[ সারাদেশ ] 14/08/2022
 
প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক ওলামা লীগ নেতার ছেলে
ময়মনসিংহে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়ার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। শনিবার গুচ্ছ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার একটি কেন্দ্রে ভুয়া পরীক্ষার্থী হিসেবে জাল সনদসহ ধরা পড়েন মাহবুব হাসান নামের ওই শিক্ষার্থী। তিনি কেন্দ্রীয় ওলামা লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুফতি আবদুর রহীম পীরের ছেলে বলে ওই নেতা নিজেই জানিয়েছেন।

জানা গেছে, 'বি' ইউনিটের পরীক্ষা চলাকালে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ৬০১ নম্বর কক্ষ থেকে সন্দেহজনকভাবে মাহবুবকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কেন্দ্রের বাইরে একজনের কাছে থাকা তাঁর একটি ব্যাগ তল্লাশি করে একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ভুয়া সনদ, সিভি, রেজিস্ট্রেশন কার্ড জব্দ করা হয়েছে। একটি সনদে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে স্নাতক পাসের তথ্য আছে। একটিতে এইচএসসি পাসের সাল ২০১৯, আরেকটিতে ২০২০ উল্লেখ আছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সনদ জালিয়াতির কথা স্বীকারও করেছেন তিনি।

পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ত্রিশাল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসান আবদুল্লাহ আল মাহমুদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে অভিযোগ এবং অপরাধের ব্যাপ্তি বেশি হওয়ায় তদন্তের প্রয়োজনে তা সাধারণ মামলা হিসেবে পরিচালনার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ সময় মাহবুবকে ত্রিশাল থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

মাহবুবের কাছে পাওয়া তাঁর বাবার ভিজিটিং কার্ডে দেখা যায়, কাতার-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট, আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া ট্রাস্টের চেয়ারম্যান, বিশ্বব্যাপী আউলিয়া শাহজালাল (রহ.) মসজিদ জামিয়া ইসলামিয়া বাংলাদেশের ইমাম ও খতিবসহ অন্তত ১৩টি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে আছেন আবদুর রহীম। অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে এই ওলামা লীগ নেতা সমকালকে বলেন, 'আমার ছেলেকে হেফাজত করুন। আল্লাহ আপনাদের ভালো করবে।' তিনি জানান, তাঁদের বাড়ি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ছোট মালিঝিকান্দা গ্রামে। তাঁর ছেলে দু'তিন বছর আগে এইচএসসি পাস করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, জালিয়াতি কিংবা অনৈতিকতার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় অধিকতর তদন্তের জন্য সাধারণ মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জব্দ করা ভুয়া কাগজপত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

ত্রিশাল থানার ওসি মাইন উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অসদুপায়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।