[ প্রথম পাতা ] 17/04/2022
 
টাটার পরে ভারী মৌলিক শিল্পে বড় বিনিয়োগ প্রস্তাব আর আসেনি
দেশে ভারী মৌলিক শিল্পের ইতিহাসে বৃহত্তম বিদেশী বিনিয়োগের প্রস্তাবটি এসেছিল ভারতের টাটা গ্রুপের কাছ থেকে। প্রায় দুই দশক আগে দেয়া ওই প্রস্তাবে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা চেয়েছিল টাটা গ্রুপ। জ্বালানি সংকটের কারণে টাটার প্রস্তাব নিয়ে দীর্ঘদিন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছে বাংলাদেশ। একপর্যায়ে কনগ্লোমারেটটি এ প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেয়। এর পর থেকে আজ পর্যন্ত দেশের ভারী মৌলিক শিল্প খাতে বিদেশী বিনিয়োগের আর কোনো বড় প্রস্তাব পায়নি বাংলাদেশ।

টাটার বিনিয়োগ প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন হলে দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ অনেকটাই অন্য রকম হতে পারতো বলে ধারণা খাতসংশ্লিষ্টদের। বাংলাদেশও প্রস্তাবটিকে শুরুতে আগ্রহের সঙ্গেই গ্রহণ করেছিল। ওই সময় টাটার প্রস্তাবটি গৃহীত হলে তা হতো দেশের ইতিহাসের বৃহত্তম বিদেশী বিনিয়োগ। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের অনেকেই পরবর্তী সময়ে দেশের ভারী মৌলিক শিল্প খাতে বড় বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। এ মুহূর্তে তাদের জন্যও বড় সমস্যার কারণ হয়ে উঠেছে জ্বালানির সংকট।

টাটার কাছ থেকে ২০০৪ সালে প্রথম বৃহৎ বিনিয়োগের প্রস্তাব পায় বাংলাদেশ। প্রস্তাবে সার, ইস্পাত ও বিদ্যুৎ খাতে মোট ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে টাটা গ্রুপ। ওই বছরের অক্টোবরে এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সরকারের প্রাথমিক একটি সমঝোতাও হয়েছিল। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার পর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ভিত্তিতে ২০০৬ সালের এপ্রিলে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ তোলা হয় ৩০০ কোটি ডলারে।

শুরুতে আগ্রহ দেখালেও বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছে বাংলাদেশ। জ্বালানি অনিশ্চয়তার কারণে টাটার বিনিয়োগ প্রস্তাবে পুরোপুরি সবুজ সংকেত দেয়া সম্ভব হয়নি। প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ায় একপর্যায়ে বিনিয়োগ পরিকল্পনা স্থগিত করে দেয় টাটা কর্তৃপক্ষ। এরপর ২০০৮ সালে বিষয়টি নিয়ে আবার আলোচনা শুরু হলেও সিদ্ধান্তহীনতার গণ্ডি কেটে বেরোতে পারেনি বাংলাদেশ। এরপর ওই বছরের জুলাইয়ে বিনিয়োগ প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেয় টাটা। এর পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ভারী মৌলিক শিল্পে আর কোনো বড় বিদেশী বিনিয়োগ প্রস্তাব আসেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে এফডিআই স্টকের পরিমাণ ১ হাজার ৯৯৪ কোটি ডলারের কিছু বেশি। এটি মূলত গড়ে উঠেছে বিদেশী কোম্পানিগুলোর পুনর্বিনিয়োগ ও আন্তঃকোম্পানি ঋণের অর্থে ভর করে। এর মধ্যে গ্রিনফিল্ড বা আনকোরা নতুন বিনিয়োগের পরিমাণ একেবারেই যৎসামান্য।

দেশের সার্বিক বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য জ্বালানি সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, জ্বালানি নিশ্চয়তা দেশী ও বিদেশী উভয় ধরনের বিনিয়োগকারীর জন্যই জরুরি। আমরা অনেকদিন ধরে বলে আসছি যে আমাদের একটি দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি রোডম্যাপ দরকার। কোথায় বিনিয়োগ করলে জ্বালানি পাওয়া যাবে, কীভাবে পাওয়া যাবে তা সুনির্দিষ্ট করেই রোডম্যাপ করতে হবে। আমাদের প্রাকৃতিক গ্যাস তিন বছর পরে নাও থাকতে পারে। তখন কী হবে? সব মিলিয়েই রোডম্যাপ থাকতে হবে। এটা থাকলে দেশী-বিদেশী সব বিনিয়োগকারীই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতেন। দেশে বিনিয়োগের পরিবেশটিও অনেকটাই বদলে যেতে পারত।

বিনিয়োগসংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানি অনিশ্চয়তার কারণে বৃহৎ বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করা যাচ্ছে না। এতে দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ ও সংস্কৃতিরও উন্নয়ন ঘটছে না। দেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে টাটার প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ অনেকটাই বদলে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হতো। অন্যান্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদেরও দেশের ভারী মৌলিক শিল্পে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার মতো উদাহরণ তৈরি হতো।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, টাটার বিনিয়োগ আগ্রহের বিষয়টি অনেক পুরনো। বর্তমানে যে বড় বিনিয়োগ প্রকল্পগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সেখানেও জ্বালানি নিশ্চয়তার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। সরকারও এ বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছে। বাংলাদেশের পরবর্তী ধাপের উন্নয়নের জন্য বিদেশী বিনিয়োগের গুরুত্ব অনেক। মোট জিডিপির খুব সামান্য অংশজুড়ে রয়েছে বিদেশী বিনিয়োগ, যা বাংলাদেশের জন্য সুখকর নয়। এক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ দেখাতে এগিয়ে আসতে হবে। বড় বিনিয়োগ প্রকল্পগুলো শুধু অর্থ নিয়ে আসে না, সেগুলো বিনিয়োগ সংস্কৃতি গড়ে তুলতেও সহায়তা করে। স্যামসাং বাংলাদেশে না এসে ভিয়েতনামে বিনিয়োগ করল। ওই ধরনের বড় বিনিয়োগ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের আইটি খাতের গোটা ইকোসিস্টেমটাই বদলে যেতে পারত বলে আমি মনে করি।

বাংলাদেশে টাটার বিনিয়োগ পরিকল্পনায় ছিল দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, একটি সার কারখানা ও একটি ইস্পাত কারখানা। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি ছিল গ্যাসভিত্তিক, এক হাজার মেগাওয়াটের। আরেকটি ছিল ৫০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। প্রস্তাবিত সার কারখানাটির বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ১০ লাখ টন।

প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানাটি ছিল বার্ষিক ২৪ লাখ টন সক্ষমতার। পাবনার ঈশ্বরদীতে কারখানাটি স্থাপন করতে চেয়েছিল টাটা গ্রুপ। কনগ্লোমারেটটির পরিকল্পনা ছিল ১২ লাখ টন সক্ষমতা নিয়ে কারখানাটির কার্যক্রম শুরু করার, যা পরের দুই বছরের মধ্যে দ্বিগুণে তোলা হবে। ওই সময় বাংলাদেশে বেশকিছু ইস্পাত কারখানা চালু ছিল। এর কোনোটিতেই মৌলিক ইস্পাত পণ্য উৎপাদন হতো না। হট রোলড কয়েল ও অন্যান্য মৌলিক ইস্পাত পণ্য উৎপাদনের জন্য কারখানাটি নির্মাণের প্রস্তাব করেছিল টাটা।

পুঁজিবাজারের মাধ্যমে প্রস্তাবিত মোট বিনিয়োগের ১০ শতাংশ শেয়ার বাংলাদেশ সরকারকে দিতে চেয়েছিল টাটা গ্রুপ। ৫০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে ৪০০ মেগাওয়াট ইস্পাত কারখানাটিতে সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল প্রতিষ্ঠানটির। বাকি ১০০ মেগাওয়াট বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার প্রস্তাব ছিল।

স্থানীয় পর্যায়ে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কার্যক্রমের ঘাটতি দীর্ঘদিন ধরেই দেশের সার্বিক বিনিয়োগ পরিবেশকে প্রভাবিত করেছে বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক বদরূল ইমাম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, এ দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী জ্বালানি হিসেবে গ্যাস বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যে পরিমাণে ব্যবহার করা হয়েছে, জ্বালানিটিতে সে তুলনায় বিনিয়োগ হয়নি। গ্যাসকে ভিত্তি করে বিনিয়োগ বড় হলেও জ্বালানিটির অনুসন্ধান উত্তোলন প্রসারিত হয়নি। নানা সময়েই এর নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ করা গেছে।

প্রাথমিক পর্যায়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র, ইস্পাত ও সার কারখানার জন্য ২০ বছর ধরে প্রতি এমসিএফ (মিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাসের মূল্য ১ ডলার ১০ সেন্ট করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল টাটা। বাংলাদেশ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। পরে টাটা তাদের প্রস্তাব সংশোধন করে। নতুন প্রস্তাবে সার কারখানার জন্য সরবরাহকৃত গ্যাস প্রতি এমসিএফ ৩ ডলার ১০ সেন্ট করে এবং ইস্পাত কারখানার জন্য প্রতি এমসিএফ ২ ডলার ৬০ সেন্ট করে দেয়ার কথা বলা হয়।

বাংলাদেশের গ্যাস রিজার্ভ নিয়ে ওই সময় উপস্থাপিত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রস্তাব দিয়েছিল টাটা। বিদ্যুৎকেন্দ্র, ইস্পাত ও সার কারখানার জন্য প্রতিষ্ঠানটির দৈনিক গ্যাসের প্রয়োজন পড়ত ৬০০ এমসিএফ করে। এছাড়া ২০ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের গ্যারান্টি চেয়ে করা প্রস্তাবেও সংশোধনী আনা হয়। নতুন প্রস্তাবে টাটার পক্ষ থেকে বলা হয়, কারখানাগুলো স্থাপনে নেয়া ঋণের অর্থ পরিশোধের সময় পর্যন্ত গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ দিলেই চলবে। টাটার এ প্রস্তাব নিয়েও সরকারকে দ্বিধায় ফেলে দেয় গ্যাস সংকট।

২০০৮ সালে টাটা গ্রুপ বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয়ার সময়ে দেশের শাসনভার ছিল তত্কালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে। সে সময়ে জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন অধ্যাপক ম. তামিম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ওই সময় আমাদের চাহিদার চেয়ে দৈনিক ২০-৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি ছিল। আমরা মূলত গ্যাস ঘাটতির কারণে তাদের প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে পারিনি। গ্যাস সংকটের কারণে তখন চট্টগ্রামে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে আমাদের সংযোগ বন্ধ করে দিতে হয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, ২০০৬-০৭ সালের দিকে দেশে গ্যাস সংকট স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হতে থাকে। ওই সময় চট্টগ্রামের শিল্প মালিকরা ২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ করেও তাদের কারখানা বসিয়ে রাখতে হয়। আরো অনেক শিল্প মালিক গ্যাস না পাওয়ার কারণে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেন।

দেশের শিল্পোদ্যোক্তাদের একাংশও ওই সময় টাটার এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। ইস্পাত শিল্পের উদ্যোক্তাদের দুটি সংগঠন টাটাকে দীর্ঘমেয়াদে গ্যাসের নিশ্চয়তা দিলে ধর্মঘটে যাওয়ারও হুমকি দিয়েছিল। বিষয়টি স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের ওপর চাপ ফেলত বলে মনে করছিলেন তারা। এছাড়া ইস্পাত খাতে টাটার বড় বিনিয়োগ নিয়ে উপস্থিতি তাদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি করেছিল। যদিও টাটার কারখানা খোলার প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, প্রতিষ্ঠানটি শুধুই হট রোলড কয়েল ও মৌলিক ইস্পাত পণ্য উৎপাদন করবে। যেগুলো দেশের ইস্পাত শিল্পের উদ্যোক্তাদের আমদানি করতে হয়। আবার দেশের সিমেন্ট শিল্প খাতে বড় কিছু বিদেশী বিনিয়োগ থাকলেও তা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বিকাশের পথে বাধা তৈরি করতে পারেনি। বরং জ্বালানি অনিশ্চয়তা এখন দেশী-বিদেশী সব উদ্যোক্তার জন্যই বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ ও বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএমএ) চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, এখন দেশী উদ্যোক্তাদের গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বার্ষিক ১০ লাখ টনের বেশি উৎপাদন সক্ষম কোম্পানি রয়েছে চারটি। এত বড় আকারের প্রকল্প গড়ে তোলার উদ্যোক্তা আমরা পেতাম না, যদি টাটা বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করত। কোম্পানিটির আর্থিক সক্ষমতার প্রভাবেই দেখা যেত যারা এ শিল্পে ছিল, তাদের কেউ এখন আর থাকত না। বাংলাদেশে বিনিয়োগের সংস্কৃতি গড়ে উঠছে। এটি পর্যায়ক্রমে আরো দৃশ্যমান হবে। বর্তমানে আমরা দেখছি আনোয়ার গ্রুপের কারখানা দেখতে ভারতীয়রা বাংলাদেশে আসছে। বিএসআরএম কীভাবে এত দক্ষ হয়ে উঠল তা নিয়ে স্টাডি হচ্ছে ভারতে। জিপিএইচ যে প্রযুক্তি স্থাপন করেছে, তা ভারতে এখনো আসেনি। এ সবকিছু বিনিয়োগ সংস্কৃতিরই প্রতিফলন। শুধু আর্থিক সক্ষমতার প্রেক্ষাপটে দেশী শিল্পোদ্যোক্তারা পিছিয়ে আছেন। আমাদের আরো সুযোগ দিতে হবে।

দেশের ইস্পাত শিল্প খাতের বিকাশের জন্য জন্য জ্বালানি নিশ্চয়তা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এ উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বড় বিনিয়োগ প্রকল্পের জন্য জ্বালানি নিশ্চয়তা জরুরি। বিষয়টি নিয়ে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। বাংলাদেশে ইস্পাত শিল্প এখনো খুব ছোট। তার পরও ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় আড়াইশ উৎপাদনকারী রয়েছে। গত প্রায় ২০ বছরে ইস্পাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ সক্ষমতা অনেক বেশি। যেহেতু চাহিদা ও সরবরাহে ঘাটতি নেই, এ খাতে বিদেশীদের আসার সম্ভাবনা তেমন নেই বললেই চলে। ২০০৫-এর দিকে টাটা বা টাটার মতো বড় কোনো কোম্পানি যদি বাংলাদেশে আসত, তাহলে এ খাতে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বিকাশ ঘটত না।

দেশী-বিদেশী সব ধরনের উদ্যোক্তার জন্যই দীর্ঘমেয়াদি টেকসই নীতি অনুসরণ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিএসআরএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলীহুসাইন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, জ্বালানি নিশ্চয়তার বিষয়ে সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশে সার্বিক ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন করা জরুরি। অর্থাৎ ইজ অব ডুয়িং বিজনেস নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। এছাড়া জরুরি হলো দীর্ঘমেয়াদি টেকসই নীতি প্রণয়ন। স্থানীয় ও বিদেশী সব বিনিয়োগকারীর জন্যই টেকসই নীতি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।