[ অনলাইন ] 06/08/2022
 
নারী দিয়ে ফাঁদ পাতা প্রতারক চক্রের ২ সদস্য আটক হোটেল কর্মচারী উদ্ধার
বাসায় ডেকে এনে নারী দিয়ে শারীরিক মিলনের দৃশ্য গোপনে ধারণসহ আটকে রেখে ব্ল্যাক মেইলিং করে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের এক নারী সদস্যসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। এ সময় মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের কবল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আটকে রাখা যুবক মোক্তার সর্দারকে (৩০)।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে ফতুল্লা থানার শিয়াচর এলাকা থেকে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতারসহ উদ্ধার করা হয়েছে যুবককে। এর আগে ঘটনার শিকার যুবক মোক্তার সর্দারের স্ত্রী মোসা: নাজমা বাদি হয়ে তার স্বামীকে আটকে রেখে টাকা চাওয়ার অভিযোগ এনে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। মোক্তার সর্দার বরিশাল জেলার হিজলা থানার লক্ষ্মীপুরের সেকান্দার সর্দারের ছেলে ও ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার খলামুড়া জিয়ানগরীর আলী আহমেদের ভাড়াটিয়া। সে পাগলা ভাসমান রেস্তোরাঁ মেরিএন্ডারসনের কর্মচারী।

গ্রেফতারকৃতরা হলো রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার জামালপুর ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের মৃত কাদের শেখের ছেলে রিয়াজ (৩৫) ও ফতুল্লার শিয়াচর এলাকার রোকসানা সুলতানার ভাড়াটিয়া এবং মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের নারীসদস্য মোছা: রুমা বেগম (৩০)।

ভুক্তভোগীদের সূত্র জানায়, মোক্তার সর্দার বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজ কর্মস্থল থেকে বাসার উদ্দেশে বের হয়। সে তখন তার স্ত্রীকে বাসায় ফোন করে জানায় কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় ফিরে আসবে। কিন্তু সে বাসায় না ফিরে তার পূর্বপরিচিত ব্ল্যাকমেইলিং গ্রুপের সদস্য রুমা বেগমের সাথে শিয়াচর এলাকায় গ্রেফতারকৃত রিয়াজের ভাড়া বাসায় যায়। সেখানে তারা শারীরিক মিলনে লিপ্ত হয়। তাদের যৌনমিলনের দৃশ্য জানালার ফুটো দিয়ে মোবাইল ফোনে ধারণ করে গ্রেফতারকৃত রিয়াজসহ তার সহযোগীরা। এক পর্যায়ে রিয়াজ ও তার সহযোগীরা মুক্তার সর্দারকে ব্ল্যাকমেইলিং করতে শুরু করে। তারা তার মোবাইল নম্বর দিয়ে মোক্তারের স্ত্রীর কাছে ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

অপর দিকে মোক্তারকে বলে টাকা না দিলে ধারণকৃত ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিবে। এমনকি মোক্তারকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করে। মোক্তার অনেকটাই বাধ্য হয়ে তার স্ত্রীর কাছে ফোন করে ব্ল্যাকমেইলিং চক্রের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করে তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার অনুরোধ করে। মোক্তারের স্ত্রী বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ মোবাইল ট্যাকিং ও একটি বিকাশ নাম্বারের সূত্র ধরে শিয়াচর এলাকা থেকে মোক্তারকে উদ্ধারসহ গ্রেফতার করে রিয়াজ ও রুমাকে। এ সময় পুলিশ যৌনমিলনের দৃশ্য ধারণ করা মোবাইল ফোনটি জব্দ করে। তবে জাকির নামক অপর এক যুবকের জড়িত থাকার বিষয়টি জানতে পেরেছে পুলিশ।

অভিযানে নেতৃত্বদানকারী ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানায়, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার অপরাধী। অভিযানের সময় মাদক সেবনের বেশ কিছু আলামত পাওয়া গেছে। নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে অর্থ আদায়ের বিষয়টি তারা দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে। এই চক্রের সাথে কারা কারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।