[ অনলাইন ] 07/05/2024 |
|
|
|
এক বছরের মধ্যে আগের অবস্থায় ফিরবে এনবিএল |
|
|
বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক দখল হয়নি বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাংকে পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংক অন্য কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হবে না এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে তার কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বেসরকারি এই ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে খলিলুর রহমান আরও বলেন, ‘আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করে চলেছি। অতীতে এ ব্যাংকে লুটপাট হলেও এখন থেকে আর এক পয়সাও লুটপাট হবে না। ব্যাংক থেকে যারা টাকা নিয়েছেন, তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। এক বছরের মধ্যে আমরা ব্যাংকটিকে আগের অবস্থায় নিতে পারব।’
গতকাল সোমবার ঢাকায় ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। নতুন চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান জানান, এর আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, বেসরকারি ইউসিবি ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংককে একীভূত করা হবে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা একীভূত হতে রাজি নই। বাংলাদেশ ব্যাংককেও এ কথা জানিয়েছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাতে রাজি হয়েছে। তবে শর্ত দিয়েছে যে, এক বছরের মধ্যে ব্যাংককে দুর্বল অবস্থা থেকে ভালো করতে হবে। ফলে এখন আমরা একীভূত করার অবস্থা থেকে মুক্ত।’
খলিলুর রহমান জানান, তারা প্রাথমিকভাবে শেয়ারধারী ব্যক্তিদের মাধ্যমে ব্যাংকে ১ হাজার কোটি টাকা মূলধন সরবরাহ করবেন। এ ছাড়া পরবর্তী সময় বিভিন্নভাবে তারা আরও ৩ হাজার কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করবেন। এই আমানত সংগ্রহ করা হবে প্রচারণা ও প্রকল্পের মাধ্যমে। এতে ন্যাশনাল ব্যাংকের চলমান তারল্য সংকট নিরসন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
খারাপ হয়ে যাওয়া ঋণ পুনঃরুদ্ধারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে জানিয়ে খলিলুর রহমান বলেন, খারাপ ঋণ পুনরুদ্ধারে কাউকেই কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
ব্যাংকটির নবনিযুক্ত পরিচালক আহসানুল করিম বলেন, ‘আগামী এক বছরের মধ্যে আমরা ন্যাশনাল ব্যাংকে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন দেখাতে চাই। অতীতে যারা পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন, তাদের নিজেদের স্বার্থ ছিল। এ কারণে তারা নিজেদের স্বার্থে কাজ করে ব্যাংককে দুর্বল করেছেন। আর আমরা দেশের স্বার্থে কাজ করতে পরিচালনা পর্ষদে দায়িত্ব নিচ্ছি।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার চাপের মুখে আগের পর্ষদের চেয়ারম্যানসহ চারজন পদত্যাগ করলে গত ৫ মে নতুন পর্ষদ নিযুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বছরের ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সুপারিশে ব্যাংকটির পর্ষদ ভেঙে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নতুন পর্ষদের অন্য নতুন সদস্যরা হলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রতিনিধি পরিচালকের মধ্যে রয়েছেন লে. জে. মো. সফিকুর রহমান (অব.), প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজুল করিম, ব্যবসায়ী এরশাদ মাহমুদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এ কে এম তফাজ্জল হক। এ ছাড়া স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে রয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মো. হেলাল উদ্দীন নিজামী, ড. রত্না দত্ত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জহুরুল হুদা। আগের পর্ষদের পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন ছাড়া নতুন পর্ষদে কাউকে রাখা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের প্রয়োজন বুঝি। ফলে ব্যবসায়ীদের জন্য সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে ও তাদের পাশে থেকে ন্যাশনাল ব্যাংককে একটি ব্যবসায়ীবান্ধব ব্যাংক হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধ পরিকর। এর মাধ্যমে ন্যাশনাল ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াবে ও তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে বলে আমরা দৃঢ় বিশ্বাস করি। ন্যাশনাল ব্যাংকের এই অগ্রযাত্রায় আমরা সাংবাদিকদের পাশে চাই।
১৯৮৩ সালে প্রথম দেশীয় মালিকানায় বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড। বর্তমানে ব্যাংকটির ২২১টি শাখা ও ৬৫টি উপশাখা রয়েছে। এ ছাড়া দেশের মধ্যে দুটি ও দেশের বাইরে চারটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান, জিসিসি অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রে দুটি অর্থ স্থানান্তর প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ, ব্যবস্থাপনা চুক্তিসহ দেশের অভ্যন্তরে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) এবং রেটিং প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যাংকটি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
বর্তমানে ব্যাংকটিতে ২০ লাখ আমানতকারী ও ১ লাখ ঋণগ্রহীতা আছে। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|