। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|