একই মালিকানাধীন চারটি প্রতিষ্ঠান। চারটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা
পরিচালক ‘একজনই’। তিনি আবার চার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এক প্রতিষ্ঠানের
‘ইনভেস্টর’ দেখিয়ে ‘ওয়ার্ক পারমিট’ নিয়েছেন। ওয়ার্ক পারমিটে একটি
প্রতিষ্ঠানে নামমাত্র বেতন-ভাতা দেখিয়েছেন। বাকি তিন প্রতিষ্ঠান থেকে কত
টাকা বেতন-ভাতা নেন, তার কোনো হিসাব নেই। মূলত কর ফাঁকি দিতে নামমাত্র
বেতন-ভাতা দেখিয়েছেন। চার প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া টাকা পাচার করেছেন। শুধু
ব্যবস্থাপনা পরিচালক নয়, চারটি প্রতিষ্ঠানের অন্য বিদেশি নাগরিকরা একই কাজ
করে আসছেন। এখানেই শেষ নয়, যন্ত্রাংশ আমদানি করে তা সংযোজন করে মোবাইল ফোন
সেট বাজারজাত করার জন্য সরকার করছাড়ের সুবিধা দিয়েছে। এতে একদিকে দেশে
কর্মসংস্থান হবে, অন্যদিকে দেশে কারখানা গড়ে উঠবে। কিন্তু সেই সুবিধারও
অপব্যবহার করা হচ্ছে।
চার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে যন্ত্রাংশ আমদানি করা
হয়। সেই যন্ত্রাংশ সংযোজন করে পূর্ণাঙ্গ ফোন সেট তৈরি করা হয়। করছাড়ের
কারণে সেটের দাম কম হওয়ার কথা। কিন্তু তিন প্রতিষ্ঠানের সংযোজিত করে তৈরি
করা সেট অপর প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়। আর মোবাইল সেট বিক্রি করে আমদানি
করা পূর্ণাঙ্গ মোবাইল সেটের দামের চেয়ে বেশি দামে। এতে একদিকে ক্রেতারা
আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে সরকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না।
বাংলাদেশে কারখানা নির্মাণে সরকার সব সুবিধা দিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, দেশের
শ্রম আইনসহ সব আইনকানুন মেনে কারখানা পরিচালনা করা হবে। কিন্তু দেশের শ্রম
আইনের তোয়াক্কা না করেই নিজেরা আইনকানুন তৈরি করেছে, যা দিয়ে শ্রমিকদের
হয়রানি করা হচ্ছে। রয়েছে যৌন হয়রানির মতো অভিযোগও। মোবাইল ফোন ব্র্যান্ড
‘অপো’ ও ‘রিয়েলমির’ বিরুদ্ধে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এমন সব ভয়াবহ অভিযোগ উঠে
এসেছে। চারটি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিলসহ পাঁচটি সুপারিশ করা হয়েছে
প্রতিবেদনে।
এনবিআর সূত্রমতে, অপো ও রিয়েলমির চারটি প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধান করে
বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবকে পাঠানো হয়। সুরক্ষা সেবা বিভাগকে প্রতিবেদনটি
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (বিডা) পাঠানো হয়। সম্প্রতি বিডা
ব্যবস্থা নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে প্রতিবেদনটি
পাঠানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপো বাংলাদেশের চারটি কোম্পানি রয়েছে। চারটি
কোম্পানি হলোÑবাংলাদেশ কমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্ট কোং (অপো), হাগুয়াং
ইলেকট্রনিক ডিস্ট্রিবিউশন কোং, ডাওসেং এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট কোং ও
বেনলি ইলেকট্রনিক এন্টারপ্রাইজ কোং। অপো বাংলাদেশ কমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্ট
কোং ২০১৪ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৯ সালে, অর্থাৎ কার্যক্রম
শুরুর পাঁচ বছর পর কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ কমিউনিকেশন
ইক্যুইপমেন্ট কোং লিমিটেড’ রাখা হয়। এ নামে জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে
নিবন্ধন নেয়া হয়েছে। চীনা ব্র্যান্ডের অপো মোবাইলের মালিক বা চেয়ারম্যান
হুন জিয়াংরি (ঐঁধহ তরধহমৎরব), ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়া
হুজিয়ান (ণর ঐধরলঁহ) ও ইয়ান ঝেন (ণধহম তযবহ)। সূত্রমতে, আলোচিত সেই
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়ান ঝেন বর্তমানে বাংলাদেশে নেই। বর্তমানে অপো
বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ডেমন ইয়ান।
প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চেয়ারম্যান হুন
জিয়াংরির নামে ‘বাংলাদেশ কমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্ট কোং লিমিটেড’ ও ‘বাংলাদেশ
কমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্ট কোং লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠান দুটির ট্রেড লাইসেন্স
নেয়া হয়েছে। ট্রেড লাইসেন্সে ব্যবসার ধরন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘মোবাইল
ফোন ও অ্যাকসেসরিজ আমদানি ও সরবরাহকারী’। এছাড়া হাগুয়াং ইলেকট্রনিক
ডিস্ট্রিবিউশন কোংয়ের ঠিকানা দেয়া হয়েছে ১৪৪, পুলিশ প্লাজা কনকর্ড,
টাওয়ার-বি, ফ্লোর-৯, গুলশান-১, ঢাকা। বাংলাদেশ কমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্ট
কোংয়েরও একই ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। হাগুয়াং ইলেকট্রনিক ডিস্ট্রিবিউশন
কোংয়ের ট্রেড লাইসেন্স নেয়া হয়েছে চীনের নাগরিক পিং কাং ঝুনেন (চরহম কধহম
তযঁধহম) নামে নেয়া হয়েছে। ইয়ান ঝেন বাংলাদেশ কমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্ট
কোংয়ের মতো হাগুয়াং ইলেকট্রনিক ডিস্ট্রিবিউশন কোংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
হিসেবে কর্মরত। হাগুয়াং ইলেকট্রনিক ডিস্ট্রিবিউশন ২০২১ সালে জয়েন্ট স্টকে
নিবন্ধিত হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের কাজ কী এবং কী উদ্দেশ্যে কোম্পানি খোলা
হয়েছে, তা কোথাও উল্লেখ করেনি। তবে এই দুটি প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড হলো
‘অপো’। দুটি প্রতিষ্ঠান বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এছাড়া যেকোনো এক
প্রতিষ্ঠানের নামে ন্যূনতম বেতন দেখিয়ে দুটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম
পরিচালনা করা হচ্ছে। দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও অফিস একই।
অপোতে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরা মিথ্যা তথ্য দিয়ে কর ফাঁকি দিচ্ছে বলে
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চীনের নাগরিক ওয়াং লি
(ডধহম খব), যার পাসপোর্ট নং-ঊ৫ে৮১৯০৬৬। তিনি টেকনিশিয়ান হিসেবে ওয়ার্ক
পারমিট নিয়ে কাজ করছেন। ওয়ার্ক পারমিট অনুযায়ী, তার মূল বেতন ৭২ হাজার ২৫০
টাকা। অথচ তার প্রকৃত পদ ডিরেক্টর লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স। এই পদে সমশ্রেণির
প্রতিষ্ঠানে একজন বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশি টাকায় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা
বেতন-ভাতাদি গ্রহণ করেন। এতে প্রমাণিত হয়, প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরতরা মিথ্যা
তথ্য দিয়ে অবৈধভাবে কাজ করেন এবং বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকি দিয়েছেন। আবার ইয়ান
ঝেন ওয়ার্ক পারমিট নিয়েছেন ‘ইনভেস্টর’ হিসেবে। কিন্তু তিনি প্রতিষ্ঠানের
ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত। ওয়ার্ক পারমিট অনুযায়ী, তার মূল বেতন
দেখানো হয়েছে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা। অথচ তার বেতন কয়েক লাখ টাকা। কর
ফাঁকি দিতে তিনি ন্যূনতম বেতন দেখিয়েছেন। ইয়ান ঝেনের জালিয়াতির এখানেই শেষ
নয়। ইয়ান ঝেন বাংলাদেশ কমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্ট কোং ও হাগুয়াং ইলেকট্রনিক
ডিস্ট্রিবিউশন কোংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। কিন্তু তিনি কেবল বাংলাদেশ
কমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্ট নামক প্রতিষ্ঠানের নামে ওয়ার্ক পারমিট নিয়েছেন।
আবার তিনি দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-ভাতা নেন, তা
নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানে বলা হয়েছে, ডাওসেং এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্টের ঠিকানা ও
আগের দুটি প্রতিষ্ঠানের একই ঠিকানা। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ সালে জয়েন্ট স্টক
কোম্পানিতে নিবন্ধিত। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান চীনের নাগরিক লিউ দাহু
(খরঁ উধড়যঁ)। ডাওসেং এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট কোংয়ের মোবাইল ফোন ব্র্যান্ড
রিয়েলমি। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বাংলাদেশ কমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্ট কোং
লিমিটেড (অপো), হাগুয়াং ইলেকট্রনিক ডিস্ট্রিবিউশন কোং লি. এবং ডাওসেং
এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট কোং লিমিটেডের মালিকানা ও অফিস একই। এই তিনটি
প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরা এক প্রতিষ্ঠানের ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে
বাকি দুই প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। এতে বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকি দেয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে বেনলি ইলেকট্রনিক এন্টারপ্রাইজ কোংয়ের ঠিকানা প্লট-৯০৯, চৌধুরী
কমপ্লেক্স, ভগরা, গাজীপুর সদর, গাজীপুর। এই প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স
পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্স নেয়া হয়েছে সেই
আলোচিত ইয়ান ঝেনের নামে। এতে ব্যবসার ধরন উল্লেখ করা হয়েছেÑস্মার্ট ফোন
সংযোজন, অ্যাসেম্বিলিং, পরিবেশক, আমদানি ও রপ্তানিকারক। এই প্রতিষ্ঠানটিও
২০১৯ সালে জয়েন্ট স্টকে নিবন্ধিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
হিসেবে রয়েছেন ইয়ান ঝেন। অর্থাৎ আগের তিন প্রতিষ্ঠানের মতো ইয়ান ঝেন এই
প্রতিষ্ঠানেরও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। অনুসন্ধান বলছে, আগের তিনটি
প্রতিষ্ঠানের (বাংলাদেশ কমিউনিকেশন ইক্যুইপমেন্ট কোং লিমিটেড (অপো),
হাগুয়াং ইলেকট্রনিক ডিস্ট্রিবিউশন কোং লি. এবং ডাওসেং এন্টারপ্রাইজ
ডেভেলপমেন্ট কোং লিমিটেড) মোবাইল সেট বেনলি ইলেকট্রনিক এন্টারপ্রাইজ কোং
লিমিটেডে সংযোজিত হয়ে আলাদা আলাদা ব্র্যান্ডে বাজারে সরবরাহ করা হয়। বিদেশ
থেকে স্পেয়ার পার্টস বা যন্ত্রাংশ আমদানি করে সংযোজন করা হয়। সংযোজিত সেট
বা মোবাইল ফোন যন্ত্রাংশের মতোই কর না বসিয়ে আমদানি করা সম্পূর্ণ সেটের
করারোপ করে দেশের বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ উচ্চ মূল্যে
মোবাইল ফোন সেট কিনতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু সরকার এ থেকে কোনো রাজস্ব পাচ্ছে
না। এতে বছরে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে অপো ও রিয়েলমি।
এছাড়া বাংলাদেশের শ্রম আইনের তোয়াক্কা করে না অপো ও রিয়েলমির এই চার
প্রতিষ্ঠান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি শ্রমিকদের স্বার্থ বিবেচনা
করে নিজেদের মতো করে মনগড়া ‘রুলস’ ও ‘রেগুলেশন’ তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে
শ্রমিকদের কথায় কথায় কৈফিয়ত তলব, ছুটি না দেয়া, ওভার টাইম না দিয়ে অতিরিক্ত
কাজ করানো, প্রতিবাদ করলে বরখাস্ত করা প্রভৃতি কার্যক্রম পরিচালনা করে
আসছে। অপোর পাবলিক রিলেশন ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন এক নারী। তাকে
প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানিসহ নানা কারণে প্রতিবাদ করায় বরখাস্ত করা হয়েছে। পরে
তিনি ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিষ্ঠান বরাবর লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন। এসব
কার্যক্রম ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চীনের নাগরিক তিয়ান মিনগুইয়ের (ঞরধহ
গরহময়ঁর) প্রস্তুত করা বিধিমালা অনুসারে করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ
করা হয়েছে।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চারটি প্রতিষ্ঠানের একই মালিক। এছাড়া
চারটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়ান ঝেন। বাংলাদেশে
ব্যবসার কোনো নিয়ম-নীতি ও প্রচলিত শ্রমনীতির তোয়াক্কা না করেই ব্যবসা
পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরা আয়কর
ফাঁকি দিতে প্রকৃত পদবি ব্যবহার না করে ‘টেকনিশিয়ান’ হিসেবে ‘ওয়ার্ক
পারমিট’ গ্রহণ করেছেন। স্পেয়ার পার্টস বা খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি করে
সংযোজনের মাধ্যমে মোবাইল ফোন সেটে রূপান্তর করে আমদানি করা পূর্ণ মোবাইল
সেটের অনুরূপ দাম নির্ধারণ করে দেশের বাজারে অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে
সাধারণ ক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে।
অপো ও রিয়েলমির এসব অনিয়ম রোধে প্রতিবেদনে চারটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নিতে পাঁচটি সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমে রয়েছে অপোর চারটি
প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিল করা। দ্বিতীয়ত, প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিদেশি
নাগরিকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া, এক পদে কার্যানুমতি গ্রহণ করে অন্য পদে কর্মরত
থাকা, কার্যানুমতি অনুযায়ী বেতন ও অন্য বিষয়গুলো যথাযথভাবে প্রতিপালন হচ্ছে
কি না, তা বিডা কর্তৃক নিশ্চিত করা। তৃতীয়ত, ভিসা নীতিমালা পরিপন্থি কাজে
জড়িত থাকায় ইয়ান জিন, ওয়াং লিÑএই দুজনের ভিসা বাতিল করার প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা করা। চতুর্থত, প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃক হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ
পাচারের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অভিযান বা অনুসন্ধান পরিচালনা করা।
পঞ্চমত, প্রতিষ্ঠানগুলো এবং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরা যেন আয়কর
ফাঁকি দিতে না পারেন, সেজন্য এনবিআর কর্তৃক নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
অন্যদিকে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অপো বাংলাদেশের বর্তমানে ব্যবস্থাপনা
পরিচালক ডেমন ইয়ানের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বরে ফোন করা হলে তিনি জানান
(ভাষাগত সমস্যার কারণে) তাদের কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্ট যোগাযোগ করবে। ডেমন
ইয়ানের হয়ে মাস্টহেড পিআর কর্মকর্তা কবির হোসেনের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের
সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ বিষয়ে ৬ মে মাস্টহেডের আরেক কর্মকর্তা আফসারা
তাসনিমকে বক্তব্যের বিষয় লিখে ই-মেইল করা হয়েছে। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার
পর্যন্ত তাদের কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।