[ ব্যবসা বাণিজ্য ] 05/08/2022
 
বাকৃবির ৭২টি শাখায় ৩৯ কোটি টাকা মুনাফা
ব্যাপক জনবল সঙ্কটের মধ্যেও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক গত অর্থবছরে দক্ষিণাঞ্চলে ১ হাজার ৮৫ কোটি টাকা বিভিন্ন ধরণের ঋণ বিতরণ ছাড়াও ৮৬৭ কোটি আদায়ের মাধ্যমে প্রায় ৩৯ কোটি টাকা মুনাফা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৪২টি উপজেলায় দেশের একমাত্র কৃষিভিত্তিক বিশেষায়িত রাষ্ট্রীয় এ ব্যাংকটির ১২৯টি শাখার মধ্যে গত অর্থবছরে ৭২টি মুনাফা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আগের বছর একই সময়ে ৫৭টি শাখা মুনাফায় ছিল। এ অঞ্চলে ব্যাংকটির প্রায় সাড়ে ৪ লাখ গ্রহীতার মধ্যে কৃষি ঋণসহ বিভিন্ন ধরণের ঋণ বিতরণের ফলে ব্যাংকটির বর্তমান ঋণের স্থিতি প্রায় ২ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা। করোনা মহামারীর সঙ্কটের মধ্যেও সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের পল্লী এলাকার অর্থনীতি সচল রাখতে ব্যাপক অবদান রাখে কৃষি ব্যাংক।

সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংকটি দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৩৪৯ কোটি টাকা নতুন আমানত সংগহের ফলে বর্তমানে স্থিতি ২ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। ব্যাংকটিতে নতুন প্রবর্তিত মিলেনিয়ার, লাখপতি স্কিম ও মাসিক মুনাফা প্রকল্পসহ ৬টি স্কিমের পাশাপাশি সঞ্চয়ী ও চলতি হিসেব মিলিয়ে গত অর্থবছরে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৫৪ হাজার নতুন হিসেবে খোলা সম্ভব হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক স্বল্প সুদে শষ্য ঋণ বিতরণের পাশাপাশি মাত্র ৪% সুদে মসলা জাতীয় ফসলের জন্যও ঋণ বিতরণ করছে। করোনা মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্থ ঘরে ফেরাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ঋণদান কর্মসূচির আওতায় দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক মানুষের মাঝে কৃষি ব্যাংক মাত্র ৬% সুদে ঋণ বিতরণ করছে। পাশাপাশি বিশেষ এসএমই কর্মসূচির আওতায়ও ৪% সুদে প্রায় সাড়ে ৩শ’ উদ্যোক্তার মাঝে আরো ১০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। একইভাবে যে কোনো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ কর্মসূচির আওতায় দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক মানুষ বিশেষ ঋণ লাভ করেছেন। রাষ্ট্রীয় বিশেষায়িত এ বাণিজ্যিক ব্যাংকটি ‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে নিজস্ব তহবিল ছাড়াও করোনা মহামারীতে সরকারি প্রনোদণা প্যাকেজের আওতায়ও সবগুলো ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে।

তবে এখনো ব্যাংকটিতে অনাদায়ী ঋণের পারিমান প্রায় ২ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা হলেও আদায়যোগ্য অনাদায়ীর পারিমাণ মাত্র ৮৮ কোটি টাকার মতো। এসবের মধ্যে প্রায় ১৪.৬৬ কোটি টাকা আদায়ে ২ হাজার ৯৬১টি সার্টিফিকেট মামলা ছাড়াও অর্থঋণ আদালতে অরো বেশ কিছু মামলা চলমান রয়েছে।

অনাদায়ী ঋণের একটি বড় অংশই এতদিন ছিল দ্বীপ জেলা ভোলাতে। বাস্তুচ্যুত নিত্য অভাবী ঐসব মানুষের কাছ থেকে বকেয়া ঋণ আদায় দুরুহ হয়ে পড়লেও গত অর্থবছরে এ দ্বীপ জেলাটি থেকে বিপুল পরিমাণ আদায়যোগ্য অনাদায়ী ঋণ আদায় সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে। এমনকি যারা ঋণ পরিশোধ করেছেন তাদের নতুন করে ঋণ প্রদানও করেছে কৃষি ব্যাংক।

এসব বিষয়ে কৃষি ব্যাংকের বরিশাল বিভাগীয় জেনারেল ম্যানেজার সালাহ উদ্দীন রাজিব-এর সাথে আলাপ করা হলে সমস্যার বিষয়টি সদর দফতর অবগত আছে বলে জানিয়ে পরিস্থিতি উত্তরণে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তবে সব ধরণের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সারা দেশের মতো দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি ও কৃষি-অর্থনীতি সচল রাখতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রতিটি কর্মী নিরলসভাবে কাজ করছে বলেও দাবি করেন সালাহ উদ্দীন রজিব।