Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
 বৈদেশিক ঋণের টার্গেট এবার লাখ কোটি টাকা [ অনলাইন ] 08/05/2024
অগ্রাধিকার পরিবহন-বিদ্যুতে
বৈদেশিক ঋণের টার্গেট এবার লাখ কোটি টাকা

দেশে চলমান অর্থনৈতিক চাপের কারণে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার বাড়াচ্ছে না সরকার। আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে মোট বরাদ্দ থাকছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের তুলনায় মাত্র দুই হাজার কোটি টাকা বেশি। মোট বরাদ্দের বৈদেশিক ঋণ বা অনুদান লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ কোটি টাকা। তবে এবারও উন্নয়ন বাজেটে পরিবহন ও বিদ্যুৎ খাতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ দুই খাতে তুলনামূলকভাবে অর্থ বরাদ্দও থাকছে বেশি।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রণয়নে গত ১৪ মার্চ নির্দেশনা দেয় পরিকল্পনা কমিশন। সেই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সব বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছ থেকে এডিপির জন্য মোট দুই লাখ ৭৬ হাজার ৪০২ কোটি ৪৬ লাখ টাকার প্রাথমিক চাহিদা পাওয়া যায়। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন এক লাখ ৮৫ হাজার ৩৯১ কোটি ১৯ লাখ টাকা ও প্রকল্প ঋণ-অনুদান ৯১ হাজার ১১ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

পরে অর্থ বিভাগ থেকে পাঠানো নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপির আকার দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণপূর্বক কার্যক্রম বিভাগকে অবহিত করা হয়। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন এক লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা বা ৬২ দশমিক ২৬ শতাংশ। উন্নয়ন ব্যয় মেটাতে বৈদেশিক ঋণ-অনুদানের টার্গেট এক লাখ কোটি টাকা বা ৩৭ দশমিক ৭৪ শতংশ। 

২০২৩-২৪ অর্থবছরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এডিপিতে এক অর্থবছরের ব্যবধানে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বাড়ছে ১৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

সরকার নতুন উন্নয়ন বাজেটে পরিবহন ও বিদ্যুৎ খাত সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত এডিপির আকার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল এডিপি অপেক্ষা দুই হাজার কোটি টাকা বা দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি এবং সংশোধিত এডিপি অপেক্ষা ২০ হাজার কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি।

বেশ কয়েক বছর ধরে পরিবহন খাত বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। এটি ভালো দিক। কারণ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চলমান। বিদ্যুৎ খাতও আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।- অর্থনীতিবিদ ড. মির্জা আজিজুল ইসলাম

নতুন এডিপি নিয়ে মঙ্গলবার (৭ মে) পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি’ শীর্ষক বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পরিকল্পনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব সত্যজিত কর্মকারকে পাওয়া যায়নি।

তবে বর্ধিত সভা প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) খন্দকার আহসান হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ওপর বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নতুন এডিপিতে কোন কোন বিষয় অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে পরে আলাপ হবে।’

উন্নয়ন বাজেটে সর্বাধিক গুরুত্ব ১৫ খাতে

নতুন এডিপির আকারের মধ্যে ১৫টি খাতের আওতাভুক্ত মোট ৫৭টি মন্ত্রণালয়-বিভাগ/বাজেট এনটিটির প্রকল্পসমূহের অনুকূলে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দুই লাখ ৫৮ হাজার ৬৭১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি এক লাখ ৬৪ হাজার কোটি এবং প্রকল্প ঋণ অনুদান ৯৪ হাজার ৬৭১ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

উন্নয়ন ব্যয় মেটাতে সরকারের বৈদেশিক ঋণের টার্গেট লাখ কোটি টাকা

এছাড়া ১০টি উন্নয়ন সহায়তা খাতে মোট বরাদ্দের পরিমাণ ৯ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের অনুকূলে প্রস্তাবিত বরাদ্দ ১৩ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নসহ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত এডিপির মোট আকার দাঁড়ায় দুই লাখ ৭৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা।

সর্বোচ্চ গুরুত্ব বিদ্যুৎ-পরিবহন খাতে

নতুন এডিপিতে বিদ্যুৎ ও পরিবহন খাত সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে মোট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, যা মোট এডিপির ২৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৪০ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। শিক্ষাখাতে ৩১ হাজার ৫২৮ এবং স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ২০ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা।

এছাড়া নতুন এডিপিতে সাধারণ সরকারি সেবা খাতে দুই লাখ ১৩৩ কোটি, প্রতিরক্ষা খাতে ৭১০ কোটি, জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষা খাতে তিন হাজার ৩০৮ কোটি এবং শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৬ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে। পাশাপাশি কৃষিখাতে ১৩ হাজার ২২০ কোটি, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি; পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ খাতে ১১ হাজার ৮৯ কোটি, গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধাবলি খাতে ২৪ হাজার ৬৮২ কোটি; ধর্ম, সংস্কৃতি ও বিনোদন খাতে ৩ হাজার ৪৯১ কোটি; বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৪ হাজার ৭৮৬ কোটি এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতে তিন হাজার ৩০৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।

নতুন এডিপিতে সাধারণ সরকারি সেবা খাতে দুই লাখ ১৩৩ কোটি, প্রতিরক্ষা খাতে ৭১০ কোটি, জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষা খাতে তিন হাজার ৩০৮ কোটি এবং শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৬ হাজার ৪৯২ কোটি এবং কৃষিখাতে ১৩ হাজার ২২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে

নতুন এডিপিতে এক লাখ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণের টার্গেট প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. মির্জা আজিজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ঋণের টাকা কোন প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে এটিই দেখার বিষয়। কোন প্রজেক্টে ঋণের কত টাকা ব্যবহার হবে, কী পরিমাণে আয় হবে এগুলোও দেখতে হবে।

‘সময়মতো প্রকল্পগুলো সমাপ্ত করে যদি সঠিক আউটপুট পাওয়া যায় তবে বৈদেশিক ঋণ নিয়ে চিন্তার কোনো বিষয় নেই। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ নিয়ে যদি প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করা না হয় তাহলেই চিন্তা বাড়বে। তবে ঋণের বোঝা বাড়ছে। ঋণের টাকা সঠিক প্রকল্পে সঠিকভাবে খরচ করলে সমস্যা নেই।’

বিদ্যুৎ-পরিবহন খাতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে পরিবহন খাত বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। এটি ভালো দিক। কারণ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চলমান। বিদ্যুৎ খাতও আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ গুরুত্ব স্থানীয় সরকারে

নতুন এডিপিতে স্থানীয় সরকার বিভাগে সর্বোচ্চ বরাদ্দ ৩৮ হাজার ৮০৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এরপরই সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে ৩২ হাজার ৪২ কোটি, বিদ্যুৎ খাতে ২৯ হাজার ১৭৬ কোটি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ১৬ হাজার ১৩৫ কোটি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ১৩ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।

এছাড়া রেলপথ বিভাগে ১৩ হাজার ৭২৫ কোটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে ১২ হাজার ৮৮৬ কোটি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি, নৌপরিবহনে ১০ হাজার ৩৭৩ কোটি ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ৮ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

উন্নয়ন ব্যয় মেটাতে সরকারের বৈদেশিক ঋণের টার্গেট লাখ কোটি টাকা

নতুন এডিপিতে ১২২৩ প্রকল্প অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে প্রাপ্ত এক হাজার ৮৯৪টি অননুমোদিত নতুন প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে এক হাজার ২২৩টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এসব অননুমোদিত নতুন প্রকল্প পরবর্তীসময়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমোদিত হলে বা চলমান প্রকল্পে অতিরিক্ত অর্থের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে সেসব প্রকল্পে এডিপি থেকে অর্থায়ন করা হয়। সে লক্ষ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত এডিপিতে বিভিন্ন খাতের আওতায় মন্ত্রণালয়/বিভাগভিত্তিক ‘থোক বরাদ্দ’ বাবদ ১৬ হাজার ৮৭২ কোটি ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্পের বরাদ্দ

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত এডিপিতে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প ৭৯টি এবং জিওবি ও প্রকল্প সাহায্যের পাশাপাশি সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের অংশীদারত্ব রয়েছে এমন ১০২টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব প্রকল্পের অনুকূলে মোট ১৩ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন অর্জনের জন্য বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০, বাংলাদেশের উন্নয়ন রূপকল্প-২০৪১, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১), অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (জুলাই ২০২০-জুন ২০২৫), জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এসডিজি) ও বিদ্যমান বিভিন্ন নীতিমালার আলোকে অগ্রাধিকার খাতসমূহে পর্যাপ্ত সম্পদ বরাদ্দ দেওয়া হবে।

এর মাধ্যমে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্য হ্রাস তথা জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা তথা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলা ইত্যাদিসহ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে উত্তরণের লক্ষ্য সামনে রেখে এডিপি প্রণয়ন করা হয়।

অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে খাদ্যনিরাপত্তার লক্ষ্যে কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, বিদ্যুৎ খাত, শ্রমশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাসকরণ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, অতিবৃষ্টি ইত্যাদির ক্ষয়ক্ষতি পুনর্বাসন সংক্রান্ত প্রকল্পে বরাদ্দ প্রদানে অগ্রাধিকার দিতে হবে

এ লক্ষ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপি প্রণয়নের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এডিপি প্রণয়নকালে অন্য বিষয়গুলোর মধ্যে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, খাদ্যে স্বয়ংম্ভরতা বজায় রাখা, কৃষি উন্নয়ন ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণ, স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, অপরাধ দমন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানি সরবরাহ, মানসম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থা (প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও বৃত্তিমূলক), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক কর্মসূচির প্রসার ও উন্নয়ন এসব ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে।

অন্য বছরগুলোর মতো বর্তমান বছরেও বিশ্ব অর্থনীতির সাম্প্রতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট বৈশ্বিক অভিঘাত মোকাবিলা করে সীমাবদ্ধ দেশজ সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখার লক্ষ্যে এডিপি প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপি প্রণয়নে সাধারণ নির্দেশনাসমূহ

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপি প্রণয়নে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়। সেখানে যেসব নির্দেশনা অনুসরণ করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- শুধু অনুমোদিত প্রকল্প এবং এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এমন প্রকল্প বরাদ্দসহ এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। নতুন অনুমোদিত প্রকল্প অনুমোদন আদেশ ও প্রশাসনিক আদেশ জারিসহ সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্তি ব্যতীত এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। অর্থাৎ, নতুন অনুমোদিত প্রকল্পের অনুমোদন আদেশ ও প্রশাসনিক আদেশ সংযুক্তিসহ বরাদ্দ প্রস্তাব করতে হবে।

এডিপিতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে খাদ্যনিরাপত্তার লক্ষ্যে কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, বিদ্যুৎ খাত, শ্রমশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাসকরণ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, অতিবৃষ্টি ইত্যাদির ক্ষয়ক্ষতি পুনর্বাসন সংক্রান্ত প্রকল্পে বরাদ্দ প্রদানে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এছাড়া সবুজ ও জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলা সম্পর্কিত প্রকল্পসমূহকে বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রাধিকার দিতে হবে।

উন্নয়ন ব্যয় মেটাতে সরকারের বৈদেশিক ঋণের টার্গেট লাখ কোটি টাকা

মেগা প্রকল্প এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত প্রকল্পে বরাদ্দের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এনইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আরএডিপিতে ‘সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত’ তালিকাভুক্ত কোনো প্রকল্প ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে না। এডিপি বরাদ্দের জিওবি অংশে নগদ বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন হলে নির্ধারিত স্থানে বরাদ্দ প্রস্তাব করতে হবে।

এছাড়া চলমান প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে ইকোনমিক কোড সাব-কোডভিত্তিক চাহিদা প্রস্তাব পাঠাতে হবে এবং মোট রাজস্ব ও মূলধন পূর্ণ লাখ টাকায় নির্ধারিত হবে। বৈদেশিক অর্থায়ন, নগদ বৈদেশিক মুদ্রা এবং পুনর্ভরণযোগ্য বৈদেশিক অর্থায়নের যাবতীয় হিসাব ইআরডি থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ বিনিময় হারে করতে হবে। পাশাপাশি বৈদেশিক অর্থায়ন বরাদ্দের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত বরাদ্দই (প্রকল্পের প্রাপ্যতা বিবেচনায়) চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

News Source
 
 
 
 
Today's Other News
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved