[ শেষের পাতা ] 23/03/2022
 
শেয়ারবাজারে বড় উত্থান বেড়েছে লেনদেন
টানা দুই কার্যদিবস দরপতনের পর গতকাল মঙ্গলবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সব ক’টি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সাথে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন।

এ দিন লেনদেন শুরু হতেই বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়ে যায়। এতে লেনদেনের প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় গড়ানোর সাথে সাথে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বাড়তে থাকে।

ঢালাও পতন থামার ইঙ্গিতটা ছিল আগের দিনের শেষ বেলাতেই। পরের দিন সেটি সত্য প্রমাণ হলো। এক দিনে বেড়েছে আড়াইশর বেশি কোম্পানির শেয়ারদর। দল বেঁধে সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে দর হারানোর চিত্রও দেখা গেছে কম।

একদিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আবার ১০ শতাংশ করা হচ্ছেÑ এমন তথ্যে রোববার দেখা দেয় ঢালাও দরপতন। ৩৩২টি কোম্পানির শেয়ার দর হারায় একদিন। এর মধ্যে দেড় থেকে দুইশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমে এক দিনে যতটা কমা সম্ভব ততটাই। আবার এই সর্বনি¤œ দামেও শেয়ারের ক্রেতা ছিল না বললেই চলে।

সেদিন সূচক কমে ৬৭ পয়েন্ট। আর লেনদেন নেমে আসে ১১ মাসের সর্বনিতে। তবে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে জানানো হয়, দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা আবার ১০ শতাংশ করার বিষয়ে এখনই কোনো পরিকল্পনা নেই।

পরের দিন লেনদেন শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে থেকে আতঙ্ক কিছুটা কমতে দেখা যায়। দিনের শুরুতে সূচক অনেকটা হারিয়ে ফেললেও শেষ বেলায় সেখান থেকে অনেকটাই উদ্ধার হয়। আবার শেষ এক ঘণ্টায় গতি পায় লেনদেনেও। এ কারণে দিন শেষে ৬ পয়েন্ট সূচক কমলেও বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আশা ফিরে আসে।

মঙ্গলবার লেনদেন শুরুই হয় সূচক বেড়ে। বেলা যত গড়িয়েছে, সূচকে তত বেশি পয়েন্ট যোগ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আগের দুই দিনে সূচক যতটা কমেছিল, তার চেয়ে বেশি ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয়েছে লেনদেন।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার ৭৭১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৩টির। আর ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪৩টির দাম বেড়েছে তিন শতাংশের ওপরে। এর মধ্যে দুটির শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে।

সূচকের বড় উত্থানের দিনে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯৫৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৩৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৩২২ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আমরা টেকনোলজির ৩৪ কোটি ১৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৪ কোটি ৯৮ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভিএফএস থ্রেড ডাইং।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ সোনালি পেপার, ওরিয়ন ফার্মা, বিডিকম অনলাইন, ড্রাগন সোয়েটার, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও আমরা নেটওয়ার্ক।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৯৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৮ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৮৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৭টির এবং ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।