এশিয়ার দেশ কিরগিজস্তান। সেখানে গাড়ি ধোয়ার কাজে মাসে বেতন ৬০-৬৫ হাজার টাকা, থাকা-খাওয়াও কোম্পানির। দেশটিতে যাওয়ার খরচও কম। দেশের দরিদ্র মানুষদের এমন প্রলোভন দেখিয়ে কিরগিজস্তানে পাঠানোর নাম করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি মানব পাচারকারী চক্র। ওই পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ‘জান্নাত ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত সোমবার রাজধানীর পল্টন থেকে তাদের আটক করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন ট্রাভেল এজেন্সির মালিক ইব্রাহীম মল্লিক নাহিদ (৩৫), শারমিন হোসেন লাবণী (৩৬) ও আরিফুর রহমান সাদী (২৪)।

গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. আজাদ রহমান।

তিনি আরও জানান, রিকশাচালক মোহাম্মদ সোনা মিয়া নামে এক ব্যক্তি ইউটিউবে ‘জান্নাত ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে দেখতে পান ৫ লাখ টাকায় গাড়ি ধোয়ার ওয়ার্কিং ভিসায় কিরগিজস্তানে লোক নেওয়া হবে। বেতন হবে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা এবং খাওয়া নিজের, থাকা কোম্পানির। এতে আকৃষ্ট হয়ে তিনি প্রতিষ্ঠানটির নয়াপল্টনের অফিসে যোগাযোগ করে টাকা জমা দেন। সোনা মিয়া ছাড়াও মো. আকাশ শেখ (২১) ও মো. আকতার সরদার (২৩) নামে আরও দুজন টাকা দেন। প্রতিষ্ঠানটি তাদের কিরগিজস্তান যাত্রার কথিত ভিসা ও বিমানের টিকিট দেয়। তবে ভিসার কপি ও বিমানের টিকিট নিয়ে গত ৭ এপ্রিল কিরগিজস্তানে যাওয়ার জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে ইমিগ্রেশন পুলিশ অনলাইনে তাদের ভিসার তথ্য না পেয়ে যাত্রা স্থগিত করে। পরে তারা জান্নাত ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো সদুত্তর না পেয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন।


সিআইডি মামলাটির তদন্ত করে জান্নাত ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্সির মালিক ইব্রাহীম মল্লিক নাহিদসহ আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তাররা এর আগে যাদের অভিবাসী কর্মী হিসেবে কিরগিজস্তানে পাঠিয়েছেন তাদের অধিকাংশই সেখানে মানব পাচারের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান সিআইডির এ কর্মকর্তা।