[ অনলাইন ] 14/08/2022
 
আশ্রয়ণে পানি সরবরাহের ট্যাংক স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগ
ইন্দুরকানী উপজেলায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য অতিদরিদ্রদের মাঝে সরবরাহকৃত পানির ট্যাংক বরাদ্দের অর্থ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে এসব পানির ট্যাংক স্থাপনের দায়িত্ব দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী।

ইন্দুরকানী উপজেলায় পানীয় জলের তীব্র সংকট থাকায় এবং উপকূলীয় এলাকার কারণে গভীর নলকূপ স্থাপন সম্ভব না হওয়ায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য অতিদরিদ্রদের মাঝে ৩ হাজার লিটারের ৩১২টি রেইন হারবেস্টিটার ট্যাংক বরাদ্দ দেওয়া হয়। এগুলো স্থাপনসহ এক একটির মোট ব্যয় ৪২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে টেন্ডার আহ্বান করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। রহমত ট্রেডার্স ও মহিউদ্দিন ট্রেডার্সসহ তিনটি সংস্থাকে কার্যাদেশ দেয় ওই কর্তৃপক্ষ। কাজের সময়সীমা ২০২১ সালের ৩০ জুন থাকলেও অজ্ঞাত কারণে চলতি বছরেও তা চলমান ছিল। ওই প্রকল্পের প্রতিটি ট্যাংকের জন্য ৪২ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে ২২ হাজার টাকা ট্যাংকের মূল্য ধরে বাকি ২০ হাজার টাকা ট্যাংক স্থাপন খরচ ও ভ্যাট ট্যাক্স হিসাবে ধরা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বরাদ্দকৃত ট্যাংকগুলো উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগ থেকে উপকারভোগীদের বাড়িতে নিজস্ব খরচে বহন করে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। আর ট্যাংক স্থাপনের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্মকর্তার নির্দেশে প্ল্যাটফর্ম নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য উপকারভোগীদের সামান্য কিছু টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় কয়েকজন যুবলীগ সদস্য ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকল্পের উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল বড়াল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থেকে এসব অনিয়ম করে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন অতিদরিদ্রদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর প্রদান করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় এই ঘরের সঙ্গে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য রেইন হারবেস্টিং ট্যাংকও দেওয়া হয়। এগুলো স্থাপন নিয়ে ইন্দুরকানী উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপকারভোগীরা।

ইন্দুরকানী উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়নের রেখাখালী গ্রামের বানিকান্ত ম-লের ছেলে সত্য ম-ল জানান, ভূমিহীন কোটায় আমার বাবা একটি ঘর পেয়েছে, সেখানে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য ৩ হাজার লিটারের একটি পানির ট্যাংক দেওয়া হয়েছে। এটা আমাদের নিজের খরচে উপজেলা থেকে বাড়িতে এনেছি এবং ট্যাংক স্থাপনের জন্য উপজেলা অফিস থেকে আমাদের মাত্র ৪ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। আমাদের পাশর্^বর্তী যারা ট্যাংক পেয়েছেন, তারাও ওই ৪ হাজার টাকা করে পেয়েছে।

ইন্দুরকানী উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল বড়ালের কাছে এ বিষয়ে জানতে টাইলে তিনি বলেন, এ বিষয় আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ বুঝিয়ে দিয়েছি, তারা কোনো অনিয়ম করেছে কিনা আমার জানা নেই। পিরোজপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল আলীম গাজী বলেন, অভিযোগ আমিও পেয়েছি, এ বিষয় তদন্ত চলছে, তদন্তের পরই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।