গত কয়েক বছরে ফুলে ফেঁপে উঠেছে কানাডার হাউজিং
মার্কেট। গত দু’বছরে বাড়ির দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। এর পেছনে দায়ী করা
হচ্ছে বাইরে থেকে দেশটিতে পাচার হওয়া অবৈধ অর্থকে। কালো টাকাকে সাদা করতে
বিভিন্ন দেশের দুর্নীতিবাজদের অন্যতম পছন্দ কানাডায় বাড়ি কেনা। এবার তা
থামাতে আগামী দুই বছর বিদেশিদের কাছে বাড়ি বিক্রি বন্ধে নতুন আইন করার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডা। আশা করা হচ্ছে, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে কমে
আসবে কানাডার বাড়ির মূল্য। এ খবর দিয়েছে ব্লুমবার্গ। এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি
সামনে আসায় আলোচনায় এসেছেন এক শ্রেণির বাংলাদেশিরাও। বিবিসি বাংলার এক
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, কানাডার হাউজিং খাতের এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির
পেছনে এক শ্রেণির বাংলাদেশির অবদান রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সে
দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী প্রবাসীদের বাইরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি
নগদ অর্থ দিয়ে বাড়ি কিনেছেন বলে এর আগে সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, এসব সম্পত্তির অনেকগুলোই কেনা হয়েছে
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া দুর্নীতির অর্থ দিয়ে।
ওদিকে
ব্লুমবার্গের খবরে বলা হয়েছে, অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের
বাজেটে স্থান পাচ্ছে এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি। এরমধ্য দিয়ে উন্নত বিশ্বের
কোনো দেশের ব্যয়বহুল হাউজিং মার্কেটকে বশে আনতে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন
ট্রুডোর কঠোর অবস্থান প্রকাশ পেয়েছে। হাউজিং-এর খরচ ও ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে
এরইমধ্যে চাপে রয়েছে তার সরকার। নতুন এই পদক্ষেপ থেকে স্পষ্ট যে, ট্রুডো এই
রাজনৈতিক চাপকে গুরুত্বের সঙ্গেই নিচ্ছেন।
তবে
এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকছেন বিদেশি শিক্ষার্থী ও কর্মীরা। এ ছাড়া যেসব
বিদেশির কানাডার নাগরিকত্ব আছে এবং দেশটির স্থায়ী বাসিন্দা তারা, তাদের
ওপরও থাকছে না বাড়ি কেনার নিষেধাজ্ঞা। রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম
আরইস্থির কর্মকর্তা সিমিয়ন ফিলিপস ব্লুমবার্গকে বলেন, কানাডার হাউজিং খাতের
ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা এখন চলছে। তাই, সরকারের এই পদক্ষেপের পর
সেই প্রতিযোগিতায় হয়তো কিছুটা ভাটা পড়বে, কিন্তু বাড়ির দাম কমবে বলে আমি
মনে করি না। দুই বছরের এই নিষেধাজ্ঞা মৌলিক সমস্যাকে নির্মূল করতে পারবে
না।
ব্লুমবার্গ
বলছে, কানাডার হাউজিং ব্যয় এত বৃদ্ধির পেছেন দায়ী করা হয় ব্লাইন্ড
বিডিংকেও। দেশটিতে একটি পদ্ধতি রয়েছে যাতে যে কেউ অর্থের পরিমাণ গোপন রেখে
নিলামের মাধ্যমে বাড়ি কিনতে পারেন। এ কারণে যার কাছে অর্থ রয়েছে সে বাজারের
দামের তুলনায় লাখ লাখ ডলার বেশি দিয়েও বাড়ি কিনছেন। তবে এবার এই পদ্ধতি
বাতিল চায় কানাডিয়ান রিয়াল স্টেট এসোসিয়েশন।